241 বার পঠিত
জবি প্রতিনিধি>জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তির দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডের মূল/হার্ড কপি হাতে পায়নি তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডের সফট কপি দেয়া হলেও নানান সময়ে বিভিন্নভাবে ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। রেজিস্ট্রার দপ্তর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের সমন্বয়হীনতার জন্যই শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড এর হার্ড কপি তৈরির কাজ আটকে আছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রায় দুই বছর আগে ২০১৯-২০২০ সেশনে ভর্তি হলেও এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডের মূল কপি হাতে পাননি। করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে সেমিস্টার ফাইনাল শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড সরবরাহ করা হয়নি। প্রায় দুই বছরে প্রথম বর্ষ শেষ করে দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণের সময় ঘনিয়ে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড হাতে না পাওয়ায় হতাশ শিক্ষার্থীরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত বছর গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড প্রিন্ট এর কাজটি করতো রেজিস্ট্রার দপ্তর। তবে এখন আইটি সেলকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অনুমতি ব্যতীত কাজটি করতে পারবে না। আর এই দীর্ঘ সময়েও কোনো দপ্তরই আইডি কার্ড প্রিন্ট এর উদ্যোগ নেয়নি। এ সমন্বয়হীনতার ফলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর কেউই আইডি কার্ডের হার্ড কপি পায়নি।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড না থাকায় বিভিন্ন সময়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা। গণপরিবহনে ভ্রমণসহ বিভিন্ন কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড প্রদর্শন করে ছাত্র সুবিধা না নিতে পারায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এর আগে গত আগস্টে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডের সফট (অনলাইন) কপি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ ব্যাতীত অন্য কোথাও তার ব্যবহার করা যাচ্ছেনা বলেও অভিযোগ করছেন তারা।
ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার বলেন, দুই বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও এখনও আইডি কার্ড পেলাম না। আমি যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তার কোনো পরিচয়ও বাইরে দিতে পারিনা আইডি কার্ড না থাকায়। কবে যে আইডি কার্ড হাতে পাবো তা জানা নেই।
গণিত বিভাগের মেহেদী হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড না থাকায় বাসে হাফ পাশ দিতেও সমস্যা হয়। আমাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে কেউ বিশ্বাসই করতে চায়না। সফট কপি প্রিন্ট করে লেমিলেটিং করলে অনেক সময় তা মানতে চায় না। আমাদের দুই বছর চলে গেলো, এখনও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের আইডি কার্ড হাতে দিতে পারলো না। এটা শিক্ষার্থী হিসেবে খুব কষ্টের।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি বিষয়টি জেনে জানাচ্ছি।”কিছুক্ষণ পর যোগাযোগ করে তিনি জানান, বুধবার থেকেই আইডি কার্ডের প্রিন্ট শুরু হবে। প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড প্রিন্ট হবে। আশা করা যায়, আগামী সপ্তাহেই আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে আইডি কার্ড তুলে দিতে পারবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, আইটি সেল অনুমতি চাইলে অনুমতি দিয়ে দিবো। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে তারা অবশ্যই আইডি কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা রাখে এবং এটা তাদের অধিকারও। এ বিষয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার বাসগুলোর পরিচালকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক মিটিং এর পর শিক্ষার্থীরা নিজেদের আইডিকার্ড প্রদর্শন করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সদরঘাটগামী বাসে হাফ ভাড়া দেয়ার সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।