147 বার পঠিত
সিন্ডিকেটের কব্জায় আলুর বাজারে চরম নৈরাজ্য চলছে।এতে ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে আলু।এ নাভিশ্বাস বাজার থেকে মুক্তিমেলাতে ও লাভের আশায় নীলফামারীর কিশোগঞ্জ উপজেলার কৃষকেরা তাদের ঐতিহ্যগত স¦ল্প মেয়াদি ৫০থেকে ৫৫ দিনের সেভেন জাতের আগাম আলু বাজারে উপহার দেয়ার জন্য মাঠে মাঠে তোড়জোর শুরু করে দিয়েছেন।
এজন্য তারা নাওয়া-খাওয়া ভুলে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিরামহীনভাবে আলুর ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।কেউবা সেচ দিচ্ছেন।কেউ নিড়ানি দিচ্ছেন।আবার অনেকে কীটনাশক ছিটানোসহ টপড্রেসিং(আলুর সারিতে কোদাল দিয়ে মাটি তুলে দিচ্ছেন।এমন নিবিড় পরিচর্যায় বিস্তীর্ণ মাঠগুলোর ক্ষেত গাঢ় সবুজের বর্ণিলতায় ভরে উঠেছে।
অনুক’ল আবহাওয়ায় আর সবুজের হাতছানিতে আলুর বাম্পার ফলন হবে এমন আশা কৃষকের।কৃষকের তথ্যমতে,উঁচু সমতল ভ’মিতে আগাম আলু চাষাবাদ করতে গিয়ে আশ্বিনা বৈরি আবহাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয় তাদেরকে।সেই ক্ষত কাটিয়ে নতুন উদ্দোমে শুরু করেন আলুর চাষ।এরই মধ্যে অনেক কৃষকের ৩০দিন আগে (সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে)বুননকৃত আলু ২০থেকে ২৫দিনের মধ্যে বাজারে উপহার দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রোববার সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,দিগন্ত ভরা আগাম আলু ক্ষেত গাঢ় সবুজের পাতায় দোল খাচ্ছে বাতাসে। এ অপার দুলোনিতে বাম্পার ফলনে অধিক লাভের স্বপ্ন বুনছেন চাষি। এময় জানা যায়,বাহাগিলী ইউপির উত্তর দুরাকুটি গ্রামের চাষি ফেরদৌস ৬বিঘা,একই গ্রামের ভাইস চেয়ারম্যান পাড়ার আনোয়ারুল ইসলাম ৩০বিঘা আশ্বিনের শুরুতের বীজ বুনেন।তারা বলেন,প্রতিবার আগাম আলু চাষ করে অধিক মূনাফা ঘরে তোলা যায়।
কিন্তু এবার আলুর বাজারের তেলেশমাতি,দুই দফা আশ্বিনা বন্যার ক্ষত, অন্য দিকে দাম বেড়েছে রাসায়নিক সার,কীটনাশক,জ্বালানি তেল,শ্রমিক মজুরী ও হালচাষের।এতে সব কিছু মিলে আদাজল খেয়ে আলু চাষে মাঠে নেমেছি।সব ধকল কাটিয়ে শীত আর আনুক’ল আবহাওয়ায় আলুর ভাল ফলন ও দাম দুটোয় আশা করা হচ্ছে ।রনচন্ডি ইঊপির কুটিপাড়া গ্রামের আব্দুল হাই বলেন,এবার আলু চাষাবাদ করতে গিয়ে পদে পদে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।
একদিকে চড়া দামে কিনতে হয়েছে আলুর বীজ,সে বীজ বৃষ্টিতে পচে যাওয়ায় দ্বিতীয়বার ৩ বিঘা জমিতে আলু লাগাতে খরচ হয়েছে দিগুন।অন্য দিকে সব ধরনের কৃষি পণ্যর দামও বেড়েছে।এতে সব মিলে প্রতি বিঘায় শেষ পর্যন্ত উৎপাদন খরচ দ্বাড়াবে ৫০হাজার টাকার উপরে।বর্তমান আবহাওয়া অনুক’ল থাকায় আলুর বাম্পার ফলন ও ভাল দামের আশা করা যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, চলতি বছর ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।অনুক’ল আবহাওয়ায় আগাম আলুর বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে। চড়া দাম পেয়ে কৃষকেরা লাভবান হবেন।আলু ঊৎপাদনে মাঠপর্যায়ে কৃষককে সার্বিকভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।