167 বার পঠিত
আমি যদি নিজেই সত্যিকার অর্থে একজন সচেতন অভিভাবক হতাম তাহলে নিচের বিষয় গুলোকে গুরুত্ব দিতাম মেনে চলতাম!
আমি জানি, আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যত কর্ণধার। প্রত্যেক শিশুকে সঠিক ভাবে লালন – পালন করা আমাদের বাবা-মা সহ শিক্ষক শিক্ষিকাদের নৈতিক দায়িত্ব ।
আমি অনেক বিষয়গুলোতে এখনো সফল হতে পারি নাই কিন্তু পারতেই হবে তাহলো
১। নিজ নিজ ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা এবং ধর্মীয় আদেশ নিষেধ নিজে পালন করে সন্তানকে পালন করতে উৎসাহিত ও অভ্যাসের মধ্যে নিয়ে আসা উচিত।
২। সন্তানের পড়ার সাথে আমাদের যে কোনো একটি বই নিয়ে পড়া উচিত। এতে তার পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি হবে।
৩। সন্তানকে বিছানায় নয় বরং পড়ার টেবিলে বসে পড়া এবং লেখার অভ্যাস করাতে হবে।
৪৷ আপনার আমার সন্তান যেন নিজ কানে শুনতে পায় ততটুকু শব্দ করে, উচ্চারণ করে বই পড়ে। ওদের পড়ার সময় আপনার কান ওদের পড়ার মধ্যেই রাখা উচির এতে ওরা আপনাকে শোনানোর জন্য শুদ্ধ উচ্চারণ সহ পড়বে এবং পড়ার বিষয়বস্তু সফল হবে।
৫। সন্তানকে তার নিজের বইখাতা কলম, স্কুলব্যাগ, পোশাক, ব্যবহার্য জিনিসপত্র, বিছানা সযত্নে গুছিয়ে রাখতে অভ্যস্ত করতে হবে। নতুবা জীবনটাও অগুছালো হয়ে যেতে পারে।
৬। প্রতিদিন রাতে সন্তানদের নিয়ে আমাদের বাবা মায়েদের খাবার টেবিলে একত্রে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৭। সন্তানের পড়াশোনা, ক্লাসে উপস্থিতি, রেজাল্ট সহ প্রতিটি আমন্ত্রনে অভিভাবক হিসেবে স্কুলের শিক্ষকদের সাথে রীতিমতো যোগাযোগ রাখা উচিত। এতে ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে ভীতি কেটে যায় এবং স্নেহ মমতার যায়গাটা আরো বেড়ে যায়।
৮। মোবাইলফোন ব্যবহারের উপকারিতা ও অপকারিতা বোঝাতে হবে।
৯। বিজ্ঞানমনস্ক তৈরি করে বই পড়াটাকে নেশায় পরিনত করতে হবে।
১০। সন্তানের এক ঘেয়েমী দূর করার জন্য একসাথে কোথাও ঘুরে আসা উচিত।
১১। গৃহশিক্ষকদের সম্মান এবং তাঁদের মাসের বেতন ঠিক সময়ে পরিশোধ করা উচিত।
১২৷ সন্তানদের সামনে কোনো শিক্ষকের নিন্দা করা উচিত নয় কারণ ভবিষ্যতে আপনি আমিও সম্মান পাবো না ।
১৩। সন্তানদের পড়াশোনায় মনোযোগী করতে এবং ভালো রেজাল্টের স্বার্থে মাঝে মাঝে ভালো খাবার এবং সাধ্যমতো পোষাক বা উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া উচিত।
১৪৷ আমাদের সোনামণিদের মিতব্যয়িতা শেখানো উচিত। নতুবা বড় হয়ে অপরিকল্পিত জীবন গড়ে ফেলতে পারে।
১৫। ভুল করেও সন্তানের সামনে আমাদের স্বামী – স্ত্রীর একে অপরের সাথে কথা কাটাকাটি বা ঝগড়া করা উচিত নয় ।
১৬। আমার ছেলে সারাদিন কোথায় যায় , কোথায় থাকে তাঁর খোঁজ খবর সহ রুমে কী করছে তা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি ।
১৭৷ ছেলে মেয়েকে কখনও জোরে ধমক দেয়া উচিত নয়। এতে ব্রেইনের চরম ক্ষতি হয় । ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে ।
১৮। পড়ার টেবিলটি এমন স্থানে বসানো উচিত যেখানে মোবাইলফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ কিংবা টিভির মতো মনোযোগ নষ্ট করার উপাদান না থাকে ।
১৯। পরীক্ষার দিন তাঁর প্রয়োজনীয় সামগ্রী ( পেন্সিল , কলম , ক্যালকুলেটর , অ্যাডমিট কার্ড , টাকা ইত্যাদি ) আমাদের গুছিয়ে দেয়া উচিত।
২০। অতিরিক্ত শাসন সন্তানের ব্যর্থতা ও বিপথগামী করার অন্যতম দিক। “ শাসন করা তাঁরই সাজে সোহাগ করে যে’- এটি মাথায় রেখে শিশুকে লালনপালন করা উচিত।
২১৷ আমাদের আদরের সন্তানকে নৈতিকতা শিক্ষা দেয়া খুবই জরুরি । নতুবা বড় হয়ে আমাদের দু’চোখ বেয়ে পানি ঝরতে পারে! স্থান হতে পারে রাস্তা, অন্যের বাড়ি কিংবা বৃদ্ধাশ্রমে!
২২। সন্তানের চব্বিশ ঘণ্টার রুটিন না থাকলে রুটিন করতে সহযোগিতা ও রুটিন অনুযায়ী চলছে কিনা তা মাঝে মাঝে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
২৩। “লেখাপড়াসহ যে কোনো ভালো কাজের প্রশংসা করা উচিত। আরো এগিয়ে যেতে উৎসাহ দেওয়া উচিত। “কোনো দিনও তুমি পারবে না , তোমার দ্বারা কিছুই হবে না ” এ জাতীয় কথা কখনই যেন কেউ না বলি।
২৪। শিক্ষকের সাথে ভালো ব্যবহার করতে শেখানো এবং শিক্ষক যদি আমাদের সন্তানকে ধমক দেন বা কড়া শাসন করেন তাতে যেন আমরা বা আমাদের সন্তান মন খারাপ না করি। বরংসন্তানকে শিক্ষকের মর্যাদা সম্পর্কে অবগত করি। শিক্ষকের মর্যাদা সম্পকে জানাই। পিতামাতার পরেই যে শিক্ষকের স্থান তা ওদেরকে বুঝিয়ে বলি।
২৫। কোনো অপরাধ করার পরে স্বীকার করলে কিংবা সত্য কথা বললে তাঁকে অভয় ও মোটিভেশন দেওয়া উচিত । নতুবা কড়া শাসন করলে পরবর্তীতে অপরাধ করেও মিথ্যা বলার প্র্যাকটিস করবে । তখন বড় অপরাধ করেও গোপন রাখতে পারে।
২৬। আপনার আমার সন্তানদেত খোলা আকাশ চাই ,
খেলার মাঠ চাই। খেলাধুলায় অভ্যস্ত করি। সিগারেট, মাদক যেন ওদের গ্রাস করতে না পারে তা জীবন দিয়ে হলেও প্রতিরোধ করি। ওদের নিয়ে একটু খোলা আকাশে গিয়ে ফ্রেস হয়ে আসা উচিত।
আমাদের সন্তানেরা থাকুক দুধেভাতে এবং এই প্রজন্মের সন্তান হিসেবে ওরা সবুজ বনে সবুজ দ্বীপের রাজা হয়ে বাঁচুক এই প্রত্যাশাই করি।