86 বার পঠিত
বিভিন্ন সময় ভুয়া র্যাব সদস্য পরিচয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও এবার ছিনতাইয়ে জড়িয়েছেন র্যাবের আসল এক সদস্য। গভীর রাতে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে ফিল্মি কায়দায় ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে ওই র্যাব সদস্যসহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শনিবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বনানী থানা-পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত মধ্য রাতে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত র্যাব সদস্যের নাম আল মোমেন (২৬)। তিনি র্যাব-১ এ কর্মরত আছেন। গ্রেপ্তারকৃত অপর দুজন হলেন, আরিয়ান আহমেদ জয় ও মো. ফরহাদ হোসেন (২২)। এদের মধ্যে ফরহাদ ভুক্তভোগীদের ভাড়ার প্রাইভেটকারটির চালক। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল, একটি স্টিলের তৈরি হ্যান্ডকাপ, একটি ট্রাফিক সিগনাল লাইট, একটি কালো রঙের র্যাবের জ্যাকেট ও একটি গোল্ডেন কালারের প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বনানী থানার ওসি নুরে আজম মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ছিনতাইয়ের অভিযোগে একজন হাতে নাতে ও পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন র্যাব সদস্য রয়েছেন। তাকে আমরা র্যাবের কাছে হস্তান্তর করেছি।
তিনি আরও বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগী শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
গ্রেপ্তার আল মোমেন র্যাব সদস্য নিশ্চিত করে র্যাব-১ এর এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আল মোমেনের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি র্যাব সদর দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে।’
বনানী থানা সূত্র বলছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিষয়ে অনুসন্ধানকালে জানা যায়, আল মোমেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক। তিনি বর্তমানে প্রেষণে র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকায় কর্মরত আছেন, তার সৈনিক নম্বর-১০০৭৫৪৩। আল মোমেনকে সামরিক আদালতে বিচার তথা কোর্ট মার্শাল করার নিমিত্তে থানা-পুলিশের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সংস্থায় হস্তান্তর করা হবে।
বনানী থানায় ভুক্তভোগী মো. শহীদুল ইসলামের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের সিংগাইর থেকে শহীদুল ইসলাম তার ভাগ্নে মো. রিয়াজকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার রাতে একটি ভাড়ার প্রাইভেটকারে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। সেখানে তার বিদেশ ফেরত এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করেন। রাত পৌনে একটার দিকে ওই প্রাইভেটকারেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন তারা। বনানী থানাধীন আমতলী ট্রাফিক বক্সের ওপর বরাবর মহাখালী ফ্লাইওভারে ওপর রাত সোয়া ২টার দিকে আকস্মিকভাবে একটি প্রাইভেটকার তাদের প্রাইভেটকারকে ব্যারিকেড দিয়ে গতিরোধ করে। ওই প্রাইভেটকার থেকে ৩ জন ব্যক্তি নেমে তাদের প্রাইভেটকারের নিকট এসে পিস্তল দেখিয়ে আমাদের সঙ্গে থাকা সকল মালামাল নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন স্থানীয় লোকজন আরিয়ান আহমেদ জয় নামে একজনকে আটক করে অপর আসামিরা তাদের প্রাইভেটকার নিয়ে পালিয়ে যায়।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিলে বনানী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আরিয়ান আহমেদ জয়কে হেফাজতে নেয়। পরে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, তার সহযোগীদের নাম আল মোমেন, মো. ফরহাদ হোসেন ও জালাল। বনানী থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে আল মোমেন ও ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী শহীদুল ইসলামের ভাগনে মো. রিয়াজ দেশ রূপান্তরকে জানান, ছিনতাইকালে তাদের মারধর করা হয়েছে। এতে তার মামা শহীদুল গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। শহীদুল এক সময় সৌদি আরবে থাকতেন। বর্তমানে বিমানের টিকিট বিক্রি করেন। সিংগাইরে বাসতি বাজারে তার অফিসও রয়েছে।