157 বার পঠিত
জামালপুর প্রতিনিধি>টানা খড়া ও অনাবৃষ্টিতে জামালপুর সদর উপজেলার আমন ধানের ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির হয়েছিল। তখন কৃষকরা হতাশায় ও ভোগান্তিতে পডেছিল। আষাড় শ্রাবণমাসে বৃষ্টি পরবর্তী সময়ে উপজেলার কৃষকগণ আমন ধানে চারা রোপন করতে ব্যাস্ত ছিল। বৃষ্টির মৌসুম হলেও কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মেলেনি জামালপুর সদর উপজেলা।
আষাঢ়-শ্রাবণ মাস বর্ষাকালে চাহিদা অনুপাতে বৃষ্টি না হওয়াই অধিকাংশ কৃষক সেচের মাধ্যমে রোপা আমনের চারা রোপন করতে পেয়েছে। এরপর শুরু হয় খরা। ভাদ্র মাসেও কমবৃষ্টি জন্য ধান ক্ষেতে আগাছা নাশক ওষধ ছিটাতে না পারায় প্রচুর পরিমাণ আগাছা দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ লোডশেডিং এর জন্য বিদ্যুৎ চালিত পাম্পে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
আরো পড়ুনঃ সরিষাবাড়ীতে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন
জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউপি রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান জানায়, মাঠে সেচ পাম্প যেটুকু বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া গেলেও আমন মৌসুমে সেচে ড্রেন না থাকায় জমিতে সেচ দিতে পারছেনা। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে তেলে চালাত পাম্প দ্ধারা সেচ দিতে গেলে প্রতিঘন্টা ২০০টাকা দাবি করছে পাম্প মালিকগণ।
এক সপ্তাহ আগে যে বৃষ্টি হয়েছে তা অপ্রতুল। বৃষ্টিতে খাল বিলে পানি না থাকার জন্য ডিজেল চালিত শেলু মেশিন দ্ধারা সেচ দেয়া সম্ভব হচছে না। অনেক কৃষক প্রতিকূল আবহওয়ার জন্য ভবিষ্যতে কথা চিন্তা করে ২ ইঞ্চি সাবর্সিবল পাম্প মটর স্হাপন করে জমিতে পানি দিতেছি দিনে ৩/৪ঘন্টি বিদ্যুৎ থাকে পাম্প চালানো যায়। যদি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আগের মতন ফিতা পাইপ সরবরাহ করতো তবে দুরে ড্রেন বিহীন জমিতে সেচ প্রদান করা সম্ভব হইত।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর এ উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরাহয়েছে ৩১হাজার ৪শ’ ৭২ হেক্টর । যদি সঠিকমাত্রায় বৃষ্টি না হয় এবং সময়মত সেচ ও সার প্রয়োগ না করতে পারলে আমণ চাষের লক্ষমাত্রা ব্যহ্নত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
জামালপুর জেলার সদর উপজেলা একটি কৃষিনির্ভর উপজেলা। শ্রাবণমাসে আমন চারা রোপন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করলেও এখন বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকার পর চলতি সপ্তাহে বৃষ্টি হয়েছে। জমিতে খরায় আগাছানাষক ওষধ দিতে না পারার ধান খেতে প্রচুর পরিমান ঘাস গজিয়েছে।শ্রমিক দ্ধারা আগাছা পরিস্কার করার পর ধানের জমিতে ইউরিয়া দেয়ার এখনি উত্তম সময়।
বিসিআইসি ডিলারদের নিকট মিলছে না সার নানা অজুহাত দেখায়ে বিদায় করছে তারা । কৃষক সারে প্রয়োজনে বাজারে সাবডিলার ও খুরচা সার ব্যবসায়ী দোকানে মিলছেনা সার।সদর উপজেলার নান্দিনা, লাহিডীকান্দা,গোপালপুর, শ্রীপুর,তুলশীপুর,ছোনটিয়া,শরিফপুর ও গোদাশিমালা বাজার ঘুরে জানা যায় সারের সরকারি মূল্য প্রতিবস্তা ১১০০টাকা নির্ধারণ থাকলেও মজুতদারী সার ব্যবসায়ীরা বেশী লাভ করে প্রতি ৫০ কেজি ব্যাগ বিক্রি করছে ১৪০০টাকা থেকে ১৬০০টাকায়।
অনেক কৃষক বেশী দামে দুশ্চিন্তায় আর হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে দিগন্তের পর দিগন্ত আমন ধানের ফসলের মাঠে যেন লালচে হয়ে যাচ্ছে। শরিফপুর ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ ওয়াহেদুজ্জামান জানান, আমনের চারা রোপের পর ২১দিনে মধ্যে ইউরিয়া সার দিতে হয়। তিনি আরও জানান, শরিফপুর ইউনিয়নের তিন জন সার ডিলার সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম সপ্তাহে উত্তোলন করবে,।
উল্লখ্য যে জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুরের গোদাশিমলা বাজার কালোবাজারীর সার ব্যবসায়ী খোঁজ নিতে গেলে ডেঙ্গারগড গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম দেশের কথাকে জানান, গত সপ্তাহে শরিফপুর ইউনিয়নের কৃষকরা সার পাওয়ার একটি ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতে স্বচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
সংবাদ দেখে জামালপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক
কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা বাজারে পরিদর্শনে এলে স্হানীয় সার ব্যবসায়ী সরকার ষ্টোরের মালিক নান্টু মিয়া সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশী দামে বিক্রি করছে উপপরিচালকে নিকট উল্লখ করার জন্য অন্যান্য কৃষকের নিকট থেকে বেশি দামে সার বিক্রি করলেও তাকে ১০ কেজি সার দেয়নি।
এছাড়াও অনেক ভুক্তভোগী কৃষক বলেন, এই বাজারে সরকার ষ্টোর ছাডাও বাজারের আশপাশের একাধিক সারের গোড়াউন রয়েছে। ওই গোড়াউনে ইউরিয়া,ডিএপি,টিএসপিও এমওপি(পটাশ ) সার গুদামজাত করে কৃত্রিম সার সংকট করে মুনাফা অর্জন করে আসছে। সে ছাড়াও প্রতিটি বাজারে ব্যাঙের ছাতার মত অসাধু সার ব্যবসায়ী গজিয়ে উঠেছে।