কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি>স্টিল-মেলামাইন প্লাস্টিকের তৈজস পত্রের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল,সিলভারের হাড়ি,পাতিল, টিনের তৈরি বালতি,হারিকেন,ল্যাম্প(কুপি),,ড্রাম। সেই সাথে হারিয়ে যাচ্ছে পুরনো তৈজসপত্র মেরামতের ঠাঠারী কারিগররা।আধুনিকতার ছোঁয়ায় ক্ষুদ্র ঠাঠারী শিল্পটিও আজ বিলুপ্তপ্রায়। এ শিল্পের তৈজস পত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে হরেক রকম কোম্পানির নান্দনিক সব তৈজসপত্র ।এক সময় কামার শিল্পের আদলে গড়ে উঠা পুরনো তৈজসপত্র মেরামতের কারিগরদের কদর ছিল ব্যাপক।
এসব কারিগররা গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে রাস্তার মোড়ে বসে ভাতির হাওয়া, হাতে লম্বা লোহার সিজার (কাচি), সিসার আং পাইন, আর টুংটাং শব্দে জেড়াতালি দিয়ে মেরামত করত পুরনো হাড়ি,পাতিল,ঢাকনা, বালতি,জগ। এ পেশায় সম্পৃক্ত থেকে অনেকেই সংসারও চালাত। এখন নিপুণ হাতের কারিগররা রোজগার জীবনের রসদ খুঁজে না পাওয়ায় অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।
কদাচিৎ দেখা মিললেও এর মধ্যে এ কারিগরের দেখা মেলে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা শহরের হাটে। কারিগর সিরাজুল সদর ইউপি’র মুশা হাজি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জানান, একটা সময় গৃহস্থলী পরিবারের পুরনো জিনিষপত্র যেমন-হারিকেন,ল্যাম্প(কুপি),জগ,বালতি,ড্রামের ভাঙ্গা ফুটো (ছিদ্র) মেরামতের কাজ ছিল প্রচুর।
হাট- বাজারসহ গ্রামে গ্রামে ঘুরে এ সব মেরামত করা হত। তখন আয় রোজগারও ভাল ছিল।সে দিন আজ শুধুই স্মৃতি।সময়ের ব্যবধানে মানুষের রুচির পরিবর্তন আসায় মুলতঃ প্লাষ্টিকসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের রাইস কুকার,কারিকুকার ও বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবহার এসে এ পেশার ধ্বস নেমেছে। অন্য কাজ জানা না থাকায়, বাধ্য হয়ে ৪০ বছর ধরে কোন রকমে এ পেশায় চলে জীবিকা।
কিশোরগঞ্জ হাটে পুরনো বালতি মেরামত করতে আসা মোখলেছার রহমান জানান,আর আগের মত এদের পেশা নেই।সবাই এখন প্লাষ্টিক সামগ্রি ব্যবহারে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে। একসময় গ্রাম-গঞ্জে এসব কারিগরদের বিচরণও ছিল চোখে পড়ার মত। এখন আর তেমন চোখে পড়েনা।