কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি>কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারীতে জীবিত আলেয়াকে মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতা বন্ধ রেখেছে উপজেলা সমাজসেবা বিভাগ। বিধবা ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে আলেয়া খাতুন।
জানা গেছে ৫ বছর পূর্বে আলেয়া খাতুনের স্বামী মারা গেছেন। স্বামীর মৃত্যুর পর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় তার নাম বিধবা ভাতার তালিকাভুক্ত হয়। প্রায় দেড় বছর ধরে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে তিনি ভাতার টাকা তুলছিলেন।
কিছুদিন আগে হঠাৎ তার মোবাইলে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যায়। এবিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান,মেম্বারের কাছে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি তার। পরে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তার নাম মৃতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে ওই নারীর ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা সমাজ সেবা অফিস। এ খবরে হতবাক হয়ে পড়েন ওই বিধবা নারী।
আলেয়া খাতুন উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়াডের্র ইসলামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের স্ত্রী। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৪৯১০৬৪৭৪৫০৮৬২। জন্ম তারিখ ১৪ নভেম্বর ১৯৫৯ ইং। স্বামী মৃত্যুর পর তার জীবন জীবিকা চালানোর একমাত্র উৎস ছিল ওই বিধবা ভাতার টাকা। দীর্ঘদিন থেকে টাকা না পেয়ে তিনি হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন।
আলেয়া বলেন, দীর্ঘদিন থেকে স্বামী মারা গেছেন। বিধবা ভাতাভোগী হিসেবে তিন মাস পর পর ভাতার টাকা মোবাইলের উত্তোলন করে আসছি। হঠাৎ ভাতার টাকা আমার মোবাইলে আসা বন্ধ হওয়ার কারন জানতে অফিসে এসে জানতে পারি আমি মৃতদের তালিকায়।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতা ১৩ হাজার ৮৬৪ জন। বিধবা ভাতা ৭ হাজার ৬৪১জন ও প্রতিবন্ধী ৬ হাজার ৮০৭ জন। প্রতি তিনমাস পরপর ভাতা ভোগীদের মোবাইলে তাদের প্রাপ্য সন্মানী ভাতার টাকা বিতরণ করা হচ্ছে।
চরভূরুঙ্গামারী ইউপি চেয়ারম্যান মানিক উদ্দিন আলেয়া খাতুনের জীবিত থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তার নামে কোন মৃত্যু সনদ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে দেয়া হয়নি। তারা কেন কিভাবে এটি করলেন, তার খোজ নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শামসুজ্জামান বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের তালিকা অনুযায়ী তার ভাতা মৃত্যু তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ভাতাভোগীর নাম মৃত্যুর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হলে সেটা এই মূহুর্তে সফটওয়্যারে জীবিত অপশনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছেনা। কারন সফটওয়্যারে মৃত্যু থেকে জীবিত করার অপশন এখনো চালু না থাকায় এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। তিনি জানান, বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান পাওয়া যাবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আরিফ খান
Developed by Shafayet IT