1. admin@daynikdesherkotha.com : Desher Kotha : Daynik DesherKotha
  2. arifkhanjkt74@gamil.com : arif khanh : arif khanh
  3. alaminjhalakati@gmail.com : Al-Amin Khan : Al-Amin Khan
নবীনগরে হারিয়ে যাচ্ছে অর্ধ শতাধিক বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের স্মৃতি চিহ্ন  - দৈনিক দেশেরকথা
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্বৈরাচার পতনে বাক স্বাধীনতা  ফিরে পেয়েছে গণমাধ্যম পাবনায় বাস-অটোভ্যান সংঘর্ষে প্রাণ গেল ভ্যান চালকের গলাচিপায় কচ্ছপ পাচারের সময় ১ নারী আটক খাগড়াছড়ি বাজার ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা করলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী   কটিয়াদীতে জাতীয় নাগরিক কমিটির শ্রদ্ধা নিবেদন কিশোরগঞ্জে মহান বিজয় দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে সংবর্ধনা বিজয় দিবসে ইবি পাঠকবন্ধুর শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন জাতীয় স্মৃতিসৌধে -শহীদদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা কিশোরগঞ্জে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে  বিএনপির মোমবাতি প্রজ্জ্বলন  কিশোরগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন গত ৫৩ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার করতে পারেনি :সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

নবীনগরে হারিয়ে যাচ্ছে অর্ধ শতাধিক বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের স্মৃতি চিহ্ন 

সঞ্জয় শীল
  • প্রকাশ বুধবার, ১ মে, ২০২৪

 193 বার পঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় জন্ম গ্রহণ করা  অর্ধ শতাধিক বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের মুছে গেছে নাম ও স্মৃতি চিহ্ন। কয়েকজন বিপ্লবীদের স্মৃতি চিহ্ন রয়ে গেলেও তাও হারাতে বসেছে কালের বিবর্তনে। যা বৃটিশ ভারতের কুমিল্লা জেলার একটি মহকুমা হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্তমান উপজেলার একাধিক স্থানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় বৃটিশ শাসকদের কাছ থেকে অখন্ড ভারতের স্বাধীনতার জন্য স্বদেশ মাতৃকার জন্য প্রাণ দেয়া বীর সন্তানদের নামই জানেন না অনেকে। তাদের উত্তরাধিকার সূত্রের সম্পত্তি দখল ও লুণ্ঠনে মুছে গেছে স্মৃতি চিহ্ন। যার বেশির ভাগ ঘটনাই ঘটেছে স্বাধীন বাঙলাদেশে। অনেকে বাড়ি-ঘর ফেলে ভারতে চলে গেছেন বলেও জানা যায়। 

নবীনগরে জন্ম নেয়া স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের মধ্যে দুই জনকে (০২) নিয়ে আলোচনা হলেও বাকিদের নাম তেমন উঠে আসে না। তাদের নাম কেবল ইতিহাসের পাতায় যেনো আটকা। বৃটিশ শাসনামলের বিভিন্ন দলিলদস্তাবেজ ও বই-পুস্তক থেকে জানা যায় উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউপির ইব্রাহিমপুর গ্রামের সুনীতি রায় চৌধুরীর গুলিতে তৎকালিন কুমিল্লা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মৃত্যু ও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সুনীতির সাহসী ভূমিকা ইতিহাসে অমর হয়ে আছে। সুনীতি রায় চৌধুরীর ৪ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে বড় বোন ব্যতিত সবাই ছিলেন বিপ্লব ও স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত। সুনীতি রায় চৌধুরী তার আপন ভাইদের অনুপ্রেরণা ও ত্যাগেই হয়ে উঠেছিলেন আজকের সুনীতি, তারা হলেন সুকুমার রায় চৌধুরী, শিশির রায় চৌধুরী, সুখেন্দু রায় চৌধুরী ও সুধীর রায় চৌধুরী।

আরো জানা যায়, অষ্টম শ্রেণী পড়াকালীন সময়েই সুনীতি হয়ে উঠেছিলেন পুরোদস্তুর স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত একজন সৈনিক। তাদের পরিবারের একমাত্র বংশধর ও উত্তরাধিকার সূত্রে ইব্রাহিমপুর গ্রামের অঢেল সম্পত্তির মালিক হওয়া চিরকুমার মেঘু চৌধুরীকে স্বাধীন বাঙলাদেশে হত্যা করে এক দল ভূমি দূস্য ও স্বাধীনতা বিরোধীরা। পরে বাঙলাদেশ পুলিশ বাহিনীর করা সরকার বাদী মামলায় জেলও খাটে ঘাতকরা। বর্তমানে তাদের সম্পত্তি চলে গেছে দখলদারদের হাতে। এছাড়া বিপ্লবী অতিন্দ্র মোহন রায় বা অতিন রায়ের নাম উল্লেখ্যযোগ্য। তিনি পরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার একাধিক সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের স্মৃতি চিহ্ন কুমিল্লা শহরে রয়ে গেলেও অথচ নবীনগর পৌর এলাকার ভোলাচং গ্রামে নেই তার কোন স্মৃতি চিহ্ন।

বাকিদের মধ্যে নবীনগর সদরের নিশিকান্ত দাস, ডাঃ প্যারিমোহন ঘোষ, শীতল চন্দ্র দাস, দেবেন্দ্র দে, কাঁঠালিয়া গ্রামের মর্হষি লব চন্দ্র পালের ছেলে হীরা লাল পাল, খড়িয়ালা গ্রামের পুলিন দত্ত, ধীরেন্দ্র চক্রবর্তী, চেলিখলা গ্রামের রাখাল ভৌমিক, রুসুল্লাবাদ গ্রামের পুলিন বিহারী পাল, যমুনা দে, নিকুঞ্জ বিহারি পাল, ধনঞ্জয় দে, নাছিরাবাদ গ্রামের সুবোধ নন্দী, অশ্বিনী চক্রবর্তী, ফনী নন্দী, গোপাল নন্দী, হরিচরণ দে, মালাই মাখন দাসগুপ্ত, প্রফুল্ল দত্ত, শ্যামগ্রাম গ্রামের শিক্ষক ভুবন মোহন রায়, যদুনাথ ভট্টাচার্য,  হরিদাস দে, তপেন্দ্র গাংগলী, উদাসী নাগ, বিবেকানন্দ ভট্টাচার্য,  নরেন্দ্র সাহা, সুখেন্দু সাহা, নগেন্দ্র গোস্বামী,  যশোদা চক্রবর্তী, বিদ্যাকুট গ্রামের শশীকান্ত ভট্টাচার্য, শ্রীরামপুরের বীরেন্দ্র ভট্টাচার্য, শ্রীঘরের গোপেল দেব, নেপাল নাহা, রেবতী নাহা, প্রফুল্ল নন্দী, যামিনী পাল, মহী পাল, সেন্টু দত্তের নাম জানা যায়।

নেটিজেনরা বিপ্লবীদের নামাঙ্কিত স্মৃতি ফলক, মুরালসহ তাদের নিজ এলাকার সড়ক, গুরুত্বপূর্ণ স্থানের নামকরণের দাবি জানেন। তারা আক্ষেপ করে বলেন, যারা বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের ২০০ বছরের শাসনের পতন ঘটিয়ে এদেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতা ও মুক্তির বীজ বপন করলো তাদের বাড়ি-ঘর এখন ভূমি দুস্যদের দখলে। নেই কোন নামফলক ও তাদের মহান আত্মার শান্তি কামনায় কোন অনুষ্ঠান। যা থেকে আমাদের আগামী প্রজন্ম তাদের সম্পর্কে জানতে পারতো, শিখতে পারতো অন্যায়-অত্যাচার ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে শিকল ভাঙ্গার গান। 

নেটিজেনরা সমাজের সুশীল, সংস্কৃতিকর্মী, জনপ্রতিনিধি,  প্রশাসন ও সাংবাদিকদেরকে বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের নিয়ে গবেষণা, সংবাদ উপস্থাপন ও স্মৃতি চিহ্ন রক্ষায় এগিয়ে আসার আহবান করেন।

নবীনগর পৌরসভার মেয়র এড. শিবশংকর দাস বলেন, ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেয়া মহান বিপ্লবীদের কোন স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষণ আমাদের জন্য গর্বের। আমাদের নবীনগরের এমপি জনাব ফয়জুর রহমান বাদল সাহেবের সাথে এ বিষয়ে কথা বলে পৌর সদরে উনাদের নাম ফলক নির্মানের চেষ্টা করবো। 

উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমাদের স্বাধীনতার বীজ বপন হয়েছিল বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অথচ স্বাধীন বাঙলাদেশে উনাদের তেমন মনে রাখেনি কেউ। উনারা আমাদের দেশের সূর্য সন্তান। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, নবীনগরে এতজন যে বিপ্লবী ছিলো আমি তা জানতে পেরে উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত। আমি চেষ্টা করবো উনাদের সম্মানে উপজেলায় কিছু উদ্যোগ নেয়ার।

জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ নাছির উদ্দিন বলেন, বিপ্লবীদের অনেকের বাড়ি-ঘর দখল করে রেখেছে বলে শুনেছি ভূমি দূস্যরা। উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার সাথে কথা বলে তা পূর্নরুদ্বারের চেষ্টা করবো। 

দেশেরকথা/বাংলাদেশ

এই বিভাগের আরো খবর

ফেসবুকে আমরা

এই সাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।কপিরাইট @২০২০-২০২৪ দৈনিক দেশেরকথা কর্তৃক সংরক্ষিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park