উখিয়া প্রতিনিধি>
উখিয়ার ঐতিহ্যবাহী মনখালী বলি খেলার ৬৫ তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কক্সবাজারে উখিয়ার শামশু বলি।
ঢাকা নারায়ণগঞ্জের কালাই চান বলিকে হারিয়ে তিনি বিজয়ের মুকুট অর্জন করেন।এর আগে ৬৩,৬৪ তম আসরেও তিনি চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।
আজ মঙ্গলবার ৩১ মে ২০২২ ইংরেজি বিকেলে ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন মনখালী ডাববিল মাঠে এ বলি খেলা (কুস্তি প্রতিযোগিতা) অনুষ্ঠিত হয়।
হাজার হাজার মানুষ এবারের বলি খেলা উপভোগ করেন। ফাইনালের শুরু থেকে দর্শকরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে শামশু বলি ও কালাই চানের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। কালাই চান বেশ কয়েকবার শামশু বলীকে ধরাশায়ী করার চেষ্টা করেও পারেননি।শেষ মুহূর্তে পয়েন্ট ভিত্তিতে শামশু বলিকে বিজয়ী ঘোষণা করেন খেলার রেফারি।
বলিখেলাকে কেন্দ্র করে চলছে ৩ দিনের বৈশাখী মেলা। করোনার মহামারির কারণে দুই বছর এ আয়োজন বন্ধ থাকার পর ঐতিহ্যবাহী এ বলীখেলা ও মেলার এবার বসেছে ৬৫ তম আসর। প্রতিযোগিতায় অংশ নেন চট্টগ্রাম কক্সবাজার,চট্টগ্রাম কুমিল্লা,ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের অসংখ্য বলী।
বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩ টায় আয়োজক কমিটির পৃষ্ঠপোষকতায় ঐতিহ্যবাহী মনখালী বলি খেলার ৬৫ তম আসরের আয়োজন করা হয়।
মনখালীর এই বলি খেলায় এবার প্রথম রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল (চ্যালেঞ্জিং বাউট), সেমি ফাইনাল ও ফাইনালে (চ্যাম্পিয়ন বাউট) মোট ৫০ জনের অধিক বলী অংশ নেন।
বিজয়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন জালিয়াপালং ইউনিয়নের ০৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার কামাল হোসাইন দূর্জয়। বিশেষ অতিথি জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার রোজিনা আক্তার রুজি।
তিন দিনব্যাপী এ মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের গৃহস্থালি ও লোকজ পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। মাটির তৈরি তৈজসপত্র, মাটির টেপা পুতুল, কাঁচের চুড়ি, পাটপণ্যের পাশাপাশি কাঠের পুতুল, খেলনা, বাঁশ-বেতের জিনসিপত্র আর মুড়ি-মুড়কি বাতাসার দোকানের ভিড় লেগেছে।
বৈশাখী মেলায় বাহারি গ্রামীণ পণ্যের পসরায় সেজেছে ডাববিল মাঠের আশে পাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা। মেলায় এসেছে নানা বয়সী মানুষ।
উল্লেখ্য- ১৯৫৭ সালে থেকে এ গ্রামীণ জনপদের তরুণ যুবকদের শারীরিকভাবে তৈরি করতে এই বলী খেলার প্রচলন করেছিলেন মনখালীর তৎকালীন প্রবীণরা। ধারাবাহিকভাবে পাঁচ যুগের বেশী সময় পেরিয়ে বর্তমানে দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহ্যবাহী লোকজ উৎসবেই শুধু পরিণত হয়নি এই খেলা, ঠাঁই করে নিয়েছে উখিয়াবাসীর ইতিহাসে ঐতিহ্যে।