123 বার পঠিত
মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি>ঘুর্নিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৩০ হাজারেরও অধিক গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ মোরেলগঞ্জ জোনাল অফিসের দেয়া তথ্যমতে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন এখানে ৮০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। উপজেলায় ২ হাজার ৩ শত কিলোমিটার জুড়ে বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। ভয়ংকর রেমাল এর তান্ডবে উপজেলার নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের তার ছিঁড়ে যায় ও খুঁটি উপড়ে পড়ে।
এতে বিদ্যুৎ বিভাগের মোরেলগঞ্জে প্রায় ৭৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় সরবরাহ লাইন মেরামত করে কয়েক হাজার গ্রাহককে চার দিনেও বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারেনি বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। একদিকে বসতঘর,ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব ৫০ হাজারের অধিক মানুষ অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে রাত-দিন পার করছে।বিদ্যুৎ সংযোগের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাওলিয়া, বহরবুনিয়া,বারইখালী,জিউধারা, হোগলাবুনিয়া, পঞ্চকরন,পুটিখালি এলাকায়।বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন ওইসব এলাকার বাসিন্দারা।
তবে ঘুর্নীঝড় শেষ হওয়ার ৫ দিনের মধ্যে পৌরসভার ১৭ হাজার গ্রাহকের মাঝে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সক্ষম হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বর্তমানে পৌরসভায় দৈনিক ১৮-২০ ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ চালু রয়েছে।
রেমালের কারনে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের শতাধিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। অসংখ্য গাছপালা বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ওপর পড়ায় বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ লাইনের তার ছিঁড়ে গেছে।লাইন ছিড়ে বসত ঘরে উপরে পরেছে, কোথাও কোথাও বৈদ্যুতিক মিটার ঝড়ে উড়ে গেছে।বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এ সকল এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দাই ভুগছেন দৈনন্দিন ব্যবহার্য ও খাবার পানি সংকটে।
এইসব গ্রামের মানুষগুলো গত ৫ দিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
রেমালে’ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় মোরেলগঞ্জ সাবস্টেশন -১/২ এর অধীনে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পুরো উপজেলায় সব জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পাঁচ থেকে সাত দিন সময় লাগতে পারে। উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী সহ ১৮০ জন শ্রমিক কাজ করছে।
পল্লী বিদ্যুৎ মোরেলগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম ওয়াদুদ খন্দকার বলেন,রেমালের ঝড়ে গাছপালা ভেঙে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের তার ছিঁড়ে গেছে। এ ছাড়া বেশ কিছু বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে গেছে। শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ পৌর এলাকায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।তবে পুরো উপজেলায় শতভাগ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে সময় লাগবে।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজর (জিএম) সুশান্ত রায় বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে মোরেলগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে,প্রতিদিন লোকবল বাড়িয়ে কাজ করানো হচ্ছে।তবে দ্রুত মেরামত কাজ শেষ করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছি।