বরিশালের সাবেক চিফ হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এবং সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বাড়ি দুটিতে ভাঙচুর ও আগুন দেয় একদল ছাত্র-জনতা।
সেনা সদস্যরা দফায় দফায় তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। হাসানাত ও আমু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয়। এর আগে গত ৫ আগস্টও এ দুই বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে নগরের কালীবাড়ি রোডে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ‘সেরনিয়াবাত ভবন’ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য একদল ছাত্র-জনতা বাড়ির গেট ও দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢোকে। বিক্ষুব্ধ জনতার একাংশ দ্বিতল ভবনে ঢুকে ভেতরে থাকা কিছু আসবাবপত্র ছুড়ে নিচে ফেলে দেয়। পরে সেসবে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তারা ভবনের ওপরেও আগুন দিলে সেনাবাহিনীর সহায়তায় স্থানীয়রা তা নিয়ন্ত্রণে আনে। বাড়িটিতে হাসানাতের ছেলে সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বসবাস করতেন।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে ভাঙচুর শুরু হওয়ার পর রাত ১১টা নাগাদ বরিশালে সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বাড়ির সামনে গিয়ে অবস্থান নেন বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্য। রাত পৌনে ১২টার দিকে কয়েক শ শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে সেনাসদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করেন। পরে বুলডোজার এনে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। রাত পৌনে ২টা পর্যন্ত বাড়িটিতে ভাঙচুর চলে।
ঘটনাস্থলে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, ‘বিক্ষুব্ধ জনতা ফ্যাসিবাদের দোসরদের আস্তানা ভেঙে দিচ্ছে।’
হাসানাত ও আমুর বাড়ি ভাঙচুর। ছবি: সংগৃহীত
হাসানাত ও আমুর বাড়ি ভাঙচুর। ছবি: সংগৃহীত
অপরদিকে রাত পৌনে ২টার দিকে বুলডোজার ও মিছিল নিয়ে নগরের বগুড়া রোডের আমির হোসেন আমুর বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্র-জনতা। রাত ২টার দিকে ভবনটি ভাঙা শুরু হয়। সেনাসদস্যরা দ্রুত গিয়ে ছাত্র-জনতাকে নিবৃত্তের চেষ্টা করে। তবে গভীর রাতে আবারও ভবনের কিছু অংশ ভাঙতে শুরু করে ছাত্র-জনতা। এ সময় তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে।’
হাসানাত ও আমুর বাড়িতে আগুন। ছবি: সংগৃহীত
হাসানাত ও আমুর বাড়িতে আগুন। ছবি: সংগৃহীত
সেখানে থাকা শিক্ষার্থী মো. আকিব বলেন, ‘জনগণের টাকা লুটপাট করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা এসব প্রাসাদ গড়েছে।’
প্রসঙ্গত, আমির হোসেন আমুর নির্বাচনী এলাকা ঝালকাঠি। তবে তিনি বগুড়া রোডের এই ভবনে থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আরিফ খান
Developed by Shafayet IT