344 বার পঠিত
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন বড়ছড়া-বুরুঙ্গাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার রোকসানা আক্তার চৌধুরীর বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে ও সঠিক টাইমে স্কুলে না আসার কারণে ও তার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকগন। সমাজ বিরোধী ও উশৃংখল বড়ছড়া-বুরুঙ্গাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা আক্তার চৌধুরীকে আমরা এলাকাবাসী চাই এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আজ (৩০ অক্টোবর শনিবার) ১০ টার সময় বড়ছড়া এলাকাবাসীর আয়োজনে বড়ছড়া-বুরুঙ্গাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গেইটের সম্মুখ রাস্তায় প্রায় সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ছাত্রছাত্রীর অভিভাবক ও এলাকাবাসী প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে।
এ সময় মানববন্ধনে উপস্থিত বড়ছড়া গ্রামের মোঃ খলিলুর রহমান খান অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা আক্তার এই স্কুলে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে কোন দিনেই সঠিক টাইমে স্কুলে আসেন না। শুধু তাই নয়! স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ওই শিক্ষিকা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে অতিরিক্ত টাকাও আদায় করেন। এমনকি তিনি ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকগন স্কুলে আসে কোনকিছু জানতে চাইলে তাদের সাথে অশালীন আচরণ করে থাকেন। তাই আমার এই শিক্ষিকার অপসারণ চাই।
এই স্কুলের ছাত্রী অভিভাবক জুবেদা খাতুন(৬২) বলেন, আমার নাতি ৩য় শ্রেণীতে পড়ে। এই সুবাদে আমি বিভিন্ন সময় স্কুলে আসি। কিন্তু কোনদিনেই প্রধান স্যারকে দেখিনাই। আজ ৩ বছর হইছে এই স্যারকেই আমরা চিনিনা।
ছাত্রী অভিভাবক বড়ছড়া গ্রামের মরিয়ম বেগম (৩৪) বলেন, আমার এই স্কুলের পড়ে। আমার মেয়েরা জানায় এই মেডাম মাসের পর মাস স্কুলের আয়না। আর যদিও আসেন ১১ টার পরে আসেন। এসেই ছাত্রছাত্রীদের মারধর করেন। এবং মেয়ে আড়ি আইসা কয়দিন পর পরেই বলে প্রধান মেডামে কইছে কাল ৫০ টাকা দেয়া লাগবো, ওমুক দিন ২০ টাকা দেয়া লাগবো। আমরা গরিব মানুষ এতো টাকা দিমু কইতাইকা। আমার দুই মেয়ে স্কুলে পড়ে এর পরে আমরা গরিব হয়েও কোন সময় কোন টাকা পাই না। ছাত্রী অভিভাবক সালমা বেগম (৪৫) বলেন, মেয়ে ৩ য় শ্রেণির পড়ে। কিন্তু মেয়ে বই আনতে আমারে ৩/৪ মাস স্কুলে হাফডাউন করছি। পরে বলেন টাকা দিলে বই দিবেন। পরে ১০০ টাকা দিয়ে বই আনছি।
উল্লেখ্য: বিগত ২০১৮ সালের জুন মাসের ২৯ তারিখ রোকসানা আক্তার চৌধুরী তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বড়ছড়া-বুরুঙ্গাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করবেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই সরকারি নিয়মিত অনুয়ায়ী সকল ৯ টায় স্কুলে আসার কথা থাকলেও তিনি থা না মেনে স্কুলে আসেন কোন দিন সকাল ১১ টা আবার কোনদিন দুপুর ১২ টার সময় অভিযান এলাকাবাসীর।
পরে প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা আক্তার চৌধুরী এইরূপ নিজের মনগড়া নিয়ম সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিগত ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল মাসে বড়ছড়া-বুরুঙ্গাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী অভিভাবক ইম্মানুয়েল বিশ্বাস প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা আক্তার চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ভর্তি ফ্রি, সমাপনী ছাড়পত্র ও অতিরিক্ত পরীক্ষার ফ্রি নেয়ার অভিযোগে তাহিরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা আক্তার ২০১৮ সালের সমাপনী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছাড়পত্রের জন্য ৫০ টাকা, এবং পরীক্ষার ফ্রি সরকারি নিয়মের বাহিরে ১০/১৫ টাকা বেশি নেয়। এবং ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে স্কুলে শিশু থেকে চতুর্থ শেণী পযর্ন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তী ফ্রি ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পযর্ন্ত।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা আক্তার চৌধুরী তার উপর উঠা সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে তিনি বলেন, আমার সাথে এলাকাবাসী স্কুলের কমিটি নিয়ে বিরোধ চলছে। তাই তার আমার উপর এরকম মিথ্যা অভিযোগ করছে যা আধু ঠিক নয়। তবে আজ (৩০ অক্টোবর শনিবার) আপনার স্কুলে সকাল ৯ টার সময় উপস্থিত থাকার কথা কিন্তু আপনি স্কুলে আসলে সকল ১০ টা ৪৫ মিনিটে কেন। তিনি এর কোন স্বদউত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবু সাঈদ বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা। তবে খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।