11 বার পঠিত
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি<ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নের উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী শ্রাবণী রাণী অবশেষে মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন পূরণের পথে। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়া এই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মীর জাহিদ হাসান।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নের উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামে তাঁর বাড়িতে গিয়ে শ্রাবনীর ভর্তি এবং শিক্ষাসামগ্রী কেনার যাবতীয় দায়িত্ব নেন। মীর জাহিদ হাসান ৩নং আকচা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
শ্রাবণীর পরিবারে তিন বোন। বাবা শ্যামল চন্দ্র বর্মণ শ্যালো ইঞ্জিন মেরামত করে যা আয় করেন, তা দিয়ে সংসার চালানোই কঠিন। অভাবের সংসারে পড়ালেখার খরচ জোগাতে মা সুভাসী রানী বর্গা জমিতে চাষাবাদ করেন। তিন মেয়ের পড়ালেখার খরচ চালাতে গিয়ে তাঁরা বহু বাধা পেরিয়েছেন। যেন পাঁচ সদস্যের সংসার চালাতে অন্ধকার দেখছিলেন তাঁরা। কিন্তু এবার শ্যামল-সুভাসী দম্পত্তির ঘরে আলো জ্বলেছে। তাঁর দ্বিতীয় মেয়ে শ্রাবনী এবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। মেয়ের এমন সাফল্যে পরিবারের সবাই খুশি হলেও মেডিকেলে ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নিতে দুশ্চিন্তায় ছিলেন শ্রাবনী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
এ খবর পেয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিএনপির এই নেতা আজ দুপুরে শ্রাবনীর বাড়িতে ছুটে যান। এ সময় তিনি শ্রাবনী ও তার তার পরিবারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এবং শ্রাবনীর ভর্তি এবং শিক্ষাসামগ্রী কেনার যাবতীয় দায়িত্ব নেন।
মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া শ্রাবণী বলেন, স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে আসতে অনেক বাধা পেরোতে হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের সহযোগিতা না পেলে এটা সম্ভব হতো না। জাহিদ ভাইয়ের এই আর্থিক সহায়তা আমার স্বপ্নপূরণে বড় সহায়ক হবে।
শ্রাবনীর বাবা শ্যামল চন্দ্র বলেন, খুব কস্ট করে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাইছি। এবার মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু এতো খরচ চালানো আমার পক্ষে বহন করা সম্ভব ছিলো না। খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু ব্যবসায়ী জাহিদ ভাই খবর পেয়ে আমার বাড়িতে ছুটে এসেছে। আমাদের পরিবারের খবরাখবরসহ শ্রাবনীর মেডিকেল ভর্তি খরচসহ আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। আমার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জাহিদ ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞা ও ধন্যবাদ জানাই।
মীর জাহিদ হাসান বলেন, এবার ঠাকুরগাঁও জেলা যেসব মেধাবী শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুয়োগ পেয়েছে তাদের অভিনন্দন জানাই। শ্রাবনী খুবই দরিদ্র ঘরের মেয়ে। মেডিকেলে ভর্তির পরবর্তী লেখাপড়ার খরচ চালানোর ক্ষমতা তাঁর পরিবারের নেই বললেই চলে। আমি খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে এসেছি। মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার দায়িত্ব। আমি চাই, শ্রাবণীর মতো মেধাবীরা তাদের স্বপ্ন পূরণ করুক এবং দেশের জন্য কাজ করুক। শ্রাবনী মেডিকেলে চান্স পেয়েছে সে যেন পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে আমি সর্বান্তকরণে সহযোগিতা করব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আকচা ইউনিয়নের যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শমসের আলী, ঢোলারহাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শিক্ষক সীমান্ত কুমার বর্মণ, এড. রিয়াজুল ইসলাম, ঢোলারহাট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইশারুল ইসলাম, আকচা ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মণ, আক্তারুল ইসলাম ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ও ঢোলারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।