435 বার পঠিত
রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি> যদিও গান নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা ছিল না ছালমার। ছোটবেলা থেকেই গুনগুন করে গাওয়া গানের সঙ্গে বেড়ে ওঠা তার। মানবিক গুনাবলির জন্য হয়েছেন ইউপি সদস্য। বলছি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য ছালমার কথা। সে এখন বাউল ছালমা হিসেবে পরিচিত। গত ১১ ডিসেম্বর বিটিভির ফাইনাল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে পল্লীগীতির অডিশনে চুরান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়ে সংগীত শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।
রাজাপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম তার।পরিশ্রমী বাবার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ছোটবেলায় মাটি কাটা, ফসলি জমিতে কাজ করা, গাছে ওঠা, মাছ ধরা, নৌকা চালানোসহ গ্রামীণ জীবনে একটু সুখের আশায় অনেক পরিশ্রম করেছেন তিনি।
ছোটবেলা থেকেই পিতার সঙ্গে কাজের সময় গুনগুন করে মনের সুখে গান গাইতেন। গানের প্রতিও ঝোঁক ছিল তার চরম। পিতার আর্থিক সংকটের কারণে মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে আর উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করার ভাগ্য হয়নি ছালমার। বিদ্যালয় থেকে স্থানয়ি সংগীত শিল্পী আব্দুর রাজ্জাক এর হাত সংগীত চর্চা শুরু করেন ছালমা। তার গান পরিবেশনে মাধ্যমে ইতিমধ্যেই উপজেলা থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সুনাম অর্জন করেছেন তিনি।
মানুষের কোনো বিপদের খবর শুনলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করে ছালমা। গান পরিবেশনের ফলে তার শৈল্পিক চাহিদা দিন দিনই বাড়তে থাকে। বেশিরভাগ বাউল সংগীত পরিবেশন করায় ‘বাউল ছালমা’হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন। ২০২১ সালের ২১ জুন অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে বই প্রতীকে বিজয়ী হন তিনি। ২০২২ সালে রাজাপুর উপজেলা ও ঝালকাঠি জেলা পর্যায়ে “সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছে যে নারী” বিষয়ের উপর শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ পেয়ে যান ছালমা ।
ছোটবেলা থেকেই সংগীতপ্রেমী হওয়ায় নিজেই অর্ধশতাধিক গান রচনা, সুর দেওয়া ও সংগীত পরিবেশন করে সুনাম অর্জনের পাশাপাশি গীতিকার ডাঃ জহিরুল ইসলাম বাদল’সহ বিভিন্ন লেখকের লেখা প্রায় চার শতাধিক বাউল গানের মৌলিক শিল্পীর খ্যাতি অর্জন করে।জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমন্ত্রিত হয়ে বাউল,পল্লীগীতি, লোকগীতি, ভাওয়াইয়া,ছায়াছবি ও ফোক গান গেয়ে থাকেন ছালমা। যার মাধ্যমে দেশব্যাপী বাউল ছালমা হিসেবে পরিচিতি অর্জনের সৌভাগ্য হয়। ইতিমধ্যেই তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে পল্লীগীতির অডিশনে চুরান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়ে সংগীত শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।