177 বার পঠিত
পটুয়াখালী প্রতিনিধি>পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নের গুলি আউলিয়াপুর গ্রামের হতদরিদ্র বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজেম আলী সিকদার। পরিবার নিয়ে একটি ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস ছিল তাদের। তাদের বসবাস করা ভিটিতে একতলা ভবন নির্মাণ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এজন্য তাদের বাড়ি ভেঙে ভবন নির্মাণের জন্য জায়গা করে দেয়া হয়। কিন্তু নির্মাণ কাজ শুনুর কিছু দিনের মধ্যে বীরনিবাসের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে বীরনিবাসের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় ওই নির্মিতব্য ভবনের পাশেই একটি পলিথিন টাঙিয়ে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। এ উপজেলায় ৮জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নামে বরাদ্দ পাওয়া (বীরনিবাস) ভবনগুলোর নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে দীর্ঘ ৬ মাস ধরে।
এছাড়া একই উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নের চাঁদপুরা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা গনি হাওলাদারের বীরনিবাস ভবন নির্মাণকাজ এখনো শুরুই করা হয়নি। এতে অসচ্ছল ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো নিজেদের বসতঘর ভেঙে বর্ষা মৌসুমে চরম বিপাকে পড়েছেন। অপরদিকে, দশমিনা ইউনিয়নের আরজবেগী এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লাল মিয়া বলেন, দীর্ঘ ছয় মাসের অধিক সময় আমাদের ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ কারণে বর্ষা মৌসুমে অতি কষ্টে খুপরি ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন-বৃষ্টি এলেই খুপড়ি ঘরের চালা থেকে পানি পড়ে। কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায়। ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুনেছি ঠিকাদার ও পিআইও’র মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, ৩৪৯নম্বর প্যাকেজে ১কোটি ২লাখ ১১হাজার ৪৯৬টাকা ৮০পয়সায় মেসার্স খন্দকার কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত ৪ঠা নভেম্বর ২০২১সালে বীরনিবাস নির্মাণ কাজ শুরু করে। সর্বশেষ ২রা জানুয়ারি ২০২২ তারিখের মধ্যে ভবনগুলো নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ ছয় মাস ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজেম আলী সিকদারের ছেলে নাসির সিকদার বলেন, ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় পলিথিন টাঙিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে জীবন কাটছে আমাদের। তিনি আরো বলেন, কাজ বন্ধ থাকায় ছাদে ফেলে রাখা রডে মরিচা ধরেছে।
ফেলে রাখা সিমেন্টগুলো শক্ত হয়ে গেছে। গেঁথে রাখা ইটগুলোতে শ্যাওলা ধরেছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে বার বার ধরনা দিয়েও জানতে পারছি না আমাদের বীর নিবাসের কাজ কেন বন্ধ হয়ে আছে? বীর মুক্তিযোদ্ধা গনি হাওলাদার বলেন, আমার নামে বরাদ্দকৃত বীর নিবাস নির্মাণের কাজ এখনো শুরু করা হয়নি। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো বীরনিবাস নির্মাণে নিম্নমাণের কাজের অভিযোগ তুলেছেন।
এ বিষয়ে মেসার্স খন্দকার কনাস্ট্র্রকশনের স্বত্বাধিকারী মো. কামরুল খন্দকার বলেন, চারটি ভবনের নির্মাণ কাজ ৭০-৭৫ ভাগ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর ৫০-৬০ ভাগ কাজ শেষ। জটিলতার কারণে একটি ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারিনি। তিনি আরো বলেন ২২লাখ টাকার প্রথম কিস্তির একটি বিল পেয়েছি। আরও ১৪ লাখ টাকার বিল ডিডি করে তাদের কাছে রেখে দিয়েছে অফিস।
দ্রুত কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রবিউল হোসেন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২২লাখ টাকা রানিং বিল দেয়া হয়েছে এবং দীর্ঘদিন বীরনিবাস নির্মাণ কাজ ফেলে রাখায় ওই প্রতিষ্ঠানকে কারণদর্শাও নোটিশ দেওয়া হয়েছে।