56 বার পঠিত
ঘরের মাঠে এশিয়া কাপে ফাইনালে এক সিরাজেই ঝড়ে লণ্ডভন্ড হয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই চার উইকেটেই ভেঙ্গে গেলো শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপ। এরপর শিকার করেছেন আরও দুইটি। তাতে লড়াই থেকে একরকম ছিটকেই গেছে এশিয়া কাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়িনরা। মাত্র ৫০ রানে অলআউট হয়েছে দাসুন শানাকার দল।রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নেমেছে শ্রীলঙ্কা-ভারত। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে ভরাডুবি হয়েছে শ্রীলঙ্কার। মোহাম্মদ সিরাজ এবং হার্দিক পান্ডিয়ার তোপে মোটে ১৫ ওভার ২ বল খেলতে পেরেছে তারা।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ভারতীয় পেসারদের তোপে দিশেহারা হয়ে পড়ে লঙ্কানরা। প্রথম ওভারেই জাসপ্রীত বুমরাহর বলে আউট হন কুশল পেরেরা। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
ম্যাচটা পুরোপুরি একপেশে হয়ে যায় শ্রীলঙ্কান ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। সিরাজের এই এক ওভারে লঙ্কানদের ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে দেয় ভারত। এই ওভারে লঙ্কানদের ৪ টপ অর্ডার ব্যাটারকে ফেরান মোহাম্মদ সিরাজ, তছনছ করে দেন তাদের ব্যাটিং লাইন।
ওভারের প্রথম বলে শুরুটা পাথুম নিসাঙ্কাকে দিয়ে। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের লেন্থ বল হালকা ঠেলে দিতে গিয়ে জাদেজার হাত ধরা পড়েন লঙ্কান ওপেনার। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ ব্যাটিং করা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে ওভারের তৃতীয় বলে এলবিডব্লিউ করেন সিরাজ।
সামারাবিক্রমাকে আউট করার পরের বলেই চারিথ আশালঙ্কাকে ফিরিয়েছেন সিরাজ। তৈরি করেছিলেন হ্যাটট্রিকের সুযোগও। তবে সেই বলে আবার চার খেয়ে বসেন ডানহাতি পেসার। কিন্তু ওভারের শেষ বলে ঠিকই আবার উইকেট নিয়ে নেন সিরাজ, এবার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।
পরের ওভারে এসে দাসুন শানাকাকে ফিরিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট শিকার করেন সিরাজ। শানাকাকে বোল্ড করে তার উদযাপনটা ছিল দেখার মতো। ফুটবলের মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিখ্যাত ‘সিউউ’ উদযাপন করেন তিনি।
১২ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর হালকা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস এবং দুনিথ ভেল্লালাগে। কিন্তু কুশলকে ফিরিয়ে সেই জুটিও ভাঙেন সিরাজ।
ওয়ানডে সংস্করণে এতদিন এশিয়া কাপের ফাইনালে সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ১৭৩ রানের। ২০০৮ সালে লঙ্কানদের বিপক্ষে এই লজ্জায় পড়ে ভারত। আর যেকোনো ম্যাচ বিচারে এতদিন এই টুর্নামেন্টের সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ৮৮ রানের। ২০০০ সালে এশিয়া কাপের সপ্তম আসরে দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই লজ্জায় পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের (৯৪) রেকর্ডটিও টাইগারদের, প্রতিপক্ষ সেই পাকিস্তানই। এবার টাইগার এই লজ্জার রেকর্ডের হাত থেকে উদ্ধার করলো শ্রীলঙ্কা।
আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডের সাথেও অবশ্য লঙ্কানদের নাম জড়িয়ে আছে, তবে একটু অন্যভাবে। ২০০৪ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়েকে ৩৫ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল লঙ্কানরা। ২০২০ সালে একই রানে নেপালের বিপক্ষে লজ্জায় লাল হয় যুক্তরাষ্ট্র।
রোববার নির্ধারিত সময়েই কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস অনুষ্ঠিত হয়। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। এরপরই নামে বৃষ্টি। ফলে ৪০ মিনিট বিলম্বে সাড়ে তিনটার ম্যাচটি বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে শুরু হয়।
শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে লঙ্কানরা। বুমরাহর করা ইনিংসের তৃতীয় বলেই ব্যক্তিগত শূন্য রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন লঙ্কান ওপেনার কুশাল পেরেরা। এরপর দলের হাল ধরতে পারেননি পাথুম নিশাঙ্কা, চারিথ আসালাঙ্কা, সাদিরা সামারাবিক্রমা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ও দাসুন সানাকাদের কেউই। ৬ ওভার শেষ না হতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন এই ছয় ব্যাটসম্যান। এরপর কুশল মেন্ডিস ও দুনিথ ওয়েলালাগে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও সিরাজের তোপে সেটি হয়নি। লঙ্কানদের লেজটা মুড়ে দেন পান্ডিয়া।