84 বার পঠিত
ঝালকাঠি সংবাদদাতা> শীত মৌসুমের শুরুতে গ্রাম বাংলার পাড়া-গাঁয়ে খেঁজুর গাছ থেকে সুস্বাদু রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত থাকতেন গাছিরা (গাছ পরিচর্যাকারীরা)। গ্রামীণ সংস্কৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয় খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের ধুম। এখন আর গ্রামগঞ্জে তেমনটা দেখা যায় না। কারণ দক্ষিণাঞ্চলে কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে খেঁজুর গাছ। আগের মত মিলছেনা খেঁজুরের রস। শহরায়নের আগ্রাসনে প্রকৃতির ঐতিহ্য খেঁজুর গাছ দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে খেঁজুর গাছ তত কমছে, দেখা মিলছেনা রসের। ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের মধ্যে কাঁধে রসের হাড়ি নিয়ে গাছিদের হাঁকডাক শোনা যায় না আগের মতো। এমনকি রস বিক্রেতাদের বাড়ি গিয়েও রস পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তাই জমে উঠছেনা শীতের সকালে রোদে বসে আয়েশ করে পিঠা-পায়েস খাওয়া।
সরেজমিনে জেলার প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা ও জানা গেছে, কোনো কোনো এলাকায় কিছু কিছু খেঁজুর গাছ রয়েছে। যেসব স্থানে এক সময় রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে অসংখ্য খেঁজুর গাছ ছিলো সেসব স্থানে এখন বিলুপ্তিপ্রায় খেঁজুর গাছ। গ্রামের কোনো কোনো সড়কের পাশে কিছু গাছ থাকলেও তাতে তেমন রস হয় না বলে জানান রস সংগ্রহকারী গাছিরা। গাছিরা পেশা পরিবর্তনের ফলে আগের মতো আর রস সংগ্রহ করা হয়না। একসময় নির্বিচারে খেঁজুর গাছ কাটার ফলে কমে গেছে খেঁজুর গাছের সংখ্যা। তারপরেও উপকূলের প্রত্যন্ত এলাকায় কিছু কিছু স্থানে খেঁজুর গাছ কাটা হয়। পর্যাপ্ত চাহিদার তুলনায় রস পাওয়া যায় অপ্রতুল।
বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেঁজুর রসের সঙ্গে সম্পৃক্ত পেশা ‘গাছি’। মাটির লবণাক্ততার জন্য খেঁজুর গাছ মারা যাচ্ছে। আর এ পেশায় গাছিদের সংখ্যাও কমে গেছে। ফলে কিছু গাছ টিকে থাকলেও পরিচর্যার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রসের সঙ্গে হারাতে বসেছে খেঁজুর গাছ সম্পৃক্ত পেশা-গাছি। সময়ের সাথে সাথে একদিকে যেমন খেঁজুর গাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে, অন্যদিকে অভিজ্ঞদের অভাবে গাছী তৈরী হচ্ছে না। একপ্রকার মানুষ ভুলতে বসেছে খেঁজুর গাছের রসের স্বাদ।
এক সময়ে শীত মৌসুমের শীত আসার সাথে সাথে খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ত গাছিরা। ভোরের কুয়াশা অতিক্রম করে গ্রামগঞ্জের গাছিরা কাছি (মোটা দড়ি), বেতের ঝুড়ি কোমরে বেঁধে ছুটে চলতেন গ্রামের মেঠ পথ ধরে। ঝুড়ির ভেতরে থাকত কয়েক রকমের গাছ কাটা দা, বালি রাখার চুঙ্গা, রসের হাঁড়ি বা ঠিলা এমনকি দায়ে ধার দেয়ার বিভিন্ন প্রকারের সরঞ্জম। শীতের শুরুতেই গাছ পরিচর্যা (গাছ কাটা) নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন গাছিরা। গাছের উপরে উঠে নিজেকে কোমরের কাছিতে বেঁধে তারপর চলত গাছ পরিচর্যা। গাছের অগ্রভাগের একপাশে বেশ খানিকটা কেটে পরিষ্কার করা হয়। পরে বাঁশের কঞ্চি কেটে কাঠি তৈরি করে গেঁথে দেওয়া হয়। তার ঠিক নিচেই ঝোলানো হয় মাটির হাঁড়ি কিংবা প্লাস্টিকের বোতল। গাছের কাটা অংশ বেয়ে রস কাঠির মাধ্যমে ফোঁটায় ফোঁটায় হাঁড়ি ও বোতলে এসে জমা হয়। কে কার আগে খেঁজুর গাছ কেটে রস নিয়ে বিক্রি করতে পারবে এর প্রতিযোগিতা চলত। ঠান্ডা আবহাওয়া, মেঘলা আকাশ আর কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল পর্যাপ্ত রসের জন্য উপযোগী। এ সময়ে প্রাপ্ত রসের স্বাদও ভালো থাকে। কাকডাকা ভোরে খেঁজুরের রস, মন মাতানো ঘ্রাণ গ্রামীণ জনপদে বিরল। শীতের সকালে খেঁজুর রস, মিষ্টি রোদ, কৃষক-কৃষাণির হাসি দারুণ প্রাণশক্তি।
গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের সাথে খেঁজুরের রস ও শীতকাল একাকার হয়ে আছে। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার অত্যন্ত জন প্রিয় শীত কালীন ঐতিহ্যবাহী খেঁজুর রস। এমন একসময় ছিল গোটা শীত মৌসুমজুড়ে রসের পিঠা, পায়েস, গুড় তৈরি হত ঘরে ঘরে। গ্রামীণ জনপদে খেঁজুর রসে তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েশ ছিল মানুষের নবান্নের সেরা উৎসব। এখানে শীতের মূল উৎসবই হলো শীতের পিঠা। যার মূল উপাদান খেঁজুরের রস, গুড় ও বাটালী। আর শীতের সকালে রোদে বসে মুড়ি, খই, পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে। তাই এসময় গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা ও পায়েস তৈরির ধুম পড়ে যেত। শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সবাই মেতে উঠে নতুন চালের পিঠা খাওয়ার উৎসবে। গভীর রাতে হাঁড়ি থেকে চুরি করে রস খাওয়া অনেকের শৈশবের স্মৃতি অম্লান হয়ে আছে আজো। গ্রামীণ মেঠোপথ আর খেঁজুর গাছের সাঁরি আর গাছে রসের হাঁড়ি আজ আর দেখা মিলে না। দেখা মিলে না পাখি আর কীট-পতঙ্গের গাছে গাছে ঘুরে রস খাওয়ার দৃশ্য। বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ এই ঐতিহ্য খেঁজুর গাছ ও দেখা দিয়েছে রসের সংকট। যদিও নাগরিক কোলাহলে বর্তমান প্রজন্ম ভুলতে বসেছে সেই স্বাদ।
খেঁজুর গাছ বিলুপ্তির কারণ হিসেবে জানা গেছে, আগেরকার দিনে ইট ভাটায় (পুইন) জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হতো। বিভিন্ন কারণে খেঁজুর গাছ কর্তন, মরে যাওয়া, তদারকির অভাব এবং নতুন চারা রোপণ না করা। গাছ কমলেও কমেনি খেঁজুর রসের গ্রাহক সংখ্যা। কমেনি এর কদরও। রসের দাম বেড়েছে কয়েকগুন। ঐতিহ্যবাহী কিছু গাছের মধ্যে খেঁজুর গাছ ছিল অন্যতম। খেঁজুরের রস ও খেঁজুরের মিঠা (রাভ মিঠা) গন্ধে গ্রামীণ জনপদ মৌ মৌ করতো। শীত আসলেই গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়তো খেঁজুর গাছ রসের উপযোগী করতে পরিষ্কারের কাজে। এতে গাছিরা এই সময় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতেন। বিভিন্ন পিঠা, পুলি ও পায়েসসহ নানা প্রকার খাবার তৈরির জন্য খেঁজুরের রস ছিল অন্যতম উপাদান। এ জন্য গাছিদের চাহিদার কথা বলে রাখতে হতো। ফলে যাদের খেঁজুর গাছ ছিল না তারাও রস খাওয়া থেকে বঞ্চিত হতেন না। তখন শীতে আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করত। বিশেষ করে পৌষ-মাঘ শীত মৌসুম এলে গাছিদের আনন্দের সীমা থাকত না। খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য মহাব্যস্ত হয়ে পড়তেন তারা।
বর্তমানে খেঁজুর রসের চাহিদা অনেক বেশি। ১লিটার রস ৬০-৭০ টাকায় এবং প্রতি কেজি গুড় ৩০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাস্তার পাশে, জমির আইল, পরিত্যাক্ত জমিতে বিনা পরিচর্যায় যে কোন ধরনের মাটিতে এ প্রজাতির গাছ ভালো জন্মায়। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এই খেঁজুরগাছ আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে। আগের মতো গ্রামের রাস্তার দু’পাশে সারি সারি খেঁজুর গাছ আর নেই। যে হারে খেঁজুরগাছ নিধন হচ্ছে সে তুলনায় রোপণ হয় না। গ্রামের রাস্তা গুলো সংস্কার ও নতুন করে খেঁজুর গাছ রোপনে মানুষের আগ্রহের অভাবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেঁজুর গাছ ও খেঁজুরের রস ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। শীত মৌসুমে সকালে খেঁজুরের তাজা রস যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে শেষ করা যাবে না। কৃষি বিভাগ ও কখনো খেঁজুরের গাছ আবাদ নিয়ে কথা বলতে বা, কৃষি মেলায় খেঁজুরের গাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করার পরামর্শ দিতে দেখা যায় না।
গ্রামের মো. সেলিম মোল্লা, মো. জসীম উদ্দিন, মো. আলকাজ মোল্লা, আব্দুস ছালাম সহ কয়েকজন ব্যক্তি জানান, কয়েক বছর আগেও শীত মৌসুমে খেঁজুর রসের তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েসসহ সুস্বাদু নবান্নের খাবার দিয়ে উৎসাহ ও আনন্দের মধ্যে আমরা নবান্নকে বরণ করতাম। এখন আর খেঁজুর রস না পাওয়ায় নবান্নের আনন্দ থেকে বঞ্চিত। শীত মৌসুমে অতিথিদের রসের তৈরি পায়েশ দিয়ে আপ্যায়ণ করানোর প্রচলন এখন ভুলতেই বসেছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে খেঁজুর গাছের রস রূপ কথার কাহানী হয়েছে।
তারা আরও জানান, এখনও গ্রামে দু’একটি বাড়ির উঠানের আশপাশে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কিছু খেঁজুর গাছ। কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। আবার কেউ কেউ সকালে রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করতো। প্রতিবছর শীত মৌসুমে অযত্নে অবহেলায় পথে প্রান্তরে পড়ে থাকা খেঁজুর গাছের রস ও গুড় বিক্রি করে এ সময়ে বাড়তি আয় করতো।
গাছিয়া মো. বেল্লাল তালুকদার ও মো. মন্নান ত্বহার
সাথে কথা হলে তারা বলেন, তাদের পূর্ব পুরুষরা আগে খেঁজুর গাছ কাটতো। এখন তারা কাটে। আগের তুলনায় এখন অনেক গাছ কমে গেছে, রসও তেমন হয় না। বর্তমানে লবণ পানির জন্য মাটির লবণাক্ততায় খেঁজুর গাছ মারা যাচ্ছে। তাই গ্রাহকদের চাহিদা মতো রস সরবারহ করা যাচ্ছে না। আর যে হারে নিধন হচ্ছে তাতে একসময় হয়তো দক্ষিলাঞ্চলে খেঁজুর গাছ দেখাই যাবে না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেঁজুর গাছ ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। কারণ নতুন করে খেঁজুর গাছ রোপনে মানুষ আগ্রহী হচ্ছে না। তালগাছ রোপনের মত খেঁজুর গাছ রোপনে সরকারী-বেসরকারী প্রচারণা থাকলে খেঁজুর গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারত। না হলে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেঁজুর গাছের রস, হারিয়ে যাবে গ্রাম বাংলার আরো একটি ঐতিহ্য।
গাছিয়া মো. নাসির উদ্দীন ও মো. নূর হোসেন বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামগুলোতে আজ থেকে ২০ বছর আগেও গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণ রস সংগ্রহ হতো। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশি করে খেঁজুর রস আহরণ হতো। গাছের মাথায় একই স্থানে অনেকখানি বাকল তুলে সেখানে হাড়ি বেঁধে নালার (বাঁশের তৈরি) সাহায্যে এ রস সংগ্রহ করা হয়। বিকেলে হাড়ি রেখে যায় গাছিরা। আর প্রতিদিন ভোরে ঘন কুয়াশার মধ্যে গাছ থেকে রসে ভরা হাড়ি নামানো হয়। পুরো এলাকা তখন কাচা রসের গন্ধে মৌ-মৌ করে। এসময় বিভিন্ন ধরনের পাখিরা গাছে ভিড় করে রস খাওয়ার জন্য। আগে এসব রসের হাড়ি মান ভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে খেঁজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাই বর্তমানে অনেকেই আগাম রসের জন্য অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখেন। সেই টাকায় কেউ কেউ রস সংগ্রহের সরঞ্জাম ক্রয় করে এখন গাছ কাটায় ব্যস্ত। আবার এখন যেহেতু রসের চাহিদা বেশি তাই এর দামও বেশ ভালো পান। এখন হাড়ি ২০০-৩০০টায় বিক্রি হয়। তবে গাছ কমে যাওয়াটাই তাদের সংকট।
মো. জামাল হাওলাদার, মোসা. ডালিম বেগমসহ কয়েকজন রস গ্রাহক জানান, আগের তুলনায় বেশি টাকায়ও মিলছে না চাহিদামত রস। গ্রাম এখন শহুরে ছোঁয়া। শীতের পিঠা ও রসের গুড় এখন আর খাওয়া হয় না বললেই চলে। নতুন প্রজন্ম হয়তো খেঁজুর গাছ ও খেঁজুরের রসের কথা ভুলেই যাবে।
গুড় ব্যবসায়ী রতন দেবনাথ বলেন, একসময় শীতের মৌসুমে তিনি শতাধিক মণ গুড় উৎপাদন করতেন রস দিয়ে। কিন্তু বর্তমানে রস সংকটের কারণে এখন আর গুড় তৈরী করা সম্ভব না। তাই এখন গুড় ক্রয় করে তা বিক্রি করছি। আগের গুড়ে এখন আর বেশি দাম পাওয়া যাচ্ছেনা লাভ কম হয়। তাই এ পেশা বদলানোর কথা চিন্তা করছেন তিনি।
রাজাপুর উপজেলা হাসপাতালের ডা. ফারহান তানভীর তনু বলেন, খেঁজুরের রস মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শীতের দিনে সর্দি-কাশি সারাতে, এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দিতে খেঁজুরের রসের জুড়ি মেলা ভার। খেঁজুরের রসের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। খেঁজুরের রস থেকে প্রাণঘাতিক এনআইপিএএইচ (NIPAH) ভাইরাস ছড়ানো সম্ভাবনা থাকে। তাই শিশুদের খেঁজুর রস খাওয়ানো যাবে না। সেক্ষেত্রে মেনিনজাইটিস নামক মারাত্মক রোগ হতে পারে। যাতে মৃত্যুর হাড় ৮০%।
রাজাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসা. শাহিদা শারমিন আফরোজ বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেঁজুর গাছের রস। আমাদের এ অঞ্চলে রেইনট্রি ও চাম্পলসহ অন্যান্য বনজ গাছ বেশি রোপণ করায় এবং গরু-ছাগলের অবাধ বিচরণের কারণে দিনে দিনে খেঁজুর গাছ কমে যাচ্ছে। আগে শীত মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকেন গাছিরা। গাছিদের খেঁজুর গাছ পরিচর্যার কাজটি এক ধরনের শিল্প। এর জন্য দরকার হয় বিশেষ দক্ষতা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে শৈল্পিক কৌশল, দক্ষতা ও ধৈর্য। তবে দিন দিন কমে যাচ্ছে খেঁজুর গাছের সংখ্যা। বিভিন্ন কারণে খেঁজুর গাছ কর্তন, মরে যাওয়া, তদারকির অভাব এবং নতুন চারা রোপণ না করাই খেঁজুর গাছ বিলুপ্তির কারণ।
তিনি আরও বলেন, খেঁজুরের রস থেকে বিভিন্ন রকমের গুড় তৈরি করে থাকেন গাছিরা। খেঁজুর রস ও গুড়ের রয়েছে ব্যপক চাহিদা। তাই আমরা সবাইকে রাস্তার পাশে, পতিত জমিতে নতুন করে খেঁজুরের বীজ ও চারা রোপণের জন্য প্রায়ই সভা সেমিনারের মাধ্যেমে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে থাকি। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে চারা রোপনের কার্যক্রম নেয়া হয়।