88 বার পঠিত
কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃনীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ৯টি ইউনিয়নের কৃষক তাদের উঁচু সমতলভ’মিগুলোরএক ইঞ্চি জমি পতিত রাখেননি।এসব জমিতে ভ’ট্টা আগাম আলুর মধ্যেবর্তী সময়ে বাড়তি ও লাভজনক আবাদ হিসেবে চাষাবাদ করেছেন স্বল্পমেয়াদি আগাম জাতের আমন ধান।চারা রোপনের শুরু থেকে অনুক’ল আবহাওয়া,যথা সময়ে ভারী থেকে হালকা বৃষ্টিপাত হওয়ায় বিগত ফলন ছাড়িয়েছে লক্ষ্যমাত্রা।
আর কৃষকের দিগন্ত ভরা মাঠে মাঠে ছড়িয়ে পড়েছে আগাম ধানের স্বর্ণালি হাসি।অগ্রহায়ণ নয়,নিষ্ফলা আশ্বিনে মঙ্গাজয়ী আগুর জাতের নতুন ধানের বাম্পার ফলন ও ভাল বাজার মূল্যে পেয়ে হাজারো কৃষক পরিবারে এনেছে সমৃদ্ধির হাসি।ধানের পাশাপাশি গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় হাট-বাজারে চলছে কাঁচা খড়ের রমরমা ব্যবসা।চাহিদা থাকায় কৃষকের মাঠে মাঠে ধানের কাঁচা খড় কেনার জন্য মৌসুমী খড় ব্যবসায়ীরা হুমরি পড়েছে।
কাটা-মাড়াই শেষে তারা খড় কিনে বাজারে বিক্রি করে ভাল লাভবান হচ্ছেন।অপর দিকে কৃষক মাঠের খড় মাঠে বিক্রি করে অনেকটাই তুলছেন চাষের খরচ।এমনটাই জানা তারা।উপজেলার প্রতিটি গ্রামে আগাম নবান্নের উৎসবের মাতোয়ারায় আগাম আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে।ধানকাটার পর ওই জমিতে আগাম আলুসহ শীতকালিন রকমারী রবিশস্য চাষে চলছে ব্যাপক প্রস্ততি।
আগামি সপ্তাহের মধ্যে আগাম আলু রোপণ করবেন চাষি।এজন্য মাঠে মাঠে কৃষাণ,কৃষাণি আর ক্ষেত মজুরের এত ব্যস্ততা যেন দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের।কৃষি প্রণোদনার উচ্চ ফলনশীল,কমসময়ে উৎপাদিত খরাসহিষ্ণু ব্রি-৭১,৭৫,৮৭,৯৪,৯৮ সহ হাইব্রিড, চায়না জাতের ধানের ভাল ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হচ্ছেন।
বাজারে ধানের দামের সাথে খড়ের উচ্চ মুল্য পেয়ে ক্ষুদ্র-প্রান্তিক কৃষক বাড়তি আয়ের মুখ দেখছেন।এ বাড়তি আয়ে আলূসহ অন্যান্য রবি ফসল চাষে খরচ মেটাচ্ছেন চাষি।দুঃসময়ে কৃষকের ঘরে ধান ওঠায় ধান ও চালের বাজার দ্রুত স্থিতিশীল হচ্ছে।
এতে কৃষক,ক্ষেতমজুর,গবাদিপশুপালনকারী,ধান,চাল ব্যবসায়িদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।ক্ষেত মজুরের হাতে কাজ আর কাজ। চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধাণ করা হয়েছে। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,কৃষক হাতে কাস্তে শ্রমিক নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছে।জমিতে পলিথিন,নেট ,পাতিয়ে সারছেন ধান মাড়াইয়ের কাজ ।
এ সময় উত্তর দুরাকুটি পশ্চিম পাড়া গ্রামের চাষী আনারুল জানান, এ বছর ৪ বিঘা জমিতে চায়না জাতের ধান চাষ করেছেন।বিঘায় ফলন হচ্ছে ২০/২৫মন।প্রতিমন ধানবিক্রি করছেন ৮শ টাকার উপরে।প্রতি বিঘা জমির খড় বিক্রি হচ্ছে ৪হাজার টাকা।যা ধান ও খড় বিক্রি করে ভাল লাভবান হচ্ছেন তিনি।রনচন্ডি কুটিপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই ৩ বিঘা,পুটিমারী ভেড়ভেড়ি গ্রামের আব্দুল জলিল ৬ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন।
তারা বলেন,এক সময় আগাম আলু চাষের জন্য জমি ফেলে রাখা হত। এখন স্বল্প জীবনকাল আগাম জাতের চায়না ও হাইব্রিড ধান আসায় জমি ফেলে রাখা হয়না । ভ’ট্টা ও ধানের পর আগাম আলু চাষ করলে আলুর ফলন ভাল হয়,দামও পাওয়া যায় চড়া।
এ ধান যেন মঙ্গা জয়ের এক আর্শিবাদ।অপদিকে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি পাওয়ায এ জমিগুলোতে বছরে আগাম-নাভি আলু,ভ’ট্টা,ধানসহ চার ফসল উৎপাদন হচ্ছে।উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম জানান,ঐতিহ্যময় এ উপজেলায় ধানসহ আগাম আলু চাষে রোলমডেল।আগাম ধান চাষ করে কৃষক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি অগ্রিম ফসল ঘরে উঠায় খাদ্যনিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধান কাটার পর যথা সময়ে আগাম আলু চাষ করে কৃষক অধিক লাভবান হন।এতে ধান চাষে দিন দিন কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে।