61 বার পঠিত
ঝালকাঠি জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, স্থান, জনবহুল মোড়ে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এর আওতায় জেলা কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য যোগ করা হয়েছে সেনা সদস্যদেরও। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত সহিংসতা থাকলেও শান্তিপুর্ণ ঝালকাঠি জেলায় সহাবস্থান পরিবেশ বিরাজ করছে। তবুও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে সর্বত্র।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঝালকাঠি জেলা কারাগারের আরপি গেইট (প্রবেশদ্বার) রয়েছে নিষিদ্ধ নিরাপত্তা। কারারক্ষিদের পাহাড়ার পাশাপাশি একাধিক সেনা সদস্যও রয়েছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে। মহিলা কারারক্ষিও দায়িত্বে রয়েছেন সেখানে। বর্তমান পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে দর্শনার্থীদের স্বাক্ষাত বন্ধ রয়েছে। তাই কারা সংশ্লিষ্টদের বাইরে কাউকে কারাগার এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে সেনা সদস্য ও কারারক্ষিরা রয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতায়। পুর্ণাঙ্গ ইউনিফর্মে অগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাড়িয়ে তারা দায়িত্ব পালন করছেন।
ঝালকাঠি জেলা কারাগারের তত্বাবধায়ক মো. আব্দুল্লাহ ইবনে তোফাজ্জেল হোসেন খান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সার্বিক দিক বিবেচনায় সর্বোচ্চ সতর্কতায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। বাইরে যেমন নিরাপত্তার বিষয়টি রয়েছে, কারাভ্যান্তরেও তেমনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে ঝালকাঠি জেলা কারাগারে জঙ্গি, উগ্রবাদ, দস্যু এবং ঝুকিপুর্ণ কোন আসামী বন্ধী নাই। তাছাড়া অন্যান্য জেলায় কোটা আন্দোলনকারী বন্ধী থাকলেও ঝালকাঠি জেলায় কোটা আন্দোলন নাই, তাই কোন আন্দোলনকারীও কারাগারে নেই। কারাগারের ভিতরে কারা কোড মেনেই শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলেও জানান।
কারাধ্যক্ষ আতিকুর রহমান বলেন, সারাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে কারা এলাকায় সার্বক্ষণিক কারারক্ষীদের টহল এবং চারদিকে ব্যাপক লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঝালকাঠি জেলা কারাগারের ভিতরে ও বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অধিকতর জোরদার করা হয়েছে। যাতে কোনো অশুভ শক্তি ও জঙ্গিবাদ নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটাতে না পারে।
জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের সঙ্গে মঙ্গলবার বিকেলে আলাপ করে জানা গেছে, কারাগারের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং ভিতরে ও বাইরে লাইটিং বৃদ্ধি করা হয়েছে। শৃঙ্খলা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় দেশের অন্য কারাগারের তুলনায় এটি মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে। অপরদিকে ঝালকাঠি জেলার ৪ উপজেলার কোথাও কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা ও জনবহুল মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কোটা আন্দোলনকারী বা সুযোগবাদী তৃতীয় কোন শক্তি যাতে কোন ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিবেশের বিঘœ ঘটাতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারী রয়েছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের। মাঠে রয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা ও সদস্যদের ব্যাপক তৎপরতা। সবদিক মিলিয়ে নিñিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা ঝালকাঠি জেলা। আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং বহাল রাখতে জেলা বিভিন্ন শ্রেণির ইমাম, পুরোহিত, ফাদার, ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ, বিশিষ্ট সুধীজনদের নিয়ে মতবিনিয় সভা করেছে জেলা প্রশাসন। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, মাদক, বাল্য বিবাহ, যৌতুক , ইভটিজিং, গুজব ছড়ানো, মোবাইল এর অপব্যবহার বিষয়ক সামাজিক সমস্যা নিরসনে ইমাম, পুরোহিত, ফাদার ও সমাজের সর্বস্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল। এসময় বক্তারা বলেন, দেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও নাশকতা চালিয়ে দেশে একটি অরাজকতাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করে। এরকম যেকোন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও সরকার বিরোধী গুজব ছড়ানো থেকে সকলকে সচেতন হতে হবে। দেশের সম্পদ এবং আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।