1. admin@daynikdesherkotha.com : Desher Kotha : Daynik DesherKotha
  2. arifkhanhrd74@gmail.com : desher kotha : desher kotha
  3. mdtanjilsarder@gmail.com : Tanjil News : Tanjil Sarder
অভাবের তাড়নায় শিশু কন্যাকে বাজারে বিক্রি করতে নিলেন বাবা - দৈনিক দেশেরকথা
রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
জামালপুরে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে চার স্কুল ছাত্রকে গাছে সাথে বেঁধে নির্যাতন নৌকার প্রার্থী হওয়ায় ভোটাররা আনন্দিত:ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সরকারি চাল সন্দেহে ২২ বস্তা চাল জব্দ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শেখ হাসিনার কোনো মাথাব্যথা নেই: কাদের বাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে বাক প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণ অভিযোগে বৃদ্ধ আটক রাঙ্গুনিয়ায় ২১ভরি স্বর্ণালংকার ও মোবাইলসহ ৩ চোর গ্রেপ্তার বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে অসচ্ছল পরিবারের মাঝে অনুদানের চেক বিতরন কিশোরগঞ্জে শিশু নেতৃত্বে লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে প্রচারণা সভা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দিতে হবে:প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এরদোয়ানের ভাগ্য নির্ধারিত হবে কাল

অভাবের তাড়নায় শিশু কন্যাকে বাজারে বিক্রি করতে নিলেন বাবা

মোঃ ইলিয়াস আলী
  • প্রকাশ মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০২২
desherkotha

 79 বার পঠিত

বালিডাঙ্গী প্রতিনিধি>ছয় সদস্যের অভাবের সংসারে ৬ মাস বয়সী শিশু কন্যা সাম্মীকে দত্তক ও স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে গেলে এলাকাবাসীর পরামর্শে সাম্মীকে বাড়ি ফেরত নিয়ে আসেন বাবা মতিউর রহমান মতি। ছয় মাস আগে সাম্মী জন্ম নেয় এই দরিদ্র পরিবারে। 
মতিউর রহমান (৪৫) ঠাকুরগাঁওয়ের বালিডাঙ্গী উপজেলার ৪নং বড় পলাশবাড়ি ইউনিয়নের জিয়াবাড়ি দক্ষিণ দুয়ারী গ্রামের বাসিন্দা।

মতিউর রহমান একজন দিনমজুর। সারাদিন মাঠে কাজ করে যা আয় করেন তা দিয়ে কোন মতো সংসার চললেও তিন মেয়ের লেখাপড়ার খরচ ও ছয় মাস বয়সী শিশুকন্যার খরচ জাগাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। তাই বাধ্য হয়ে গত রবিবার তার ৬ মাসের শিশু কন্যাকে বিক্রয় ও দত্তক দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে যান স্থানীয় এক বাজারে। পরে স্থানীয়রা তাকে ও তার শিশু কন্যাকে বাড়িতে ফেরত আনেন। বড় মেয়ে পারুল (১৪) স্থানীয় এক স্কুলে নবম শ্রেনী, মেজো মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (৮) ৩য় শ্রেনী, সেজো মেয়ে সুরাইয়া আক্তার (৬) বাড়ির পাশে একটি মাদরাসায় লেখাপড়া করেন।

জানা যায়, ২৫ বছর আগে মতিউর রহমানের সঙ্গে নাজমা বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে তাদের সংসারে জন্ম নেয় এক কন্যা সন্তান। এভাবে ছেলে সন্তানের আশায় তাদের সংসারে একে একে জন্ম নেয় ৪ কন্যা সন্তান। এখন সেই চার কন্যা সন্তানসহ মোট ছয়-জনের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। তাই বাধ্য হয়ে ছয় মাসের কন্যা সন্তান সাম্মীকে বিক্রয় ও দত্তক দেওয়ার জন্য বাজারে নিয়ে গেছিলেন তিনি। পরে এলাকাবাসী শিশুকন্যা সহ মতিউর রহমানকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন।

স্থানীয়রা জানান, মতি খুবই হত-দরিদ্র। সন্তানদের ঠিকমতো খাবার ও কাপড় চোপড় দিতে পারে না। একবেলা খায় তো আরেক বেলা না খেয়ে থাকে। মা-বাবা কখনোই চায় না তাদের সন্তানকে বিক্রি বা দত্তক দিতে। কিন্তু অভাবের সংসার তাকে বাধ্য করেছে। স্থানীয়ভাবে বা সরকার থেকে যদি কোন সহযোগিতা পায় তাহলে তাদের জন্য ভালো হয়।

প্রতিবেশী সফিকুল বলেন, মতি খুবই গরিব। চার সন্তানকে নিয়ে কষ্টে দিন পার করছেন। এক বেলা খেলে আরেক বেলা খায় না। সারাদিন কাজ করে যা পায় তা দিয়ে সংসার চলে না। কোন জমি-জায়গা নাই যে চাষাবাদ করে খাবে। ছোট মেয়েটার খাবারও ঠিক মতো কিনতে পারছে না। অনেক সময় তারা না খেয়ে থাকেন। সরকারি ভাবে যদি তারা সহযোগিতা পায় তাহলে হয়তো মতি তার মেয়েদের নিয়ে সংসার চালাতে পারবে নয়তো তার সন্তানকে দত্তক দিতে বাধ্য হবেন।

মতিউর রহমান (মতি) বলেন, আমার কোন ছেলে নাই। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমি। দিনমজুরি দিয়ে যা আয় হয় সেটা দিয়ে তিন বেলার খাবারই জুটেনা। তাই আমার ছোট মেয়ে সাম্মীকে বিক্রয় ও দত্তক দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এলাকার অনেকে তা করতে না দিয়ে আমাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। সরকার থেকে যদি আমাকে কিছু সহযোগিতা করা হয় তাহলে হয়তো আমি আমার চার কন্যা সন্তানকে নিয়ে সংসার চালিয়ে যেতে পারবো।

স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৮) বলেন, আমার স্বামীর তেমন আয় ইনকাম না থাকায় সংসার চালাতে পারে না। তার উপর একটা মেয়ে নবম শ্রেণীতে পড়ছে। কিছু দিন পর তাকে বিয়ে দিতে হবে। বিয়ে দিতেও টাকা পয়সা লাগবে। আমাদের কোন সম্পদ নেই। যে সেগুলো বিক্রি করে মেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে বিয়ে দিব। তাই আমার স্বামী আমার সব থেকে ছোট ছয় মাসের কন্যা সন্তানকে মানুষের কাছে দত্তক দেয়ার জন্য নিয়ে গিয়েছিল। সরকার যদি আমাদের উপর দয়া করে কিছু সহযোগিতা করে তাহলে আমাদের জন্য খুব উপকার হবে।

তবে মতিকে ইউনিয়ন পরিষদ ও সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার ব্যবস্থা করে দিবেন বলে জনান ৪ নং বড় পলাশবাড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, মতি গরিব মানুষ। তার কোন জমি-জায়গা নাই। দিন মজুরি দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে সন্তানদের মুখে খাবার দেন। অভাব অন-টনের জন্য তার ছয় মাসের কন্যাকে বাজারে বিক্রি করতে যান। এটা খুবই দুঃখজনক। তবে মতিকে কিভাবে সাহায্য করা যায় তা আমি করব। 
এ ব্যাপারে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহা. যোবায়ের হোসেন এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার সাথে যোগাযোগ করলে সহযোগিতার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 

দেশেরকথা/বাংলাদেশ

এই বিভাগের আরো খবর

ফেসবুকে আমরা

এই সাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।কপিরাইট @২০২২-২০২৩ দৈনিক দেশেরকথা কর্তৃক সংরক্ষিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park