ঝালকাঠি ॥ ঝালকাঠি সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের সংগ্রামনীল-সারেংগল সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দক ও ব্রিজগুলো ভেঙে গেছে। ব্রিজের উপর কাঠের পাটাতন দিয়ে ৫গ্রামের মানুষসহ যানবাহন চলাচল করছে। শুকনা মৌসূমে যানবাহনে উঠলেই নাগরদোলায় দুলতে থাকে যাত্রীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঝালকাঠি সদর উপজেলার কির্ত্তিপাশা সড়কের রামনগর পুলিশ বক্স থেকে সংগ্রামনীল হয়ে সারেংগল বাজার পর্যন্ত ৫কিলোমিটার রাস্তা। এরাস্তাটি কোথাও নদীর তীর থেকে আবার কোথাও গ্রামের মধ্য দিয়ে অবস্থিত হয়েছে। ৫কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ৫গ্রামের মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে ভিন্ন গ্রাম ও শহরে যাতায়াত করে। নামে মাত্র কাজ করায় গত বর্ষা মৌসূমেই রাস্তার কার্পেটিং উঠে গেছে। এরপরে সেখানে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত এবং খানাখন্দক সৃষ্টি হয়েছে। যা দিয়ে যানচলাচল খুবই দুঃসাধ্য ও ঝুকিপুর্ণ হয়ে পড়েছে। ওই রাস্তা নির্মাণের সময় খালের পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে বেশ কয়েকটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে ব্রিজ তৈরী করায় তাও ফেটে ভেঙে যাচ্ছে। এখন জীবন ঝুকি এড়াতে ও চলাচল করতে এলাকাবাসীর উদ্যোগে ব্রিজের উপরে কাঠের পাটাতন দেয়া হয়েছে। যার উপর দিয়েই মানুষ, গবাদী প্রাণি ও যানবাহন চলাচল করছে। দ্রুতগতিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ রাস্তাটি সংস্কার না করলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
ওই এলাকার বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানাগেছে, রামনগর পুলিশ বক্স থেকে সংগ্রামনীল হয়ে সারেংগল বাজার পর্যন্ত ৫কিলোমিটার রাস্তা। কেওড়া ইউনিয়নের সারেঙ্গল বাজার, সারেঙ্গল ফাজিল মাদ্রাসা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, নৈকাঠি হুজুরের দরবার, নুরানী ও হাফিজী মাদ্রাসা রয়েছে বেশ কয়েকটি। ওই রাস্তা দিয়েই সংশ্লিষ্টদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে যেতেই অনেক ভয় লাগে। গাড়িতে গেলে উল্টি দেবার ভয়। আবার পায়ে হেটে গেলে গাড়ি উল্টে চাপা দেবার ভয়। তাছাড়া কোনভাবে একটি গাড়ি গেলে ধুলোয় চোখে কিছু দেখা যায় না। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
স্কুল ছাত্রী তাসফিয়া জাহান জানান, রাস্তার যে ভাঙাচোরা অবস্থা তাতে পায়ে হাটতেই কষ্ট হয়। বৃষ্টির মৌসূমে গর্তের পানি ছিটে ওঠে। শুকনো মৌসূমে ধুলোয় চলাচল করতে পারি না।
মাদ্রাসা ছাত্র আবিদুর রহমান বলেন, কির্ত্তিপাশা পুলিশ বক্স থেকে শুরু করে সারেঙ্গল বাজার পর্যন্ত ৫কিলোমিটারের বেশি রাস্তার যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে ২০বছরেও কেউ রাস্তার সংস্কার করেনি। অথচ তিন বছর পূর্বে সংস্কার করা রাস্তাটি এখন কোন কৃষি ক্ষেত মনে হচ্ছে।
ব্যবসায়ী আবিয়ান হাসান জানান, রাস্তার মাজে এমন কয়েকটা গর্ত আছে, যেখান দিয়ে কোন যানবাহন গেলে যাত্রীরা মনে করে আমরা নাগর দোলায় উঠেছি। গাড়ি যেভাবে হেলেদুলে চলে তাতে উল্টে পড়ার আতঙ্কে থাকেন যাত্রীরা। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে আগামী বর্ষা মৌসূমে নৌপথে যাতায়াত করতে হবে।
ব্যবসায়ী আবু সুফিয়ান মিন্টু জানান, সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের গুরুত্বপুর্ণ সড়ক পুলিশ বক্স থেকে সংগ্রামনীল হয়ে সারেঙ্গল বাজার পর্যন্ত। এর মাঝে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী, বেসরকারী ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও এলাকার মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনে শহরমুখী হতে হয়। রাস্তার যে অবস্থা, আগামী বর্ষা মৌসূমে নৌ-পথই হবে আমাদের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম।
সারেঙ্গল ফাজিল মাদ্রাসার ইংরেজি প্রভাষক মীর এনামুল হক জানান, সংস্কারের অভাবে খানাখন্দক এবং অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। মটোর সাইকেল, রিক্সা, ইজিবাইক কোনটাতেই স্বাচ্ছন্দে আরোহন করে চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। বেশ কয়েকটা ব্রিজ এমনভাবে ভাঙা চোরা যার উপরে কাঠের পাটাতন দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে রাস্তাটি সম্পুর্ণই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। প্রত্যন্তএলাকার জনসাধারনকে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হবে।
ঝালকাঠির স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম সরকার জানান, রাস্তাটির বিষয়ে আমাদের কাছে তেমন করে কেউ বলেনি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আবেদন পেলে পরবর্তি প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আরিফ খান
Developed by Shafayet IT