1. admin@daynikdesherkotha.com : Desher Kotha : Daynik DesherKotha
  2. arifkhanhrd74@gmail.com : desher kotha : desher kotha
  3. mdtanjilsarder@gmail.com : Tanjil News : Tanjil Sarder
বিলাসবহুল প্রকল্প মানেই যে উন্নয়ন বিষয়টা সেরকম কিছু নয়! - দৈনিক দেশেরকথা
বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ব্যারিস্টার সুমনকে শোকজ রমজান মাস উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী কিশোরগঞ্জে স্বাস্থ্য-পুষ্টি এবং ওয়াস বিষয়ক ২দিনের মৌলিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ইবিতে প্রভোস্ট কোয়াটারে নিরাপত্তা সংকটে শিক্ষকেরা, চুরির ঘটনা অনাকাঙ্খিত  কুয়াকাটায় পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে নিষিদ্ধ চরঘেরা জাল এবার রাজধানীর মানিকনগরে ৩ বাসে আগুন নির্বাচনে বিদেশিদের চাপ প্রয়োগের অধিকার নেই: ইসি নবীনগরের ঐতিহ্য সংরক্ষণে জোবাইদ মোমেনের ডিজিটাল প্লাটফর্ম নবীনগরের অ্যালবাম দিঘীনালার লম্বাছড়ায় জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ইবিতে কাম ফর রোড চাইল্ডের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

বিলাসবহুল প্রকল্প মানেই যে উন্নয়ন বিষয়টা সেরকম কিছু নয়!

মোঃ হাছান
  • প্রকাশ রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

 135 বার পঠিত

উন্নয়ন বলতে বুঝানো হয় নাগরিক ও দেশের সার্বিকভাবে অগ্রগতি । যা এমন একটি প্রক্রিয়া এর মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন বা ভৌত অবকাঠামো, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, সামাজিক ও জনসংখ্যার উপাদানগুলোর সংযোগ ঘটে। উন্নয়নের উদ্দেশ্য হলো জনগণের জীবনযাত্রার স্তর ও মানের উন্নয়ন এবং পরিবেশের কোনোরূপ ক্ষতিসাধন না করে স্থানীয়, আঞ্চলিক আয় বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সম্প্রসারণ। জীবনমানের গুণগত পরিবর্তনের ধারা সৃষ্টি ও অব্যাহত রাখার বিষয়টি দৃশ্যমান হয়। উন্নতয়ন হলো মূলত দুর্বল ও কৃত্রিম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অনুপস্থিতি।

বর্তমানে সময়ে আমরা উন্নয়ন বলতে বুঝে থাকি মেঘা প্রকল্প এবং সর্ববৃহত্তম বাজেট। যার ফলশ্রুতিতে বাড়ছে মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, রূপপূর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও কর্ণফুলি টানেলের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলো । আমাদেরকে তোতা পাখির মতো বুলি শেখানো হচ্ছে উন্নয়ন হচ্ছে বিধায় আমদানি শুল্ক বাড়তি পরিশোধ করা, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি হার এবং মাথাপিছু আয়ের উর্ধগতি।

প্রকৃত পক্ষে বৃহত্তর বাজেট উন্নয়ের নমুনা হতে পারে। তবে আমাদের দেশে ঊর্ধ্বগতিতে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি যার প্রভাবে নিম্ন আয়ের মানুষ হাসফাস করছে, তাদের দিকে তাকালে উপলব্ধি করা যাবে কতটা উন্নতির শিখরে পৌঁছেছে আমাদের দেশ। মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়ছে প্রায় প্রতিটি বাজারে।নিম্ন আয়ের মানুষদের ক্রয়ক্ষমতা প্রায় নাগালের বাহিরে চলে যাচ্ছে । তবে এই উন্নয়নের ছায়াতলে লুকিয়ে আছে আরেক পুঁজিবাদী সংস্কৃতি।

সরকার থেকে তদন্তকারী সংস্থা যখন মুদ্রাস্ফীতি ঠেকাতে মাঠপর্যায়ে খোঁজ খুঁজি করে সঠিট কারণ রের করার চেষ্টা করছে। তখন সাধারণ জনগণের মনে প্রশ্ন জাগে, তদন্তকারী সংস্থাগুলো খুচরা বাজার বিশ্লেষণ করে। তবে দেশের বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজার বিশ্লেষণ কেন করা হচ্ছে না? প্রসঙ্গত দেশের বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো পন্য মজুদ সহ ভোক্তা বাজারের নানা ধরনের কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করছে।

আমাদের দেশে বিশ্বায়নের প্রভাব অথবা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব কতটুকু। বিশ্বায়ন হল একটি নব্য উপনিবেশে বিশ্বায়নের রূপান্তর যার মাধ্যমে ধনী দেশগুলি উন্নয়নশীল দেশগুলিকে উপনিবেশ করে। এই যুগেও শিক্ষা, কারিকুলাম, প্রযুক্তি ও পাঠদান পদ্ধতির নামে ধনী ও শক্তিশালী দেশগুলো পরোক্ষভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে উপনিবেশ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় দুই বছরের মধ্যে ৩০ বিলিয়নের নিচে চলে এসেছে। বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক সাহায্য, ঋণ, বিভিন্ন উপায়ে উন্নত দেশগুলোর কাছে আটকে আছে। সেই সুবাদে আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপের মতো দেশগুলো দেশের অভ্যন্তরীণ কর্মকান্ডে প্রভাব বিস্তার করতে দেখা গেছে।

আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা বলছে বাংলাদেশের মন্দা অবস্থার অন্যতম কারণ রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি। তবে আমরা যদি সেটা সঠিক ধরে নেই তাহলে, দেশে যেই সরকার ব্যবস্থা থাকবে না কেন ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশের অর্থনৈতিক মন্দা দূর হবে না।

তবে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কিছু প্রতিবন্ধকতা লক্ষ্যনীয়। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় উন্নত দেশের তুলনায় কম, ফলে সঞ্চয় ক্ষমতা কম। মূলধনের স্বল্পতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে একটি অন্তরায়। স্বল্প আয়, জীবনযাত্রার নিম্নমান এবং দেশে কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রের অভাবে বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষ কারিগরি শিক্ষা লাভে সমর্থ হয় না। ফলে প্রযুক্তি বিদ্যার অভাবে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের পূর্ণ ব্যবহার হয় না। বাংলাদেশে শিল্পোন্নয়নের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির জন্য বিদেশের উপর নির্ভর করতে হয়। এ সমস্ত যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন , কিন্তু বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ কম । ফলে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন সম্ভব হয় না। এতে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যহত হয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব রয়েছে। এ কারণেও সঠিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।

অর্থনীতিবিদ রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বিবিসি বাংলা এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বলেছিলেন , অর্থনীতি ঠিক মতো চলছে কিনা, তিনটি পক্ষ তা ভালো মতো বুঝতে পারছে।“তারা হলো জনগণ, কারণ তারাই সবচেয়ে বিশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের খাওয়া কমাতে হচ্ছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে।

আরেক পক্ষ ব্যবসায়ীরা যারা ডলারের অভাবে এলসি খুলতে পারছেন না, আমদানি হচ্ছে না, ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে।

আর সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারেন সরকারি কর্মকর্তারাই। কারণ রিজার্ভ কমা, দারিদ্র বেড়ে যাওয়া, মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকা- এসব তো সরকারি পরিসংখ্যানেই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেটা সমাধানের, দ্রুত অবসানের তো কোন লক্ষণ কোথাও দেখা যাচ্ছে না। এছাড়াও দক্ষ উদ্যোক্তার অভাব, সংকীর্ণ বাজার, সামাজিক ও ধর্মীয় প্রথা, কৃষি ও শিল্প খাতের অগ্রসরতা, অনুন্নত আর্থসামাজিক কাঠামো , প্রাকৃতিক সম্পদের অসম্পূর্ণ ব্যবহার, জনসংখ্যার চাপ ইত্যাদি কারণেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বহুলাংশে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সবশেষে বলা যায় অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে দেশের মেগা প্রকল্প ও বৃহৎ বাজেট মানেই উন্নয়ন নয়, দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবন যাত্রার এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন উন্নয়নের অংশ। নাগরিকদের নৈতিকতার উন্নয়ন ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ব্যতীত উন্নয়ন অর্থহীন।

দেশেরকথা/বাংলাদেশ

এই বিভাগের আরো খবর

ফেসবুকে আমরা

এই সাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।কপিরাইট @২০২২-২০২৩ দৈনিক দেশেরকথা কর্তৃক সংরক্ষিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park