59 বার পঠিত
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় চলমান বন্যা পরিস্থিতিকে সামাল দিতে প্রশাসনিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ও নিম্নাঞ্চল ইউনিয়ন গুলোতে মাইকিং করে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মাহমুদুল ইসলাম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শনে এসে চলমান বন্যা পরিস্থিতি ও পাহাড়ি পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সতর্কতা জানিয়ে নিরাপদ আশ্রয় যেতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ৯ হাজার একর সরকারি ও ১৫ হাজার একর সংরক্ষিত বনভূমি ও পাহাড় রয়েছে। এসব পাহাড়ে প্রায় দশ হাজার বসতঘর রয়েছে। এর মধ্যে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। প্রতিবছর ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে একাধিক বসতঘর মাটি চাপা পড়ে। ২০১৭ সালের ১৩ জুন উপজেলার রাজানগর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের দুই পরিবারের ২২ জনসহ পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছেন। একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকায় পাহাড় কাটার সময় মাটি চাপা পড়ে এক শিশুসহ ৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
এইদিকে, চলতি মৌসুমের সপ্তাহ জুড়ে টানা বৃষ্টিতে উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষিজমিতে রোপিত ধান চারা টানা বৃষ্টিতে পানিতে ডুবে গেছে। ইতোমধ্যে সরফভাটা, শিলক, পদুয়া, বেতাগী, পারুয়া ও সাহাব্দীনগর ইউনিয়নের কৃষিজমিসহ অন্তত ১৮টি বিল টানা বৃষ্টিতে নিমজ্জিত ৩-৪ ফুট পানি উঠেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, পাহাড়ে থাকা বাসিন্দারা নিম্ন আয়ের মানুষ। থাকার জায়গাটুকু ছাড়া তাদের আর কোন সম্পদ নেই। কেবল দুর্ঘটনা ঘটার পর স্থানীয় প্রশাসন কিছুটা তৎপর হয়ে পাহাড়-টিলার পাশে বসবাস না করার জন্য এলাকায় মাইকিং করে প্রচারণা চালিয়ে। তাই মাইকিং কিংবা সতর্ক করেও তাদের অন্যত্র নেওয়া যায় না। তাই পাহাড়ের বাসিন্দাদের স্থায়ীভাবে অন্যত্র সরিয়ে নিতে এবং সারাবছর পাহাড় কাটা বন্ধে টেকসই উদ্যোগ নিতে হবে।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল ইসলাম বলেন, “উপজেলার সকল ইউনিয়নে মাইকিং করে সতর্ক করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। ফেসবুকে আজ বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় কাপ্তাই বাঁধের পানির ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি গুজব, এবিষয়ে মাইকিং করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে, উপজেলা নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলে ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে এবং ত্রাণ সহায়তা জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক হয়েছে আশা করি আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারব।
এইদিকে, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক ও কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেন খান জানান, “এখনই কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়া হচ্ছে না। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে ১০৯ মিনস সি লেভেল (এমএসএল) পানি ধারণ করার সক্ষমতা রয়েছে; আপাতত হ্রদে পানি আছে ১০৩ দশমিক এমএসএল। যা গতকাল ছিলো ১০১ ফুট। ২৪ ঘন্টায় পানির উচ্চতা ২ফুট বেড়েছে। তবে, পানির বিপদসীমা ১০৮ ফুট। বিপদসীমার চেয়ে পানি ৫ ফুট কম রয়েছে। ফলে এই মুহুর্তে কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়ার কোন আশঙ্কা নেই। অন্তত আগামী ২ দিনের মধ্যে কাপ্তাই বাঁধ দিয়ে পানি ছাড়া বা নির্গম করা হচ্ছে না।