166 বার পঠিত
কিশোরগঞ্জ নীলফামারী প্রতিনিধি>গ্রাম-বাংলার গ্রীষ্ম মৌসুমের অন্যতম জনপ্রিয় পুষ্টি সমৃদ্ধ রসালো ও জাতীয় ফল কাঁঠাল।এ ফলটির সুমিষ্টি ঘ্রাণে মাতোয়ারা করে তুলেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র।শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি গাছের বুকচিড়ে গোড়া থেকে মগডাল পর্যন্ত থোকায় থোকায় ঝুলছে রসালো ফল কাঁঠাল।
সরেজমিনে দেখা যায়,বিভিন্ন সরকারি,বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান,সড়কের ধারে,পুকুরপাড়ে,বসত বাড়ির আনাচে-কানাচে রোপিত গাছে কাঁঠালে কাঁঠালে ভরে উঠেছে।এ যেন প্রকৃতির দেয়া অপরুপ সৃষ্টি।অনুক’ল আবহাওয়ায় এবার কাঁঠালের ভাল ফলনের আশা করছেন গাছ ও বাগান মালিকরা।যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাহলে কাঁঠাল উৎপাদনে নিরব বিপ্লব ঘটবে বলে তারা জানান।ইতিমধ্যে পাকা কাঁঠাল গাছ থেকে না নামলেও আগামি ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বাজারে চলে আসবে এমনটাই জানান,ব্যাবসায়ীরা।
কাঁঠাল পাকার পর এর সুমিষ্টি গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠবে চারদিক।এর স্বাদ নিতে গাছে গাছে ভিড় বেড়ে যাবে নানা পাখপাখালি ও মধু পিয়াসি কীট পতঙ্গের।কদিন বাদে বিদায় নিচ্ছে বৈশাখ।
সমাগত হচ্ছে রসে টুইটম্বুর মধুমাস জ্যৈষ্ঠ।জ্যৈষ্ঠের পাকা কাঁঠালে ভরে উঠবে প্রতিটি কৃষকের আঙ্গিনা ও হাট-বাজার।ছোট বড় সকলেই মেতে উঠবে কাঁঠাল খাওয়ার প্রতিযোগীতায়।তবে এটি শুধু ফল নয়,সবজিও বটে।তরকারি হিসেবে প্রোটিন সমৃদ্ধ কাঁচা কাঁঠাল এবং বিচি মাংস,সবজির সাথে রান্নাসহ বিশেষ করে বিচি পুড়িয়ে বা ভেজে শুটকির সংমিশ্রণে ভর্তা বাঙ্গালীর ঐতিহ্যপূর্ণ মুখরোচক ও ঢেকুর তোলা খাবার।
তাছাড়াও কাঁঠালের উচ্ছিষ্টাংশ এবং পাতা গবাদি পশুর উৎকৃষ্ট খাবার।পুরনো গাছের কাঁঠালি রঙয়ের আসবাবপত্র বাজারে সোনার মত দামি।এতে কাঁঠালের কোন অংশই পরিত্যক্ত থাকেনা।
আছে রোগ নিরাময়ের নানা ভেষজগুন।চিকিৎসকের মতে পাকা কাঁঠালে আন্টিঅকিডেন্ট ভিটামিন-সি,ভিটামিন-বি,ভিটামিন-ই ক্যালসিয়াম ফলিক এ্যাসিড রয়েছে।আছে পটাসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের একটি ভাল উৎস।পটাসিয়াম থাকায় হার্টের গতি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।পাকা কাঁঠালে প্রচুর পরিমানে আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে
বাহাগিলী ইউপির উত্তর দুরাকুটি পশ্চিম পাড়া গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন,শুরু থেকে আবহাওয়া ভাল থাকায় এ বছর এলাকার প্রায়গাছে প্রচুর কাঁঠাল এসেছে।তার ছোট-বড় মিলে ১০টি গাছ রয়েছে।বড় গাছে ২০০থেকে৩০০টি,ছোট গাছে ৮০থেকে ১০০টির মত কাঁঠাল ধরে পরিপক্ক হয়েছে।
আর কিছু দিন গেলে পাকা কাঁঠাল নামতে শুরু করবে।এ কাঁঠাল নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশী ও আতœীয় স্বজনের বাড়িতে উপহার পাঠানো হয়।বাড়তি কাঁঠাল বিক্রি করে সংসারে আয়ও হয়।বড়ভিটা ইউপির মেলাবর গ্রামের মোজাফফর সুপার বলেন,এঅঞ্চলের কাঁঠাল গাছে প্রাকৃতিক নিয়মে পাকে।পরিচর্যা ছাড়া কোন কীটনাশক,ফরমালিন প্রয়োগ করেনা।
যা এর চাহিদা দেশজুড়ে।উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম বলেন,এ অঞ্চলের মাটি সমতল ও বেঁলে দো-আঁশ হওয়ায় কাঁঠাল চাষে খুবেই উপযোগী।আবহাওয়া আনুক’লে থাকায় বিগত বছরের তুলনায় ছোট-বড় সব গাছে নজর কাড়া কাঁঠাল এসেছে।রোগ নিরাময়ে মাঠপর্যায়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
উৎপাদিত কাঁঠাল স্থানীয় পুষ্টির চাহিদা পুরনের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে রপ্তানি করে গাছ মালিক ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।