214 বার পঠিত
জামালপুর প্রতিনিধি>জামালপুরে ফসলের মাঠে এখন সবুজ রং পরিবর্তেন হয়ে সোনালী ধানের শীষে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন বাতাসে দুল খাচ্ছে। জামালপুরের সদর উপজেলায় চলতি ভরা আমন মৌসুমে রঙ্গিন স্বপ্ন দেখছেন কৃষক কৃষাণীরা। মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের শীষের সমারোহ।
বাতাসে আমন ধানের পাতা নেচে নেচে সোনালী রংগে রঙ্গীন হয়ে গেছে বিস্তির্ণ ফসলের মাঠ। ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে ধান গাছের সোনালী পাতা ও পাকা ধানের মুক্তার ন্যায় শীষ। সোনালী রংগে ছেয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ। আমন ধানের সোলালী শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের হ্নদয়। পাকা ধানের শীষ দেখে আনন্দে বুক ভরে উঠেছে কৃষক ও কৃষাণীর মন। মাঠে দাড়িয়ে থাকা সোনালী ধানের নতুন স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
জামালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা ইয়াসমিন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথা সময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে এবার আমন চাষের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষি বিভাগ। এতে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে আরও জানা যায়, এ মৌসুমে সদর উপজেলায় পৌরসভাসহ ১৫ টি ইউনিয়নের ৩১ হাজার ৪শ’ ৭২হেক্টর জমিতে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাইব্রিড জাত, উফশী জাত ও দেশী জাতের ধান।
এবছর আমন ধানের চারা রোপনের পর সঠিকমাত্রায় বৃষ্টি হওয়াতে আবার কোন এবং কৃষকে সময়মত সেচ দিতে পারাই আমন ধান চাষের লক্ষমাত্রা ব্যহ্নত হওয়ার সম্ভবা কম। এখনই ধানের সবুজ রং পরিবর্তন হয়ে সোনালী রূপ ধারণ ধারণ করেছে। চলতি সপ্তাহে সোনালী ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। রাশি রাশি সোনালি ধান মাড়ায়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক কৃষাণীর।
ভরে যাবে তাদের শূন্য গোলা। আমন ধান অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ভাল ফলন হবে । ভালো ফলন ও ভালো দাম পেয়ে খুশি জামালপুর অঞ্চলের ধান চাষিরা।এ বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, সার, বীজ ও বালাইনাশক সংকট কিছুটা থাকলেও সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় এ সংকট কেটে যায় কৃষকদের । ফলে ফসলের মাঠ ভালো ফসলের পূর্বাভাস আগে থেকে পেয়েছে আমন চাষিরা।
ধানের সবল-সতেজ চারা এবং ধানের শীষে প্রমান করছে ভালো ফসলের। এবার ধানের আগাম ব্রি ধান ৪৯ ও ব্রিধান ৮৭ বিঘাতে ১৭ থেকে ১৮মন ফলন হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ চিত্রাং জামালপুরে তেমন প্রভাব ফেলতে পারিনি। এতে চলতি মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনে উৎপাদনে ক্ষতি সাধন হয়নি। সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের আতর আলী বলেন, রোপা আমন ধানের মাঠে সোনালী সমারোহ। প্রতিটি ধানের ক্ষেতে দুলছে সোনালী ধানের শীষ ।
পাকা ধান গাছ কাটতে ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকের। কৃষকরা মাঠে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান গাছ কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকেই ধান মাড়াই করে ধান সিদ্ধ করে গোলা তুলছেন কৃষাণীরা। অনেকেই আগাম জাতের ধান কেটের পর বারি১৪ জাতের সরিষা বপন করেছেন।
একই গ্রামের কৃষক শাহ্ আলী জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ শাহনুজ্জামানের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত ব্রি ধান ৪৯ আমন ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। প্রদর্শনী ব্রি ধান ৮৭ চারা রোপন করে এবং ধান কেটে পরিমাপ করে বিঘায় ১৮মন ধান হয়েছে। আগাম ধান কেটে সরিষা বপন করেছি।সরিষা গাছের পাতা বের হয়েছে।
মির্জা পুর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম , শরিফপুর গ্রামের তোজাম্মেল , একই গ্রামের তারা মিয়া ও আজিজুল সহ অনেকেই জানান, এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হচ্ছে। দাম ভালো। মৌসুমের শুরুতে সাড়ে১১শ’টাকা থেকে সাড়ে ১২শ’ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
আরেক কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ধান কাটা শেষে ক্ষেতে ধান গাছ রোদে শুকানোর জন্য বিছিয়ে রেখেছে। ধানগাছের চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে এবারে ভালো ফলনের আশা করা যায়। সরকার যদি চলতি বাজার দামের চেয়ে বেশী দাম দেন তাহলে লাভবান হবেন ধান চাষিরা ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দিলরুবা ইয়াসমিন বলেন, আমন ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। ফলনও বেশ ভালো হচ্ছে। তাই আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি। কৃষকদের ভালো ফলন পেতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে হয়েছে।