যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর উপ-সহকারী মন্ত্রী আফরিন আখতার আগামী ১৫ থেকে ১৮ অক্টোবর ঢাকা সফর করতে পারেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
মার্কিন উপ-সহকারি মন্ত্রীর আসন্ন সফরে দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় নির্বাচন, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা ইস্যু বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে।কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর উপ-সহকারী মন্ত্রী আফরিন আখতারের আসন্ন ঢাকা সফরটি চূড়ান্ত করতে দুই দেশের কূটনীতিকরা কাজ করছেন। মার্কিন উপ-সহকারী মন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেনের বৈঠকের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।
এছাড়া এই সফরে মার্কিন উপ-সহকারী মন্ত্রী দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। যেখানে আসন্ন নির্বাচন ও গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার ইস্যু গুরুত্ব পাবে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর উপ-সহকারী মন্ত্রী আফরিন আখতার গত বছরের ৫ নভেম্বর দুইদিনের ঢাকা সফর করেন। ওই সফরে তিনি পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশের তিন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাসরুর মাওলা উপস্থিত ছিলেন। মার্কিন উপ-সহকারী মন্ত্রী আফরিন আক্তার ওই সময়ে সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা মিশন ও ইউএসএইড এর বাংলাদেশ কার্যালয় আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে, এদেশের সুশীল সমাজের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সর্বশেষ ঢাকায় ১২ থেকে ১৩ মে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মার্কিন উপ-সহকারী মন্ত্রী আফরিন আখতার। ওই সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, রাশিয়া, চীন কিংবা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বিবেচনায় নিয়ে ওয়াশিংটন ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক নির্ধারণ করে না।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো আরো বলছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে পাল্লাদিয়ে পশ্চিমা চাপ আরো বাড়তে পারে। আসন্ন নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হয় তা নিশ্চিতে আস্থা গড়তে এই চাপ বাড়বে। যার নেপথ্যে রয়েছে ভূ-রাজনীতি। পশ্চিমা শক্তিগুলো বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দেখতে চায়, তারা মনে করে যে এখানে কতৃত্ববাদি সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে তা চীনের দিকে চলে যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় যে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকুক। তাদের বিশ্বাস এখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকলে তা ভূ-রাজনৈতিক এবং গোষ্ঠী স্বার্থ বলে যা আছে তা হাসিল করতে সুবিধা হবে। এখানে কথাটা হচ্ছে তারা যদি এতে তাদের স্বার্থ মনে করে যা গণতান্ত্রিক রেজিম, তারা যতোই ভুল কপচাক যে বাইডেন প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি হচ্ছে বিশ্বে গণতন্ত্র সমর্থন করবে কিন্তু মূল বিষয়টা হচ্ছে গণতন্ত্র সমর্থনের মাধ্যমে তারা তাদের স্বার্থ রক্ষা হবে বলে মনে করে। এখানে বাংলাদেশের জন্য বিষয়টা যা দাড়াচ্ছে, সেটা হচ্ছে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যেটা চাচ্ছে যে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, সেটা বাংলাদেশের মানুষও চাচ্ছে। এখানে মার্কিন স্বার্থ এবং বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ এক বিন্দুতে এসে মিলেছে। তাই পশ্চিমা বিশ্বের চাপ আরো বাড়বে। এই সময়ে চেষ্টা থাকবে সরকারকে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে রাজি করাতে। যদিও সরকার আগেই বলেছে যে তারাও সুষ্ঠু নির্বাচন করার অঙ্গিকার করেছে কিন্তু এখানে পশ্চিমারা আস্থা পাচ্ছে না।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আরিফ খান
Developed by Shafayet IT