34 বার পঠিত
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক স্পেন প্রবাসী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। সোমবার দুপুরে জেলার রায়পুর উপজেলার ২নং উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের মালেক খাঁ ব্রীজ এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত সাইজ উদ্দিন দেওয়ান (৩৮) স্থানীয় চরগাসিয়া গ্রামের মৃত. নুরু দেওয়ানের ছোট ছেলে তিনি স্পেন প্রবাসী ছিলেন। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়রা জানান, চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজের সঙ্গে উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব শামীম গাজী গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে চর দখল ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সোমবার দুপুরে স্থানীয় মালেক খাঁ ব্রীজ এলাকায় ফারুক কবিরাজ ও শামীম গাজীর লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় ফারুক কবিরাজের লোকজন স্পেন প্রবাসী সাইজ উদ্দিন দেওয়ানকে কুপিয়ে জখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইজ উদ্দিন দেওয়ানকে জেলা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চরবংশী ইউনিয়নে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। একজন নিহত হয়েছেন, অনেকে আহত হন।’
এর আগে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর বিএনপির এই দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। তখনও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছিলেন। এ ঘটনার পর উপজেলা বিএনপি উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের সব কমিটি বিলুপ্ত করেছিল। পরে জরুরি বৈঠক ডেকে তদন্ত কমিটিও গঠন করে। ওই কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল ইসলাম মিঠু ও সদস্য শফিকুর রহমান ভূঁইয়া।
উপজেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব শামীম গাজী বলেন, ‘ফারুক কবিরাজের নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। হামলায় ফারুক কবিরাজের লোকজন জড়িত।’
তবে ফারুক কবিরাজ বলেন, ‘শামীম গাজীর নেতৃত্বে এলাকায় দখল ও চাঁদাবাজি চলছে। আমার অনুসারীরা তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ হয়। শামীমের লোকজন দফায় দফায় অস্ত্র নিয়ে বাজারে প্রকাশ্যে মহড়া দিয়েছে। ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। আজকের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অনেকে আহত হন।’
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ সালাহ আহমেদ জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’