134 বার পঠিত
পাবনা প্রতিনিধি> উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ নাটোরের নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা কলেজে ১৩টি বিষয়ে অনার্স ও ৮টি বিষয়ে মাস্টার্সে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেন। প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের জন্য একটি হোস্টেল থাকলেও ছাত্রদের হোস্টেলটি দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে ভাড়া বাসায় বা বেসরকারী হোষ্টেলে থেকে লেখাপড়ার খরচ বহনে হিমশিম খাচ্ছে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা।
উত্তর জনপদের ঐতিহাসিক নাটোর শহরে উচ্চ শিক্ষার প্রথম বিদ্যাপীঠ হিসেবে নাটোর কলেজ গড়ে ওঠে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে এক সভায় নাটোর কলেজ এর নাম পরিবর্তন করে বাংলা-বিহার-উড়িস্যার স্বাধীনতার জন্য নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলার বীরোচিত সংগ্রাম ও অবদান নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার মূল্য অনুধাবনে অনুপ্রেরণা যোগাবে- এই প্রত্যাশা থেকে উদ্যোক্তাগণ কলেজের নামকরণ করেন নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা কলেজ।
১৯৯৮ সালে কলেজটিতে অনার্স কোর্স চালু করা হয় । বর্তমানে কলেজটিতে ১৩টি বিষয়ে অনার্স ও ৮টি বিষয়ে মাস্টার্সে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেন। কলেজের ছাত্রীদের জন্য একটি হোস্টেল থাকলেও ছাত্রদের হোস্টেলটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় ২০১৭ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপরে আর হোস্টেলটি মেরামত করা হয়নি । উদ্যোগ নেয়া হয়নি নতুন ছাত্র হোস্টেল তৈরীর ।
কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন হোস্টেল নির্মাণের মতো আর্থিক সঙ্গতি তাদের নেই ।ফলে, ভাড়া বাসায় বা বেসরকারী হোস্টেলে থেকে লেখাপড়ার খরচ বহনে হিমসিম খাচ্ছে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা। ভাড়া বাসায় বা হোস্টেল থেকে লেখাপড়া করার মতো আর্থিক সঙ্গতি সবার নেই । তাই সরকারের কাছে নতুন ছাত্র হোস্টেল নির্মাণের দাবী জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা ।
এক সময় শিক্ষার্থীদের পদভারে মুখরিত ছিলো এই কলেজের ছাত্রাবাস। একটি দ্বিতল ও একটি একতলা বিল্ডিং এ প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এই ছাত্রাবাসে থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করতো। পরিত্যক্ত হওয়া জরজীর্ণ এই ভবনটিতে বর্তমানে কার্যক্রম চালু কোন ভাবেই সম্ভব হয়। উপরন্তু যে কোন সময় ভবন ধ্বসে দূর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের আস্তর খসে পড়ছে। অনেক অংশে ফাটল ধরেছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে যায় পুরো ভবন। দরজা জানালা ভাঙ্গা। এমনতো অবস্থায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে যায় ছাত্রাবাসটি।
এলাকাবাসী জানান, এক সময় এই ছাত্রাবাস পুরো দশের মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিলো। দেশের বিভিন্ন স্থানের শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করেছেন। বিগত প্রায় ৫ বছর যাবত ছাত্রবাসটি বন্ধ রয়েছে।
কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল হাসান রাজিব বলেন, এনএস সরকারি কলেজ ঐতিহ্যবাহী একটি কলেজ। এই কলেজে দুর-দুরান্তের শিক্ষার্থীদের জন্য ছিলো আবাসন সুবিধা হোস্টেল। আমাদের অনেক বড়ভাই এই হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেছেন। কালের পরিক্রমায় হোস্টেলটি বন্ধ রয়েছে প্রায় ৫ বছর। এতে করে দুরের শিক্ষার্থীদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করবো যাতে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে নতুন হোস্টেল নির্মাণ করা হয়।
এন এস সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম বলেন, এখানে ১০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে । একটি ছাত্র হোস্টেল একান্ত প্রয়োজন। আমরা নতুন ছাত্রাবাসের জন্য চেষ্টা তদবীর চালিয়ে যাচ্ছি ।