প্রতিটি মানুষের মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতা থাকে। হউক সে নারী কিংবা পুরুষ। ধর্ষণ ও নির্যাতন নিয়ে আমাদের একটি অন্ধ বিশ্বাস যে, ধর্ষণ ও নির্যাতন কেবল পুরুষরাই করে কিন্তু এমন কিছু ঘটনা মাঝে মাঝে দেখা যায় ধর্ষণের শিকার পুরুষটিই হয় ধর্ষণের আসামী, শতকরা ৮০% নির্যাতনের শিকার পুরুষরা আসামী হয়ে জেল জুলুম হামলা মামলাসহ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
একজন কামুক নারী সে স্বামী নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বা স্বামীর অবর্তমানে তার যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য পরকিয়ায় লিপ্ত হওয়াটা স্বাভাবিক, যদিও তারা সংখ্যায় কম। সেক্ষেত্রে এই মহিলাটি কোন কম বয়সি পুরুষ বা যার মধ্যে প্রচুর কামভাব আছে সেই পুরুষটিকে খুজে নেয়। পুরুষেরা সাধারণত মহিলাদের প্রতি কাতর থাকে ও নারীর প্রতি আকাঙ্ক্ষা থাকে বেশি। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই অনেক নারী পরকিয়া নামে ধর্ষণ করে পুরুষদের। অনেক বিবাহিত নারী বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি, ইশারা, প্রলোভন প্রদর্শনে পুরুষকে তার যৌন সঙ্গি করে তুলে। এর বেশিরভাগ শিকার হয় ১৪থেকে ২৫বছরের ছেলেগুলি।
আর এই বয়সটা খুব আবেগপ্রবণ ও যৌনকাতর হওয়ার ফলে আগপিছ না ভেবেই ধর্ষণ হতে থাকে কামুক নারীর হাতে। আমাদের আইনে এখনো সেগুলিকে পুরুষ দ্বারা ঘটিত ধর্ষণ মনে করে। এবং বিবাহিত নারীর ক্ষেত্রে পরকিয়া, তার জন্যও পুরুষদের দায়ী করে। আমাদের সমাজ এবং আইন এখনো যৌনতা নির্যাতন কেবল পুরুষের সম্পত্তি বা চাওয়া মনে করার কারনেই দিন দিন পুরুষ ধর্ষণ বাড়ছে কিন্তু সেটা নারী ধর্ষণ-নারীনির্যাতন বলে আইনে লিপিবদ্ধ হচ্ছে। আইনের চোখে অপরাধী হয়ে অনেক পুরুষ মান-সম্মান, টাকা-পয়সাসহ সবকিছু হারাচ্ছে। মিথ্যা ধর্ষণ মামলার আসামী হয়ে জেল জুলুম ও নিয়মিত হয়রানীর শিকার হচ্ছে।
কদিন আগে অনলাইন নিউজে দেখলাম একজন ৩২বছরে ডিভোর্সি নারী ২১বছরের এক ছেলের বিরোদ্ধে বিয়ের প্রলোবনে ধর্ষণ আইনে মামলা করেছে। ঘটনার অন্তরালে ছিল ঐ নারীটি ছেলেটিকে নিয়মিত ধর্ষণ করতো। ছেলেটি যখন নিজেকে ধর্ষণ হতে বাচতে নারীটির সঙ্গত্যাগ করেছিল তখনি সে ধর্ষণ মামলার আসামী। আইনে পুরুষ ধর্ষণ নেই বলে ছেলেটি পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো। এই ঘটনার আর কোন আপডেট নিউজও আসেনি । আরেকটি ঘটনা, একজন প্রবাসীর স্ত্রী ১৭ বছরের একটি ছেলের সাথে যৌনতায় লিপ্ত হয়েছিল। এলাকাবাসী তাকে হাতেনাতে ধরে বেদুম প্রহারের পরে পুলিশে দিয়েছিল। ১৭ বছরের ছেলেটিকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী ধর্ষণ করেছিল আর উলটো তার উপরেই নেমে আসে নির্যাতন। পিতামাতার অবজ্ঞা, প্রহার ও ধর্ষণ মামলাতেও জড়িয়ে গিয়েছিল। ১৭ বছরের একটি ছেলে প্রকৃতিগত ভাবেই ধর্ষণের প্রতি কাতর থাকবে।
সেখানে প্রলোভন এবং ইশারাই ছেলেটিকে ধর্ষণ করার জন্য যথেষ্ট। এবং এটাই হয়েছিল। ঠিক একইভাবে ধর্ষিত হয়েছিল ১২ বছরের শিশু হাসিব। অনেকদিন যাবত একই জাতীয় ঘটনা বারবার মিডিয়ায় আসছে। প্রেমিক প্রেমিকা একে অন্যের সম্মতিতে যৌনতা করে সেটা বলা হচ্ছে ধর্ষণ। এবং মামলাও হচ্ছে। এই মামলাগুলিও কিন্তু পুরুষ ধর্ষণের মধ্যে পড়ে। এখানেও পুরুষদের জিম্মি করে, ফাদে ফেলে নিয়মিত ধর্ষণ করে কামুক নারীরা। পুরুষটি যখন ধর্ষণ হতে বাচতে চায় এবং ঐ নারীর সংস্পর্শ ত্যাগ করতে চায় ঠিক তখনি তার বিরোদ্ধে অভিযোগগুলি উঠে। বলা হয় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ এবং আইন সেটা আবারো নারীধর্ষণ বলে ব্যাখ্যা দেয়। আসামী হয় নির্যাতিত পুরুষটিই।পুরুষগুলি আইন সমাজের কাছে কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেনা কারন আইনে পুরুষ ধর্ষণ বা নির্যাতন বলে কিছু নেই। তাই বেশিরভাগ সময় ধর্ষক মেয়েটি হয় তার স্ত্রী এবং কথিত ধর্ষক পুরুষটি হয় তার স্বামী। একজন ধর্ষক কোনদিন কারো স্বামী বা স্ত্রী হতে পারেনা।
তার পরিচয় সে ধর্ষক। তাই আইনের কাছে অনুরোধ শত শত পুরুষদের ধর্ষণ হতে মুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে ধর্ষণ আইনগুলি লিঙ্গ নিরপেক্ষ দাবী করছি । নারীকেন্দ্রিক ধর্ষণ আইনের কারনে অনেক পুরুষ নিরবে ধর্ষিত হচ্ছে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত। হয়রানীর শিকার হচ্ছে, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যা আমাদের ভবিষ্যৎ সমাজে ভয়াবহ রুপ ধারন করবে। নারী বিদ্বেষী তৈরি হবে যা সমাজের জন্য হুমকি। নারী হত্যা, শিশু হত্যা, স্বামী হত্যা অনেক অপরাধের পিছনে কারন রয়েছে নারী কতৃক পুরুষ ধর্ষণ পুরুষ নির্যাতন । তাই আমাদের দাবী ধর্ষণ আইনগুলি লিঙ্গ নিরপেক্ষ হোক । একজন পুরুষ যেমন একজন নারী বা পুরুষকে নির্যাতন ও ধর্ষণ করতে পারে তেমনি একজন নারীও পুরুষকে নির্যাতন ও ধর্ষণ করতে পারে।