বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। হল ছাড়ার নির্দেশনা অমান্য করে রেলপথ অবরোধের পর এবার মঙ্গলবার দুপুরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূবালী ব্যাংক শাখা ও ট্রেজারি ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক হুমায়ূন কবীর জানান, দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা কর্মকর্তাদের বের হওয়ার জন্য ১০ মিনিট সময় দিয়ে ব্যাংক ও ট্রেজারি ভবনে তালা দেন। তিনি বলেন, “কোষাধ্যক্ষ কার্যালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। সেখানে তালা দিয়ে আমাদের বের করে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতে বড় ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যেভাবে আচরণ করছে তা অপ্রত্যাশিত। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।”
অধ্যাপক হুমায়ূন কবীর আরও জানান, এখন পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে নেই, জেলা প্রশাসন বিষয়টি দেখছে। তবে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক, সেটিই তাদের প্রত্যাশা।
এদিন দুপুর ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা জব্বারের মোড়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের রেলপথ অবরোধ করে রাখেন, এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। এরপরই শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ব্যাংক ও ট্রেজারি ভবনে গিয়ে তালা দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, “আমরা সোমবার ৬ দফা দাবি নিয়ে আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন কোনো সাড়া দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে ব্যাংক ও ট্রেজারিতেও তালা দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ, তাই ব্যাংক খোলা রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
পূবালী ব্যাংক বাকৃবি শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, “দুপুরের পর শিক্ষার্থীরা ব্যাংকে প্রবেশ করে স্লোগান দিতে থাকে এবং আমাদের হিসাব বন্ধ করার জন্য আধা ঘণ্টা সময় দেয়। পরে আবার এসে সবাইকে বের করে দিয়ে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।”
এর আগে রোববার ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের ডিগ্রি একীভূত করে সমন্বিত ডিগ্রি চালুর দাবিতে শিক্ষার্থীরা ২৫১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। ওই ঘটনার পর বহিরাগতদের হামলায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা নির্দেশ অমান্য করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।