15 বার পঠিত
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে গেলেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস। বুধবার (২০ নভেম্বর) তিনি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। এর আগে, এই ধরনের বৈঠকগুলো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা এবং প্রধান উপদেষ্টার নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সচিবালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, আজকের বৈঠকটি সচিবালয়ের ছয় নম্বর ভবনের ১৩ তলায় অবস্থিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, এই কক্ষটি মূলত মন্ত্রিসভার বৈঠকের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল, তবে দীর্ঘদিন ধরে এখানে মন্ত্রিসভার কোনো বৈঠক হয়নি। সাধারণত সচিব পর্যায়ের বৈঠক বছরে দু-একবার এখানে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষ্যে কক্ষটি ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে।প্রধান উপদেষ্টার প্রথমবার সচিবালয়ে আগমনের কারণে সচিবালয়ের অন্যান্য ভবন এবং ভেতরের রাস্তা ঝাড়-মোছ করা হয়েছে। এছাড়া, আজ সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। অর্থাৎ, কর্মকর্তারা যেসব পাস দিয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ করাতে পারেন, তা বন্ধ থাকবে। তবে, প্রধান উপদেষ্টা সচিবালয় ছেড়ে যাওয়ার পর কর্মকর্তাদের পাস আবারও চালু হতে পারে।
এদিকে, বিগত সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক সচিবালয়ের এক নম্বর ভবনের চতুর্থ তলার মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হতো। ২০১৭ সালে সচিবালয়ের এক নম্বর ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর, ২০ তলা বিশিষ্ট ছয় নম্বর ভবনের ১৩ তলায় মন্ত্রিসভা বৈঠকের জন্য নতুন কক্ষ প্রস্তুত করা হয়।
২০১৯ সালে বনানী এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর ৬ নম্বর ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন। এর পর থেকেই মন্ত্রিসভার বৈঠক সাধারণত প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, ড. মুহাম্মদ ইউনুস যমুনা অতিথি ভবন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক করে আসছিলেন। আজ, প্রথমবারের মতো এই বৈঠক সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।আইসিটি আইন সংশোধন হবে
আজকের উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইন সংশোধনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। সংশোধনের মাধ্যমে যদি কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত হয়ে থাকে, তবে ট্রাইবুনাল সেই দল বা সংগঠনের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করতে পারবে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর কিছু মারাত্মক বিচ্যুতি দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছিল। সরকার এ আইন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে যাতে এর বিচার দেশের পাশাপাশি বৈশ্বিক পর্যায়েও গ্রহণযোগ্য হয় এবং সুবিচার সুনিশ্চিত হয়। এজন্য ব্যাপক পরামর্শ নেওয়া হয়েছে এবং এক অসাধারণ সংশোধনীর প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, যা এই বিচারের গুরুত্ব, যৌক্তিকতা ও গ্রহণযোগ্যতা অনেক বাড়িয়ে দেবে।
আইন সংশোধন খসড়ায় রাজনৈতিক দলের বিচারের ধারা যুক্ত হচ্ছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “প্রস্তাবে আদালতকে সরাসরি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। তবে, আদালত যদি মনে করেন, তারা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।”