79 বার পঠিত
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দুই সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় কবি নজরুল সরকারি কলেজের চার ছাত্রলীগ কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বহিষ্কৃতরা ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন: শেখ সুমন, তানজিদ হোসেন বাবু, রাতুল হোসেন ও তামিম মোল্লা। সাময়িক বহিস্কার কর্মীদের বিরুদ্ধে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার উপযুক্ত কারণসহ লিখিত জবাব উল্লেখিত ব্যক্তিদের আগামী ৭ দিনের মধ্যে ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জমা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল (বুধবার) রাতে বহিষ্কারাদেশের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, গত ৩ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ সুমন (কর্মী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা), তানজিদ হোসেন বাবু (কর্মী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা), রাতুল হোসেন (কর্মী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা) ও তামিম মোল্লা (কর্মী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা) কে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।
আরও বলা হয়েছে, সাময়িক বহিস্কার কর্মীদের বিরুদ্ধে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার উপযুক্ত কারণসহ লিখিত জবাব উল্লেখিত ব্যক্তিদের আগামী ৭ দিনের মধ্যে ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জমা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে। ঢাকা ওয়েভের প্রতিবেদক ও কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক শীতাংশু ভৌমিক অংকুর ছবি তুলতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার ফোন কেড়ে নেয়। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর তাকে মারধর শুরু করে। এসময় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস এর প্রতিনিধি ও সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য পার্থ সাহা এগিয়ে গেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। এরপর কলেজ মসজিদের সামনে শীতাংশুকে দ্বিতীয় দফায় আবার মারধর করে ছাত্রলীগের ১০ থেকে ১৫ কর্মী।
সাময়িক বহিস্কারের ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক হাসান শুভ বলেন, সাংবাদিক মারধরের মতো এমন একটি অমানবিক ও ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডে সাময়িক বহিস্কার একেবারেই লঘু শাস্তি। এদের সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা উচিত ছিল। তাছাড়া অভিযুক্ত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। স্বজনপ্রীতি করে কয়েক জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
মারধরের ঘটনায় অন্যতম দুই অভিযুক্ত কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী মেহেদী হাসান পলাশ ও কলেজ ছাত্রলীগের ব্যবস্থাপনা বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম তাজের বিরুদ্ধে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এবিষয়ে মারধরের শিকার শিতাংশু ভৌমিক অংকুর বলেন, প্রথমত বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ। দেরিতে হলেও এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো যাদের নেতৃত্বে আমাকে মারধর করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে অথচ কলেজ প্রশাসন মারধরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আমি যে হাসপাতালের বিছানায় পড়ে ছিলাম কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার সাথে যোগাযোগও করেনি। আমার পক্ষ থেকে সাংবাদিক সমিতির বড় ভাইয়েরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে আরো এক সপ্তাহ আগে। ঘটনার এতোদিন পার হওয়ার পরেও অধ্যক্ষ বা কলেজ প্রশাসনের কেউ আমার খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি।