117 বার পঠিত
চলতি বছর এপ্রিল থেকে জামালপুরের সরিষাবাড়ির কৃষক আব্দুল মজিদ আদা চাষ শুরু করেন। বাড়ির আঙিনা ও আশেপাশের পরিত্যক্ত প্রায় সাড়ে ৩ বিঘা পতিত জমিতে ৬টি প্লটে ১৪ হাজার প্লাস্টিকের খালি বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, তিনিই দেশে এই প্রথম বস্তায় আদার চাষ শুরু করেছেন। তার এই ব্যতিক্রমী আদা চাষে অন্যান্য কৃষকেরাও বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছে।জানা গেছে, আব্দুল মজিদের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের রুদ্র বয়ড়া গ্রামের বাসিন্দা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক শেষ করে পেশা হিসেবে কৃষিকে বেছে নিয়েছেন। শুরু থেকেই কর্মজীবন অতিবাহিত করছেন নানা ধরণের কৃষিপণ্য উৎপন্ন করে। সফলও হয়েছেন বারবার। বর্তমানে তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা।
বস্তায় আদা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আব্দুল মজিদ শুরুতে প্লাস্টিকের বস্তায় মাটি ভরে বাড়ির উঠান ও পরিত্যক্ত আঙিনায় আদার চাষ করেন। এতে তিনি আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন। সেই পূর্বের কৃষি দক্ষতা, ইউটিউব ও বগুড়া মসলা গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে পরামর্শ নিয়ে এ বছর জমি ছাড়া যে বস্তায় মাটি ভরে আদাচাষ করা যায় তা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন। আব্দুল মজিদ এ বছর বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ শুরু করেন।
স্থানীয় রহিম বলেন, আব্দুল মজিদ এমন একজন মানুষ যার কাছে সঠিক পরামর্শের জন্য গেলে কখনো ফিরে আসতে হয়নি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করলেও কৃষিকেই তার পছন্দ হিসেবে বেছে নেন। সফলতাও পেয়েছেন। বর্তমানে সরিষাবাড়ীকে একটি কৃষি নির্ভর উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে নতুন চাষাবাদে যুব সমাজকে অনুপ্রাণিত করছেন।
বস্তায় আদা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আব্দুল মজিদ আব্দুল মজিদ জানান, ছাত্রজীবন থেকেই পছন্দের তালিকায় ছিল কৃষি কাজ। যেকোনো কৃষি খামার দেখলেই সেখানে আটকে যেতেন। সেখান থেকেই চাষাবাদ সবসময় তাকে অনুপ্রাণিত করে। তাই কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবারের মতো বারি-১ জাতের আদার চাষাবাদ শুরু করেছেন।
সরিষাবাড়ি উপজেলায় তিনিই প্রথম বস্তায় আদা চাষের সূচনা করেন। বস্তায় আদা চাষের কোনো ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার করেননি। বাড়ির তৈরি ভার্মি-কম্পোস্ট ব্যবহারে আদার গাছগুলো ভালোভাবে বেড়ে উঠেছে। যে কেউ দেখেই আশ্চর্য হয়ে যান।
আব্দুল মজিদ জানান, তিনি প্রতি বস্তায় ৪০ টাকা করে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ করেছেন। আদা উত্তোলন করতে আরো ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, প্রতি ব্যাগে ২ কেজিরও বেশি আদার ফলন পাওয়ার আশা করছেন। সব খরচ বাদেও প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা লাভের আশাবাদী তিনি।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, তিনিই প্রথম বস্তায় আদার চাষ শুরু করেছেন। তার এই ব্যতিক্রমী আদা চাষে অন্যান্য কৃষকেরাও বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষি অফিস থেকে সর্বদা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি সঠিক দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে আমরাও কৃষকদের এ বিষয়ে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি। তার দেখা দেখি এলাকার অনেক কৃষকরা আদা চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে ওই এলাকার অনেক চাষি আদা চাষ করেছেন।