173 বার পঠিত
শীতের পিঠা বাঙালির ঐতিহ্য।আর শীতের পিঠার মধ্যে ভাপা পিঠা একটি অন্যতম পিঠা।এটি বাঙালি জাতির রসনা ও রুচিরও প্রতীক।বিশেষ করে গ্রামীণ জীবনে এনে দেয় উৎসবের আমেজ তা যেন আবহমান কাল থেকে।কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া আর নানা ব্যস্ততায় পারিবারিক ও সমাজ জীবন থেকে পিঠা তৈরির আয়োজন (উৎসব)কমে যাচ্ছে।
তবে জীবিকার তাগিদে এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন হতদরিদ্র পরিবারের নারী-পুরুষ মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা।স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগে পিঠা বিক্রি করে তারা রোজগার জীবনে দেখছেন ভাল আয়ের মুখ।এজন্য শহর-পল্লীবাসির নারীরা পিঠার ধান শুকানো,মেশিনে,ঢেঁকিতে চাল কাড়া,আটা ভাঙ্গা,পিঠার স্বাদ বাড়াতে হরেক পদের মসল্লা তৈরি ও বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।সকালের কুয়াশা আর সন্ধার হিমের বাতাসে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে জমে উঠেছে পিঠা বিক্রি।উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় শীত নামার সঙ্গে বিক্রেতারা ভাপা,চিতই,তেলে ভাজা পিঠার পসরা সাজিয়ে বসে।
শহরের অলিতে গলিতে,বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ও পাড়া মহল্লায় বসে ভ্রাম্যমান পিঠার দোকান।এসব দোকানে ভোর থেকে সকাল ৯ টা ও বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভিড় জমায় সকল শ্রেণি পেশার পিঠা প্রেমিক মানুষ।আবার অনেক ব্যবসায়ী সাত সকালে গরম গরম ভাপা পিঠা নিয়ে শহর-গ্রামের বাসা-বাড়িতে হাজির হন।
এসব বাসিন্দারা হাতের নাগালে গরমাগরম শীতের পিঠা পেয়ে সারছেন সকালের নাস্তা।সরেজমিনে দেখা গেছে,শহরের ঝর্নার মোড়,মাংস বাজার,রাজিব বড় ব্রিজ সংলগ্ন,গাড়াগ্রাম আহেলার ষ্ট্যান্ড,মাগুড়া বাস ষ্ট্যান্ড ,লেবু মিয়ার বাস ষ্ট্যান্ড,বড়ভিটা বাজার,পুটিমারি তেমালের তল,দুরাকুটি নান্নুর বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য ভ্রাম্যমান পিঠার দোকান।এদের মধ্যে বেশি ভাগই শীত আসলে হরেক পদের পিঠা নিয়ে রাস্তার পাশে বসে।পুরো শীত জুড়ে চলে এ ব্যবসা।
পিঠা বিক্রেতাদের অধিকাংশ হতদরিদ্র পরিবারের নারী।সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে বাড়তি আয়ের আশায় ফুটপাতে পিঠা তৈরি করছে তারা।আবার সংসারে উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় পিঠা তৈরি করে সংসার চালাচ্ছেন অনেকেই।শহরের মাংস বাজারে পিঠা বিক্রেতা আহিমা বেগম(৬০)জানান,স্বামী বয়সের ভারে এখন জড়োসড়ো।দুই ছেলে বিয়ে করে বেগল (আলাদা) অন্নে খায়।সংসারে আয় রোজগারে কেউ নেই।
২০বছর ধরে রাস্তার পাশে গরমে চিতই ও শীতে ভাপা পিঠা বিক্রি করে সংসার চালান।প্রতিদিন ৮-১০কেজির আটার পিঠা বিক্রি করে জ্বালানি খরচ বাদে আয় হয় ৪০০-৫০০ টাকা।যা দিয়ে মোটামুটি সংসার খরচ চলে যায়।নান্নুর বাজারের জোসনা বেগম জানান,শীতের শুরু থেকে পিঠার দোকানে ভিড় জমে।বিক্রিও খুব ভাল।অনেক সময় ক্রেতার চাহিদা মেটানো যায়না।
চিতই,তেলে ভাজা,ভাপা পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি হয়।ভাপা পিঠা মুখরোচক করতে ঝুড় ঝুড়ে খেজুরের গুড়,নারিকেল দিয়ে বানানো হয়।চিতই পিঠার স্বাদ বাড়াতে সর্ষে বাটা,ধনে পাতার ভর্তা,শুটকি ভর্তা। কাঁচা ও শুকনো মরিচের ঝাল দোকানে রাখা হয়।শীত কালিন পিঠা বিক্রি করে ভাল আয় হচ্ছে।
মাংস বাজারে পিঠা খেতে আসা আক্কাস আলী বাচ্চাবাউ বলেন,এখন সাংসারিক কাজে পরিবারে সবাই ব্যস্ত।এতে বাড়িতে নারীরা পিঠা তৈরির সুযোগ পাননা।এজন্য রাস্তার মোড়ের দোকান থেকে রোজ দিন পিঠা কিনে খাই সাথে পরিবারে জন্য বাড়িতে নিয়ে যাই।কিশোরগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন শহীদ সরোওয়ার্দী গ্রেনেট বাবু বলেন,শীতকাল এলে মৌসুমি পিঠা ব্যবসায়ীরা হরেক পদের পিঠা বিক্রি করে।এ ব্যবসার সাথে জড়িতরা নি¤œ আয়ের মানুষ স্বল্প পুজি দিয়ে ভাল আয়-রোজগার করে শীত মেীসুমে।