বুয়েটের স্নাতকোত্তর ভর্তি পরীক্ষায় গণিত বিভাগের ফলাফলে প্রথম হলেন কুড়িগ্রামের চিলমারীর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসী(ইতি)।তার বাবার নাম মোঃ চান মিয়া, মা- মোছাঃ কাজল বেগম। বাবা ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী।বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ পুরাতন বাজার এলাকায়।গত ২৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে ফলাফলের এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। তার আবেদনের সিরিয়াল নম্বর ৯০০৭৯।নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসীর এমন সফলতার খবরে তার স্বজনসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা উচ্ছ্বসিত।চার বোন এক ভাইয়ের মধ্যে জান্নাতুল ফেরদৌসী তৃতীয়। মেধাবী এ শিক্ষার্থী কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে ২০২০ সালে গণিত বিষয়ে অনার্সে সিজিপিএ ৩.৯৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।জানা গেছে, জান্নাতুল ফেরদৌসী ডিএ চিলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৭ সালে পিএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি, শরীফের হাট মনির উদ্দিন দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে জেএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং ২০১৩ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পান। এছাড়াও গোলাম হাবিব মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০১৫ সালে এইচএসসিতে ৪.৫৮ পান।এ বিষয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসী বলেন, আমি শিক্ষাজীবন থেকে মন দিয়ে পড়াশুনা করেছি। কিন্তু টাকার অভাবে ঠিকমতো প্রাইভেট পড়তে পারিনি। তবে স্বপ্ন ছিল মেডিকেলে পড়াশোনা করব, কিন্তু সেটা হয়নি। পরে বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেই। এর মধ্যে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা দেই।
সকলের দোয়ায় ভালো রেজাল্ট করেছি।
তিনি আরও জানান, ‘বর্তমানে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে মাস্টার্স ভর্তি হলেও এখন ভর্তি বাতিল করে বুয়েটে ভর্তি হবো। আমার ইচ্ছা বিসিএস করে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করা।’জান্নাতুল ফেরদৌসীর বাবা চান মিয়া বলেন, আমি ছোট ব্যবসা করি। সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ ঠিকমতো দিতে পারিনি। আজ আমার মেয়ের এই সফলতার জন্য আমি গর্বিত। দোয়া করি আমার মেয়ে যেন অসহায় মানুষের জন্য কাজ করতে পারে।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও গণিত বিভাগের প্রধান মোঃ সাজ্জাদুর রহমান বলেন,‘ ফল প্রকাশের পর ইতি (জান্নাতুল) ফোন করে সুসংবাদটি জানিয়েছে। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে সে জিপিএ-৪ পাওয়ার পর আমরা তার প্রতি আরও যত্নশীল হয়ে উঠি। ফাইনালেও তার ফলাফল ভালো। তার সাফল্যে আমরা আনন্দিত। আমরা ওর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।’
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মীর্জা মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এটা অবশ্যই আনন্দের এবং গৌরবের। কুড়িগ্রামের শিক্ষার্থীরা অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। এভাবে আমরা একদিন সাফল্যে ভরে উঠবো। ইতি সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদেরকে অভিনন্দন জানাই।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আরিফ খান
Developed by Shafayet IT