160 বার পঠিত
খাগড়াছড়ির গুইমারায় চলমান অবরোধের ‘নাশকতা’ ঠেকাতে আজ সোমবার সকাল থেকে গুইমারার মাঠে রয়েছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশের সদস্য, পাড়া কারবারি,আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্য সহ সচেতন নাগরিকরা।
পুলিশ, বিজিবি,আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি উপজেলার ২৭ টা ওয়ার্ডের ৭৮টা পাড়ায় শান্তি শৃঙ্খলা চলমান রাখা সহ হরতাল অবরোধকারীদের নাশকতা প্রতিরোধে কাজ করবে তারা।
সোমবার সকালে গুইমারা উপজেলা পরিষদের হলরুমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব চৌধুরীর সভাপতিত্বে নাশকতা প্রতিরোধের বিষয়ে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, গুইমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেমং মারমা। এছাড়াও গুইমারা থানার ওসি রাজিব কর, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ঝর্ণা ত্রিপুরা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্মল নারায়ন ত্রিপুরা, মংশে চৌধুরী,রেদাক মারমা, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্ধ,গ্রাম পুলিশসহ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দগন।
গুইমারা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্মল নারায়ন ত্রিপুরা বলেন, বাইল্যাছড়ি বুদংপাড়া যৌথ খামার এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে পিকেটিং করতে পাশ্ববর্তী উপজেলা মাটিরাংগা থেকে কিছু লোক আসে। তাদেরগামছা দিয়ে মূখ বাধা থাকে।
রাস্তায় গাছ ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে চলে যায়। ইউপি সদস্য ও চৌকিদারদের নিয়ে এসব এলাকায় অবস্থান করবো।শান্তি পূর্ণ গুইমারায় অবরোধের নামে ভাঙচুর ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের চেষ্টা বা নাশকতা করলে এখন থেকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে নাশকতাকারীদের।সাধারন মানুষের জন্য কাজ করতে এসেছি, তাদের নিরাপত্তায় সদা জাগ্রত থাকবো।গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে প্রতিনিয়ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব চৌধুরীর নেতৃত্বে টহলে রয়েছে পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।কোনো ধরনের নাশকতকামূলক কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করা হলে সেটা প্রতিহত করা হবে।
হাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মংশে চৌধুরী বলেন,অবরোধ কর্মসূচিতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঠেকাতে তিনি সর্বদাই জালিয়াপাড়াতে অবস্থানে ছিলেন। এখন থেকে ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ,ও নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান করবেন।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তথ্য দিয়ে সবসময় সহযোগিতা করবেন।
সিন্দুকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান
রেদাক মারমা বলেন,গুইমারায় উপজেলা চেয়ারম্যান মেমং মারমার নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধ আমরা। নাশকতা বা বিশৃঙ্খলাকারীদের প্রতিহত করতে তার ইউনিয়নের মেম্বার ও গ্রাম পুলিশদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি তিনি রাস্তায় থাকবেন।
সিন্ধুকছড়ির গ্রাম পুলিশ সোহেল রানা বলেন, গুইমারায় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানের পরামর্শ অনুযায়ী নাশকতা প্রতিরোধে কাজ করবে গ্রাম পুলিশের সদস্যরা।
এছাড়াও গুইমারা বাজার কমিটি ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক বিপ্লব শীল,হাফছড়ির ইউনুছ মেম্বার,খালেদা আক্তার মহিলা মেম্বার, গুইমারার উশ্যেপ্রু মেম্বার অঙ্গিকার করে বলেন এখন থেকে গ্রাম পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশ নিয়ে নাশকতা প্রতিরোধে কাজ করবেন।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ঝর্ণা ত্রিপুরা বলেন, উপযুক্ত সময়ে এ মিটিং হয়েছে। প্রতিটি নাগরিকের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের ও নাশকতা ঠেকাতে কাজ করতে হবে। তিনটা মাস কাজ করবো, শান্তিতে রাখবো গুইমারাকে। এলাকার শান্তি রাখার দায়িত্ব সকলকে নিতে হবে।
গুইমারা থানার ওসি রাজিব কর বলেন, নাশকতা প্রতিরোধে গুইমারা থানার পুলিশ তৎপর রয়েছে সর্বদা।পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন। অরক্ষিত গাড়ী রাস্তার পাশে না রেখে নিজ দায়িত্বে রাখলে ভালো হবে।পুলিশ দিনে রাতে সাধারন মানুষের যানমাল হেফাজতে দায়িত্ব আছেন থাকবে ।পুলিশের পাশাপাশি চেয়ারম্যান ও মেম্বারা সহযোগিতা করলে গুইমারায়, কেও নাশকতা করতে পারবে না।
গুইমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেমং মারমা বলেন, আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া লোকদের আমরা চিনি। অর্থ দাতাদের বিষয়ে চেনা হয়েছে।কোন বিশৃঙ্খলা হলে আশ্রয় দাতা ও অর্থ দাতাদের আমরা আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নিবো। গুইমারাকে অনেকে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা করার জন্য চিহ্নিত পয়েন্ট করতে চায় সেটা আমরা জানি।বিশৃঙ্খলা কারীদের সাবধান হতে বলেছেন তিনি। তিনি আরো বলেন,আগামী দুই মাসে আমরা আমাদের গুইমারা উপজেলাকে সুরক্ষিত রাখবো। তবেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন,অগ্রজাত্রা সফল হবে।
গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব চৌধুরী বলেন, গুইমারা উপজেলার মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখন থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে কাজ করবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশের সদস্য, পাড়া কারবারি, সহ সচেতন নাগরিকরা।কেও দায়িত্বে অবহেলা করলে দায় এড়ানো যাবেনা উল্লেখ করে তিনিঁ উপস্থিত সকলকে যে কোনো মূল্যে যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ প্রতিরোধের নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সকলকে সতর্কভাবে দৃষ্টি রাখতে তিঁনি অনুরোধ করেছেন।