154 বার পঠিত
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের নির্বিচার হত্যার প্রতিবাদ, মামলা প্রত্যাহার, দুর্নীতি প্রতিরোধ, গুম-আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও হল-ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার দাবিতে দেয়াললিখন ও গ্রাফিতি অঙ্কন কর্মসূচি শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকেল ৩টা থেকে ঝালকাঠি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ও ঝালকাঠি সরকারী হরচন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এ কর্মসূচি শুরু করা হয়। এ কর্মসূচীতে বিভিন্ন স্কুল কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব উদ্যোগে স্বেচ্ছাচারিতায় অংশ নেয়।
কলম ধরা হাতে রং তুলির আলপনায় প্রতিবাদের ভাষা ফুটিয়ে তুলেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকয়েকদিন ধরে নিজেদের সংগৃহীত টাকা দিয়ে রং তুলি কিনে তাঁরা গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সারা দেশে হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়কের মধ্যেও বিভিন্ন শ্লোগান লেখেন। সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী হরচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, সরকারী মহিলা কলেজ এবং সরকারী কলেজসহ সরকারী-বেসরকারী বাউন্ডারী দেয়াল বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি পড়ে নোংড়া হয়েছিলো। সেই দেয়াল পরিস্কার করে রং তুলির ছোয়ায় লেখার উপযোগী করা হয়।
এরপর প্রতিবাদী বিভিন্ন বাক্য লেখা হয়। বিভিন্ন রংয়ের মিশ্রণে প্রতিকী প্রতিবাদী বাক্যে উল্লেখ করা হয়, ‘আমি মুগ্ধ, পানি লাগবে কারো পানি পানি’ ‘দশতলা বাড়ি, সাত গাড়ী আর চারটি বউ, আপনার বেতন কত?’‘ছাত্র যদি ভয় পাইতো বন্দুকের গুলি, উর্দু থাকতো রাষ্ট্রভাষা, উর্দু থাকতো বুলি’, ‘দেশ স্বাধীন হলে আমরা আবার ছাদে উঠব’, ‘তুমি কে আমি কে, বিকল্প বিকল্প’, ‘লোহার টুপি মানুষের মগজ খায়’, ‘মেধা শহীদ’, ‘আমি মেট্রোরেল হতে চেয়েছিলাম, খোদা আমাকে ছাত্র বানালো’, ‘রক্ত দেখলে বাড়ছে সাহস’ প্রভৃতি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝালকাঠির সমন্বয়ক (পেশাজীবী) মীর এনামুল হোসেন বলেন, ‘আমরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন দেখিনি; একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতের গণহত্যা দেখিনি। কিন্তু এগুলো সব সময় আমাদের প্রতিবাদী চেতনার জন্ম দেয়। এবার আমরাও ইতিহাসের সাক্ষী হলাম। আমরা রক্তাক্ত জুলাই দেখেছি, চব্বিশ (২০২৪) দেখেছি। দেয়ালে, সড়কে গ্রাফিতির মাধ্যমে চব্বিশকে পৃথিবীব্যাপী জানিয়ে দিতে চাই।
এটিও আমাদের প্রতিবাদের ভাষা।’ দেয়াললিখন ও গ্রাফিতি অঙ্কন কর্মসূচিতে দেয়াল লিখছিলেন ঝালকাঠি সরকারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আল আমিন লিখছেন। জানতে চাইলে আল আমিন বলেন, ‘সরকারপন্থীরা আমাদের মেরে দমিয়ে রাখতে চাচ্ছে। আমরা এই লেখার মাধ্যমে বোঝাতে চাই, যতই মেরে ফেলা হোক আমাদের সাহস আরও দ্বিগুণ হবে।’ সে আরো জানায়, ‘১৮ জুলাই থেকে আমাদের ওপর যে গণহত্যা চালানো হয়েছে, অনেককে প্রতিবন্ধী করা হয়েছে। নিহত আবু সাঈদের বোনের ভাষাসহ বিভিন্ন প্রতিবাদী ভাষাকে আমরা দেয়াললিখন ও গ্রাফিতিতে তুলে ধরছি।’