161 বার পঠিত
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতির মাঠে রয়েছে আওয়ামী লীগ। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক সম্মেলন ও সমাবেশ করার জন্য সক্রিয় রয়েছেন সংশ্লিষ্ট জ্যেষ্ঠ নেতারা। দলের তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে এবং গণমানুষের সঙ্গে সখ্য বাড়াতে এবার সরাসরি যোগ হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নির্বাচনের আগে জেলা ও বিভাগীয় সমাবেশে সশরীরে উপস্থিত থেকে নির্বাচনী বার্তা দেবেন দলীয় সভাপতি। সর্বশেষ কার্যনিবাহী সভায় এই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ৪ ডিসেম্বর (সম্ভাব্য তারিখ) চট্টগ্রামে একটি সমাবেশে তার যোগ দেওয়ার কথা। বিশেষ করে যেসব জেলায় দীর্ঘদিন তিনি সফর করতে পারেননি; সেসব জেলা প্রাধান্য দেওয়া হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ বার্তা দেবেন তিনি। দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও পদবঞ্চিত কর্মীদের করা হবে উজ্জীবিত। কোন জেলায় দলের কী অবস্থা, তা আমলে নিয়ে দেবেন বিশেষ বার্তা।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, সভাপতির এ ধরনের সফরে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ভোটারদের সঙ্গে দলের ঘনিষ্ঠ সেতুবন্ধ তৈরি হবে বলে মনে করছেন উচ্চপর্যায়ের নেতারা। তার এই সম্ভাব্য সফর ঘিরে ইতোমধ্যে দলের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেসব জেলায় যাওয়া হয়নি, সেসব জেলায় আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাব। তবে যেসব জেলায় সম্মেলন হয়েছে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, সেখানে যাব না।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘করোনার কারণে দলের সভাপতি দীর্ঘদিন রাজধানীর বাইরে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেননি। তিনি (শেখ হাসিনা) বেশ কিছুদিন ধরে বলছিলেন বাইরে জনসভা করবেন। প্রথমে দু-তিনটি জেলা নির্দিষ্ট করে বলেছেন যে, এগুলোতে সমাবেশ করবেন। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলায়ও করবেন। আর গণভবনে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে জেলার নেতাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকের ওপর গুরুত্ব দিয়ে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মীর দায়িত্ব হবে দলের উন্নয়ন সম্পর্কে প্রচার করা। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। সেগুলো বেশি করে জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী যেসব জেলা বা মহানগরে সমাবেশ করবেন তার আশপাশে সড়ক-মহাসড়কে বা গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পোস্টার-ব্যানার-বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। এসব ব্যানারে স্থান পাবে বিগত দিনে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি। চালানো হবে জনসমর্থন লাভের জন্য প্রচারণা।
দলের নেতারা বলছেন, দলীয় সভানেত্রী জেলা ও মহানগর পর্যায়ের সামনের সারির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে দল এবং স্থানীয় পারিপাশ্বিক বিষয়ে জানতে চাইবেন। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন কেন্দ্র করে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বিদ্রোহী হয়েছেন যারা তাদের কারা মদদ দিয়েছেন, কাদের কারণে দলের মনোনীত প্রার্থী হেরেছেন; সেসব বিষয়ে কথা বলতে পারেন।
পাশাপাশি তিনি স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধীদের অবস্থা সম্পর্কে সরাসরি ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করবেন এবং নির্বাচন সামনে রেখে দলের করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন। দলীয় নেতাদের বিষয়েও কথা বলতে পারেন তিনি। কারণ প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে দলের নেতাদের বিষয়ে জরিপ চালাচ্ছেন। এই জরিপের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করা হতে পারে বলে ঘোষণাও দিয়েছেন।
এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ তিন বছর জেলায় জনসমাবেশ করতে পারেননি। নির্বাচনের আগে তিনি জেলায় যাবেন।
এর মাধ্যমে তিনি জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করবেন এবং নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের ফিরিস্তি ও সরকারের উন্নয়নকাজের কথা তুলে ধরবেন। এগুলো কারো সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়। এসবের মূল লক্ষ্য জনগণের সমর্থন আদায়।
নাছিম বলেন, জেলার নেতাদের সঙ্গে বসলেও গুরুত্ব পাবে জাতীয় নির্বাচনী বিষয়। জেলা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি নির্বাচনের করণীয় বার্তা দেবেন।