253 বার পঠিত
নোয়াখালীর হাতিয়ায় মোক্তার হোসেন (৪৫) নামের এক সুদ ব্যবসায়ীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গুল্যাখালী, রেহানিয়া, শুন্যেরচরসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের সাধারন মানুষ।
সুদখোর মোক্তার হোসেন হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড গুল্যাখালী গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে।
জানা যায়, মোক্তার হোসেন বিগত প্রায় ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে এলাকার অসহায় সাধারন মানুষদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে চক্রবৃদ্ধি হারে চড়া সুদের বেড়াজালে জড়িয়ে রমরমা সুদের ব্যবসার মাধ্যমে মানুষকে সীমাহীন হয়রানী ও সর্বশান্ত করে আসছেন বছরের পর বছর।
মোক্তার হোসেনের সুদের জালে জড়িয়ে এ পর্যন্ত সর্বশান্ত হয়েছেন এলাকার অনেকেই। আবার সুদ-আসল সহ সমুদয় টাকা পরিশোধের পরেও সুদ গ্রহীতাদের থেকে নেওয়া ফাঁকা চেক, ফাঁকা স্ট্যাম্প,ফাঁকা কার্টিজ পেপার ফেরত না দিয়ে তাদেরকে গ্রাম্য শালিস এবং মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে জানা যায়। যেমনটি ১৪ অক্টোবর গুল্লাখালী গ্রামের প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী পিংকি বেগম এবং শুন্যেরচর গ্রামের দিদারের স্ত্রী নাজমা বেগম’কে সুদব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন করা মামলায় হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলেও জানা যায়।
সম্প্রতি সুদ ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেনের এলাকায় সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, মোক্তার হোসেন বহু আগে থেকে সুদের কারবার করে আসছে। প্রবাসে থাকাকালীন এবং বর্তমানে সে আরো ব্যাপক আকারে সুদের ব্যবসা করে চলছে। প্রতি ১ লাখ টাকায় মাসে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা গুনতে হয় গ্রহীতাকে। পরে মূল টাকা তুলে দিতে হয়, চুক্তিকৃত সময়ের একটু এদিক সেদিক হলে- চলে নানান গাল-মন্দ, মান-অপমান আর মামলার খড়গ।
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী খোকন এবং তার স্ত্রী রোসা বেগম জানান, গত চার মাস আগে তারা মোক্তার হোসেন থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা সুদের উপর নেয়। যার সুদ প্রতি মাসে চার হাজার ৫০০ টাকা দিতে হয়। একটু দেরি হলে আচার ব্যবহার খারাপ করে। নবীর হুজুর নামের এক ব্যক্তি জানায় মোক্তার হোসেন থেকে সে গত বছর ৫০ হাজার টাকা সুদের ওপর নেয়, যার প্রতি মাসে সুদ দিতে হয়েছিলো ১ হাজার ৫০০ টাকা ; পরে মোক্তারের বেয়াদবির কারণে তার টাকা তাকে তুলে দেয়। স্থানীয় গুল্যাখালী গ্রামের ওসমান নামের এক দোকানদার জানায় পার্শ্ববর্তী নুর ইসলাম থেকে মোক্তার হোসেন কয়েকমাস আগে ১ লাখ টাকা সুদের উপর লাগায়। পরে তার দুর্ব্যবহারের কারণে ২-৩ মাস পর নুর ইসলাম টাকাগুলো তুলে দেয়। সুদ ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন তার প্রতিবেশী খলিয়ারগো আলাউদ্দিন, মফিজারগো কামরানসহ এভাবে অসংখ্য দরিদ্র ও অভাবী মানুষের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে চড়া সুদে বছরের পর বছর কারবার করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এসব সুদ গ্রহীতারা।
কিন্তু সুদ ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন বলেন, তারা দুই বছর আমার টাকা খাটায় শুধু মূল টাকা দিছে, ব্যবসা দেয়নি।
এছাড়াও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, গত ১২ বছর আগে মোক্তার হোসেন উপজেলার দক্ষিণ রেহানিয়া রহমত বাজার এলাকার বাবুল নামের এক মৎস্য ব্যবসায়ী থেকে সুদের কারবার করলে এবং যথাসময়ে কিস্তি পরিশোধ করতে অপারগ হলে মামলা দিয়ে বাবুলের ট্রলার সিজ করানোসহ বিভিন্নভাবে বাবুলকে নিঃস্ব করে ফেলে।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম জানান, সুদিদের ব্যাপারে আমার রায় কঠিন। যার কারণে সুদ খোর এখন আমার কাছে বিচারও দেয় না।