54 বার পঠিত
‘আমার বাবার সাথে একটু দেখার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন বারান্দায় অপেক্ষা করেছি। দরজায়, দরজায় কেঁদেছি। কিন্তু ওই খুনি হাসিনার জন্য একটি বারের জন্যও আমাকে দেখা করতে দেয়নি। পৃথিবীর কোনো আইনে আছে যে মৃত্যু পথযাত্রী পিতার সাথে তার সন্তানকে দেখা করতে দেয় না। তারা আল্লামা সাঈদীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। সারা বাংলাদেশে গত ১৭টি বছর অত্যাচার, জুলুম, স্ট্রিম রোলার চালিয়েছিল এ আওয়ামী লীগ। আমরা প্রত্যেকটি জুলুম ও হত্যার বিচার চাই। আমরা কাউকে ক্ষমা করিনি। তবে যারা পরিবেশ পরিস্থতির কারণে ব্যক্তিগত সম্পদ রক্ষা, ব্যবসা বাণিজ্য ও চাকরি বাচানোর কারণে আওয়ামী লীগের সাথে তালে তাল মিলিয়ে চলতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা। কিন্তু যারা ফাঁসির দড়ি নিয়ে মিছিল করেছেন, তাদের ক্ষমা নাই।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছিল হত্যার মধ্য দিয়ে। এই আওয়ামী লীগের শেখ মুজিব ১৯৬৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার শাহেদ আলীকে সংসদে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। আওয়ামী লীগের ইতিহাসই ছিল হত্যার ইতিহাস। ২০১০ সালে ক্ষমতায় এসে ২০ থেকে ২৩ এ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বাংলাদেশের গর্ব, অহংকার সেনাবাহিনীর ৫৭ জন গর্বিত সন্তানকে তারা হত্যা করেছিল। যুদ্ধেও এত সংখ্যক অফিসার শহীদ হয়নি, যা তারা এ তিন দিনে এ হত্যা করেছে।
মাসুদ সাঈদী বলেন, ২০১৩ সালে তথাকতিত ওই ক্যাঙ্গারু ট্রাইব্যুনাল থেকে আল্লামা সাঈদির মিথ্যা মামলার রায় দিয়েছিল। ওই প্রতিবাদে যখন সাড়া বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছিল তখন ওই কুরআন প্রেমিক জনতার বুকে ওই খুনি হাসিনার নির্দেশে গুলি করে ৩০০ মানুষকে হত্যা করেছে। ৫ মে শাপলা চত্বরে এই দেশের শ্রেষ্ট সন্তান আলেম সমাজ একত্রিত হয়েছিল নাস্তিকদের বিচারের দাবিতে। তখন ভারতের প্রেসক্রিপশনে খুনি হাসিনা রাতের আঁধারে হাজার হাজার আলেমকে গুলি করে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনার হাত হাজারো, লাখো মানুষের রক্তে রঞ্জিত করেছে।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শাঁখারীকাঠী ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সমাবেশে ওই ইউনিয়ন সভাপতি মো: আনিসুর রাহমান মল্লিকের সভাপতিত্বে ও মাওলানা আবু দাউদের সঞ্চালনায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, এই পিরোজপুরের ১ আসনে আমার পিতা দু’বারের এমপি ছিলেন। তার পরে এ আসনে আরো দু’জন এমপি ছিলেন। তারা কী করেছেন তা আমি বলতে চাই না। আমি আল্লামা সাঈদির সন্তান। তার পবিত্র রক্ত আমার শরীরে। আমি আজকে আপনাদের কাছে ওয়াদা দিয়ে যাচ্ছি, যদি আল্লাহ তায়ালা যদি আমাকে দিয়ে আপনাদের খেদমত করার সুযোগ দেন, আমাকে আপনাদের খাদেম বানান, তাহলে আমি ওয়াদা দিয়ে যচ্ছি যে আমার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা নাজিরপুর-পিরোজপুর সদর ও জিয়ানগরকে ঢেলে সাজাব ইনশাআল্লাহ।
এ সময় কর্মী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামাত ইসলামী পিরোজপুর জেলা আমির অধ্যক্ষ তোফাজ্জাল হোসেন ফরিদ, বাংলাদেশ ইসলামীক ল’ইয়ারস ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ঢাকাস্থ নাজিরপুর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ মোল্লা, পিরোজপুর জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, জেলা জামাতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, জেলা জামায়াতের সদস্য ড.আব্দুল্লাহীল আল-মাহামুদ, নাজিরপুর উপজেলা জামাতের আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা জামাতের সেক্রেটারি, সাবেক সেনা কর্মকর্তা কাজী মোসলেম উদ্দীন, নাজিরপুর উপজেলা সাবেক ছাত্র নেতা মো: মোস্তাফিজুর রহমান ও উপজেলা ছাত্র শিবির সভাপতি মো: আবু হানিফ শেখ প্রমুখ।