কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে। এতে মনখালী,ছেপটখালী, মাদারবনিয়া,চোয়াংখালী, ইনানী, সোনারপাড়ার মৎস্য আড়ৎগুলোতে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে।
উখিয়ার সব মৎস্য আড়ৎগুলোতে দিনে কয়েক হাজার মেট্টিক টন মাছ কেনা-বেচা হচ্ছে, দাম ও আছে হাতের নাগালে। ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। সাধারণ মানুষ ও কম দামে ইলিশের স্বাদ গ্রহণ করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে।
সরেজমিনে দেখা যায় , শনিবার ০৫ ই মার্চ সকালে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মনখালী থেকে সোনারপাড়া সাগর উপকূলের বিভিন্ন নৌ-ঘাট থেকে ছোট ছোট ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে জেলেরা বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যায়। সাগরে জাল ফেলার ঘণ্টা খানিক পর জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছের দেখা মিলে।
জেলেরা জালসমূহ নৌকায় তুলে মাছ নিয়ে কূলে ফিরে আসতে থাকে। তবে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরার খবরে বিভিন্ন ঘাটের কূলে থাকা নৌকা গুলো তড়িগড়ি করে সাগরে মাছ শিকারে ছোট ছোট ইঞ্জিন চালিত নৌকায় নেমে পড়ছে।
সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া নৌকাগুলো কম বেশি সবাই ইলিশ মাছ শিকার করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতি নৌকাতে কমপক্ষে এক লক্ষ থেকে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ ধরা পড়েছে বলে জানায় নৌকার মালিকরা।
জালিয়াপালং এর মনখালী ঘাটের জেলে মোহাম্মদ ইউনূছ জানান, বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গেলে ভোর সকালের দিকে জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরা পড়ে। তবে মাছের সাইজটা একটু ছোট থেকে বড় সব সাইজের মাছ জালে ধরা পড়ে। এতে আমরা জেলেরা আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়ে ওঠতেছি।
জালিয়াপালং এর কোনারপাড়া ঘাটের নৌকার মালিক আবুল মনজুর জানান, রাত ২টার দিকে জেলেরা খবর পাঠায় নৌকায় প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে। অনেক দিন পর ইলিশ মাছ ধরার খবর পেয়ে আমি অনেক খুশি হয়েছি।
এদিকে একদিনে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং এ ৭-৮ লাখের অধিক ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে বলে জানায় মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
মৎস্য ব্যবসায়ী নুরুল হক জানান, আমি মনখালী ও ছেপটখালীর বিভিন্ন ঘাট থেকে প্রায় এক লাখ পিস মাছ ক্রয় করেছি। এবারের ইলিশ মাছের সাইজ ও ভালো অবস্থানে এতে দাম মোটামুটি রয়েছে। ক্রয়কৃত ইলিশ মাছ ঢাকায় চালান করা হবে। ভাগ্যে কী ঘটে তা আল্লাহ জানে।
মনখালী মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবছার কামাল কাজল দৈনিক দেশেরকথা কে জানান , ৪/৫দিন ধরে ৭০ ভাগ জেলেদের জালে ভালো ইলিশ ধরা পড়ছে। এরকম ১২-১৫ দিন মাছ ধরা পড়লে জেলেরা বিগত দিনের করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবে বলে তিনি আশা করেন।
কয়েকটি মৎস্য আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা থেকে ইলিশ নিয়ে আড়ৎ সাজিয়ে তা বাজারজাত করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রান্তে। জেলেদের ধরা ইলিশ আড়ৎ তুলে হাঁকডাক দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত দামে সেসব ইলিশ কিনে নিচ্ছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ক্রেতারা। এরপর দূর-দূরান্তে নেওয়ার জন্য ড্রামে সংরক্ষণ করা হচ্ছে মাছগুলো।
জেলেদের হাত থেকে আড়ৎদার, সেখান থেকে পাইকার এবং বেপারিদের হাত ঘুরে এসব মাছ চলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম,ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কাঁচা বাজারে।