215 বার পঠিত
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার প্রধান ব্যবসাকেন্দ্র ও জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা হাটকৃষ্ণপুর। এখানে একটি সাব-পোস্ট অফিস রয়েছে। বর্তমানে অফিসটির খুবই জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। যে কেউ দেখলেই মনে হবে এ যেন একটি কুড়ে ঘর অযত্নে অবহেলায় ধ্বংসের শেষ কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে। চারচালা টিনের ঘরটির বারান্দা ভেঙে ঝুলে আছে। যে কোনো সময় চালা ভেঙে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে চাল দিয়ে পানি পড়ে পুরো ঘরটি ভিজে একাকার হয়ে যায়। দরজা-জানালা ভাঙা। কাগজপত্র রাখতে হয় পলিথিনে ঢেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদরপুর উপজেলার হাটকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাব-পোস্ট অফিসটি ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ৫০০ টাকা ভাড়ায় চারচালা একটি টিনের ঘরে অফিসের সব কার্যক্রম চলছিল। সেই ১৯৭৪ সালের পর থেকে দীর্ঘদিন সংস্কার ও মেরামত না করায় জরাজীর্ণ হয়ে আছে অফিস ঘর। প্রাণ হারানোর ভয় নিয়েই এখানে ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের চাকরির স্বার্থে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পোস্ট অফিসের চারপাশ ময়লা-আবর্জনায় ভরা, মানুষ যখন তখন এর চারপাশে এসে প্রস্রাব করছে। এর পাশে থাকা শৌচাগার ও ড্রেনের দুর্গন্ধে অফিসে বসা দায়। মাস শেষে কর্মচারীদের বেতন থেকে বিদ্যুতের বিল দেওয়া হয়। এইখানে যে সকল নতুন মানুষ পোস্ট অফিসে কোন কাজে আসেন তাদের এটিকে দেখে পোস্ট অফিস মনে করাই দায় হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আজগর হোসেন বলেন, “এখন বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল যুগের জিনিসপত্র চলে আসায় আমাদের এখন আর পোস্ট অফিসে যেতে হয়না। তাছাড়াও আমাদের এই পোস্ট অফিসের বর্তমানে যে অবস্থা, এতে মানুষের খুব বেশি দরকার বা ঠেকায় না পড়লে পোস্ট অফিসে যায় না”।
সাব-পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মো. আক্তারুজ্জামান মিয়া বলেন, “অফিসের অবস্থা খুবই খারাপ। খুব কষ্ট করে চাকরির স্বার্থে আমরা এখানে দায়িত্ব পালন করছি। এইখানে যে কোন সুস্থ্য মানুষ আসলে গন্ধে বা এইখানের পরিবেশ অসুস্থ হয়ে যাবে, কোন স্বাভাবিক মানুষ এই ভবনে কাজ করতে পারবেন না”।
স্থানীয় কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান তিতাস বলেন, “যে কোন কাজে জনগণ পোস্ট অফিসে গেলে তাদের ভয়ে থাকতে হয় কখন ঘরটি ভেঙ্গে মাথার ওপর পড়ে। খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে এইখানের কর্মকর্তা-কর্মচারীও একই আতঙ্কে থাকেন। অতিদ্রুত পোস্ট অফিসের এই ঝুঁকিপূর্ণ ঘরটি ভেঙ্গে আধুনিক মানের একটি ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন তা না হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ পোস্ট কোন সেবা নিতে আসবে না”।
এ বিষয়ে জানতে চাইরে ফরিদপুর ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, “কৃষ্ণপুর সাব-পোস্ট অফিসটির নিজস্ব কোনো জায়গা-জমি নেই। এইখানে আমাদের কোন জায়গা না থাকায় ভবন নির্মাণ করতে পারছিনা। ওই পোস্ট অফিসের সম্পর্কে বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে কয়েকবার জানানো হয়েছে। তাদের অনুমতি পেলেই জরাজীর্ণ ঘরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।