290 বার পঠিত
“যদি করি স্বেচ্ছায় রক্তদান, বাঁচবে জীবন বাঁচবে প্রাণ” এই মূলমন্ত্রকে সঙ্গী করে ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর যাত্রা শুরু করেছিলো কুবির সেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) একমাত্র স্বেচ্ছায় রক্তদাতা এই সংগঠনটি আজকে ৮ম বছর পেরিয়ে ৯ম বর্ষে পদার্পণ করেছে।
প্রতিষ্ঠাকালিন সময় থেকে এখন পযন্ত প্রায় ১০ হাজারেরও অধিক ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে দিয়েছে এই অলাভজনক সংগঠনটি। এছাড়া প্রতি বছরে ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং ক্যাম্পেইন সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সেমিনার ও সচেতনতা বিষয়ক ক্যাম্পেইন করে থাকে বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ব রক্তদাতা দিবস, থ্যালাসেমিয়া দিবস, ব্রেষ্ট ক্যান্সার, বিশ্ব হার্ট দিবস, বিশ্ব ডায়াবেটিস ও অন্যান্য দিবসে সচেতনতা সেমিনার আয়োজন করে সংগঠনটি। এ পর্যন্ত মোট দশবার ব্লাড গ্রুপ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে চার হাজারের অধিক মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছে বন্ধু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
এ নিয়ে বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ বলেন, ” রক্ত সংগ্রহ , রক্তদানে উৎসাহ দিতে সেমিনার, ক্যাম্পেইন ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি । কিন্তু ইদানিং রক্তের চাহিদা খুবই বেড়েছে যা সামাল দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি । আবার আমদের কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক সময় সেবাদানে ব্যর্থ হই। পরিপূর্ণ সেবা দিতে না পারলে খুব মন খারাপ হয়।”
এসময় তিনি সংগঠনের কাজের গতিশীলতার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্রের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের সংগঠনকে গতিশীল করতে একটা কম্পিউটার খুবই প্রয়োজন। যার মাধ্যমে আমরা রক্ত দাতা ও গ্রহিতার উভয়ের তথ্য সংগ্রহে সুবিধা হবে এবং কাজ আরো বেগবান হবে।”
গত আট বছরের বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে করা প্রতিটি কাজ খুবই প্রসংশনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মচারী মহলের সবার মনে সংগঠনটি জায়গা করে নিয়েছে। এ নিয়ে বন্ধুুর কার্যকরী সদস্য নাইমুর রহমান ভুঁইয়া বলেন,
“মানুষের জন্য কিছু করার আগ্রহ থেকে মানুষের পাশে দাড়ানোর ইচ্ছা থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে রক্ত দাতা সংগঠন বন্ধুতে যুক্ত হই৷ এখানে যুক্ত হওয়ার পর থেকে খুব অল্প সময়ে অসংখ্য মানুষের সাথে পরিচয় হয়। একবার বন্ধু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে আমার গ্রামের এক ব্যক্তিকের রক্ত সংগ্রহ করে দিয়েছিলাম। এরপর থেকে গ্রামে গেলেই ওই ব্যক্তি আমার সাথে খুব আন্তরিক ব্যবহার করেন।”
বন্ধুর কাজ নিয়ে তিনি বলেন, “এই কাজগুলো করার মধ্যে কখনো ক্লান্তি বোধ আসে না ৷ এখানে অফুরন্ত দোয়া ও ভালবাসা উভয়ই পাওয়া যায়।”
বন্ধুর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বন্ধু’র সাবেক সভাপতি রাসেল মাহমুদ ভূইয়া বলেন, ” বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, একটি স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন। আমি নিজে এ সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম দীর্ঘদিন যার মাধ্যমে মানুষের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ পেয়েছি অনেক। যাদের হাতে সংগঠনটি গড়ে উঠেছে এবং যাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘বন্ধু’ আজ এই পর্যন্ত এসেছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাপ্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বন্ধু’র উপদেষ্টা, সদস্য, রক্তযোদ্ধা (রক্তদাতা) ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।বরাবরের মতো সবার ভালোবাসায় সিক্ত থেকে ‘বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ মানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকবে সেই প্রত্যাশা করছি। “
উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালে কুবিতে ফ্রি ব্লাড গ্রুপিংয়ের পাশাপাশি প্রথম বারের মতো বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে হ্যাপা-বি ভ্যাক্সিনেশন করা হয়। ২০২৩ সালে পৃথিবীর ভয়াবহরুপ ধারণকারী রোগ “জরায়ু মুখের ক্যান্সারের” প্রতিরোধমূলক ভ্যাক্সিনেশন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইন শুরু করে।