152 বার পঠিত
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধ>মোগ শেষ করে দিছে জলদস্যুরা, নিয়ে গেছে বেঁচে থাকা শেষ সম্বল টুকু পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ২৬টি মাছধরা ট্রলারে ডাকাতির খবর পাওয়া গেছে।
এ সময় ৯ জেলেসহ এফবি ভাই-ভাই নামের একটি ট্রলার ডুবিয়ে দিয়েছে ডাকাতদল।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাতে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন মহিপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজা।
৬৫ দিনের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় ২৩ শে জুলাই। ঐদিন মধ্যরাতি জেলেরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে চলে যায়, মাছ নিয়ে ফেরার পথে বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে সোনাচর সংলগ্ন গভীর সাগরের ছয়বাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারের এক জেলেকে উদ্ধার করেছে মা-বাবার দোয়া নামের অপর একটি ট্রলার। বাকি আট জেলে অন্য একটি ট্রলারে আশ্রয় নিয়েছেন।
ডুবিয়ে দেওয়া এফবি ভাই ভাই ট্রলারের জেলে উপজেলার মহিপুরের নিজামপুর গ্রামের ছালাম মিয়া বলেন, ২২ থেকে ২৩ সদস্যের একটি ডাকাতদল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের হামলা চালিয়ে ট্রলারের মাছসহ সব মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং আমাদের ট্রলারটি ডুবিয়ে দিয়ে যায়।
এসময় তারা আরও বেশ কয়েকটি ট্রলারে ডাকাতি করে। পরে মা বাবার দোয়া নামের ট্রলারটি আমাদের উদ্ধার করে,সময় মতো যদি এই ট্রলারটি আমাদের উদ্ধার না করত, তাহলে মনে হয় আমাদের মরা দেহটাও পরিবার পেত না।
এফবি মা বাবার দোয়া ট্রলারের মালিক মহিপুরের নিজামপুর গ্রামের ইউসুফ মিয়া বলেন, আর কি করতে পারি ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ট্রলারে ১৫ জন স্টাফ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে পাঠাই। ডাকাতদল সবাইকে মারধর করেছে। সব মালামাল নিয়ে গেছে এর সমাধান কি পাব,সে কথা বলতে বলতে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
একই ট্রলারের মাঝি জিয়া মিয়া বলেন, ডাকাতদল আমাদের ট্রলারে উঠেই মারধর করা শুরু করেছে। আমাদের ট্রলারের সব মালামাল নিয়ে গেছে। কোনোমতে জানটা নিয়ে ফেরত এসেছি।
আমি লক্ষ্য করেছি তারা আরো কয়টি ট্রলারে ডাকাতি করেছে আসলে আমরা বলি জলদস্যু মুক্ত সমুদ্র আসলে একটা জেলেই জানে কতটা কষ্ট করে জীবন বাজি রেখে মৎস্য শিকার করি।
মহিপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজা বলেন, গভীর সমুদ্রে রাতে বেশিরভাগ বোট কাছাকাছি নোঙর করা থাকে। এ সুযোগে একই স্থান থেকে প্রায় ২৬টি ট্রলার ডাকাতি হয়েছে। গভীর সাগরে ডাকাতদল ফের সক্রীয় হয়ে উঠেছে।
ডাকাতি হওয়া ট্রলারের মধ্যে দুটি রাঙ্গাবালির চরমোন্তাজের, পাঁচটি মহিপুরের ও বাকিগুলো বিভিন্ন এলাকার। এখন আমরা ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারটি উদ্ধারের চেষ্টা করছি। খুব তাড়াতাড়ি ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করতে পারব।
নিজামপুর কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কে এম শাফিউল কিঞ্জল বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা টহল জোরদার করেছি, তবে ঘটনাস্থল পার্শ্ববর্তী উপজেলার আওতাধীন। তাই তাদের সহযোগিতা করছি। মৎস্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতা করছে কোস্ট গার্ড।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, এবিষয়ে আমরা এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। এঘটনা আমার এরিয়ার মধ্যে না।
পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, ‘ঘটনাটি জানা ছিল না বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।