86 বার পঠিত
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি>“একি অপরূপ রূপে মা,তোমায় হেরিনু পল্লী জননী।
ফুলে ও ফসলে কাদা মাটি জলে ঝলমল করে ধরণী”‘।। কবি হৃদয়ের একরাশ উচ্ছ্বাসিত পংক্তি বাংলার রূপ ধারণ করে রেখেছে।তাই ষড়ঋতুর বাংলায় সবুজ শ্যামল প্রকৃতির মাঝে সৌন্দর্যের খেলা চলে বারো মাস। এ খেলায় অক্টোবর-জানুয়ারিতে বিভিন্ন জলাশয়ে শুরু হয় কচুরিপানা ফুল ফোটানোর প্রতিযোগিতা।গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত ভাসমান জলজ উদ্ভিদ কচুরিপানা।
কচুরি ফুল।প্রকৃতির এ যেন অপরূপ দান।যার ফুলে সুশোভিত হয়ে উঠেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন বিল-ঝিল,পুকুর জলাশয়।এসব স্থানে ফোটা কচুরি ফুল সৌন্দর্যের পাপড়ি মেলে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে।সাদা ধবধবে মিশেল করা নীলচে শিরা-উপশিরায় বিন্যাস্ত হালকা বেগুনি রঙের মায়াবী এ ফুলের নির্মল ও স্নিগ্ধকর সৌন্দর্য প্রকৃতিতে যোগ করেছে নান্দনিকতা।
নয়ন জুড়ানো অপরূপ দৃশ্যে মুগ্ধ হচ্ছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ।সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,খাল-বিল,নদী নালা,বাড়ির পাশে পুকুরে ফুল ফুটে স্বর্গীয় রূপ ধারণ করেছে।এসময় দেখা যায়,সদর ইউপির রাজিব গ্রামের তেলপাম সংলগ্ন পুকুর ভরা কচুরি ফুল,যেন প্রদীপ ভাসছে।হাটু পানির ওপর এমন সৌন্দর্য বাংলার গ্রামাঞ্চল ছাড়া আর কোথায় আছে?গ্রামাঞ্চলের এমন রোমাঞ্চকর দৃশ্য নিমিষেই হৃদয় মন হরণ করে নেয়। এ যেন গ্রামের সহজ-সরল খেটে খাওয়া মানুষের চিত্র বিনোদনের একটি জীবন্ত ছবি।
কিশোরগঞ্জ বহুমূখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক জ্যোতি কৃষ্ণ রায় বলেন,কচুরিপানার ক্ষতিকর দিক থাকলেও সৌন্দর্যের পাশাপাশি আছে বহুমাত্রিক ব্যবহার। যা গো-খাদ্য,দেশীয় মাছের খাবার ও আশ্রয়স্থল।
রৌদ্রতাপ থেকে পোনা মাছ রক্ষা,ভাসমান সবজি চাষ,পাট জাগ,নির্মাণাধীন ব্রিজ,কালভাট,বাসা-বাড়িসহ সিমেন্টের খুঁটি মজবুত করণে পানি ধরে রাখার জন্য কচুরিপানার শিকড় ব্যবহার করেন।কৃষি ক্ষেত্রেও রয়েছে যথেষ্ট উপকারিতা।কৃষক কচুরিপানার জৈবসার উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছে।
বিশেষ করে কৃষকদের কচুরিপানা থেকে জৈবসার উৎপাদনে প্রশিক্ষণ দিলে জৈবসার ব্যবহারে যেমন কৃষক উপকৃত হবে।এতে কমবে রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীলতা।তবে দিন দিন মানুষ পুকুর-জলাশয় ভরাট করে ফসলি জমিতে পরিণত করছে। নির্মাণ করছে বাসা বাড়ি।এতে আগের মত দিগন্ত ভরা কচুরিপানা ও ফুলের সমাহার চোখে পড়েনা।