1. admin@daynikdesherkotha.com : Desher Kotha : Daynik DesherKotha
  2. arifkhanjkt74@gamil.com : arif khanh : arif khanh
  3. alaminjhalakati@gmail.com : Al-Amin Khan : Al-Amin Khan
কিশোরগঞ্জে বিলুপ্ত প্রায় আদি লোকজঐতিহ্যের বাঁশের খুঁটির সঞ্জয় ব্যাংক - দৈনিক দেশেরকথা
রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্বৈরাচার পতনে বাক স্বাধীনতা  ফিরে পেয়েছে গণমাধ্যম বিপুল উৎসাহে বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষক সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী আজ হিমেল হাওয়ায়  সহানুভূতির  উষ্ণতা  দুর্ঘটনার শিকার হলেন অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন আমরা আর বেশি দিন নাই ,চোরদের দ্বারা নির্বাচন আর করিয়েন না: উপদেষ্টা সাখাওয়াত ১৫০ কোটি টাকা অনুদান পেতে যাচ্ছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহতরা ঊম্মাহ এইড নেটওয়ার্কের উদ্যোগে মোরেলগঞ্জ  শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান, সরঞ্জাম জব্দ ফরিদপুরের সদরপুরে এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

কিশোরগঞ্জে বিলুপ্ত প্রায় আদি লোকজঐতিহ্যের বাঁশের খুঁটির সঞ্জয় ব্যাংক

আনোয়ার হোসেন
  • প্রকাশ রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

 114 বার পঠিত

কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধি:বুদ্ধিমত্তা বাঙালির লোকায়েত জ্ঞানের বাঁশের(পই)খুঁটি ব্যাংকের ইতিহাস-ঐতিহ্য অতি প্রাচীন ও পুরোনো।যা একসময় ব্যাংকিং ব্যবস্থা না থাকায় সঞ্চয়মনা বাঙালির ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র পরিসরে অর্থকড়ি জমানোর অন্যতম মাধ্যম ছিল।

আর গ্রামবাংলার অন্যাঞ্চলের ন্যায় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ জনপদের অধিকাংশ বসতবাড়ির ঘরে বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করা হত।আর প্রান্তিকজনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ,ছেলে-মেয়েরা ভবিষ্যতের নানা পরিকল্পনা থেকে বাঁশের খুঁটি ছিদ্র করে তাতে বিভিন্ন অংকের অর্থকড়ি জমাতো।বিশেষ করে ছেলে-মেয়েরা স্কুলের টিফিনের টাকা বাচিয়ে,বাবার পকেটের খুঁচরা টাকা,ঈদ-পুজাপার্বনের সেলামির টাকা বাঁশের খুঁটি ব্যাংকে জমাত।

তারা যেন ছিল এক একটি ব্যাংকের গর্বিত মালিক।খুঁটি ভরে গেলে মালিকেরা তা কেটে সঞ্চিত অর্থ বের করে কেউবা নতুন পোষাকআদি,আলতা,লিপিষ্টিক,চুড়ি,লেইস ফিতা কেনার পাশাপাশি বাৎসরিক পরিক্ষার ফি দেয়াসহ লেখা-পড়ার খরচ চালাত।কেউবা আয়বর্ধক গরু-ছাগল,কবুতর,হাঁস-মুরগি কেনার পাশাপাশি ঈদ-পুজাপার্বনে সংসারের চাহিদা মেটাতো।আবার অনেকের কাছে ছিল বিপদের দিনের পরম বন্ধু।

যা এ খুঁটি ব্যাংকে সঞ্চয়করণ ছোট-বড় সবার কাছে বেশ জনপ্রিয় মাধ্যম ছিল।কিন্তু কালের বির্বতনে সব কিছুতেই এসেছে আমূল পরিবর্তন।বাঁশের খুঁটির স্থলে গড়ে উঠছে ইট-সিমেন্টের দালানবাড়ি।মানুষের দোড়গোড়ায় গড়ে উঠা ব্যাংক,বিমা-ইনজিওর ছড়াছড়ি।শহরের মোড়ে মোড়ে,রাস্তার পাশে এটিএম বুথ।হাতের মুঠোয় লেনদেন।

অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসায় কমে গেছে টাকার মান।যা আগের প্রচলিত এক আনা,দুই আনা,পাঁচ পয়সা,দশ পয়সা,পঁচিশ পয়সা,পঞ্চাশ পয়সা(আটআনার)কয়েনের মুদ্রা অচল।এর পরিবর্তে প্রচলন বেড়েছে ১শ থেকে হাজার টাকা নোটের।যা মানুষ এখন বানিজ্যিকভিত্তিতে সঞ্চয়করণে ঝুঁকছে পোষ্টঅফিস,সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক,বিমা,ইনজিওতে।এতে বাঙালির আদি লোকজ ঐতিহ্য ও শৈশবের স্মৃতিমাখা বাঁশের খুঁটি ব্যাংকে অর্থকড়ি জমানোর প্রবণতা হারিয়ে যাচ্ছে।এক সময় যে মুদ্রা ছাড়া জীবন-জীবিকা চালানো মূল্যহীন ছিল তা আজ যাদু ঘরে ঠাঁই হয়েছে।

কালেভদ্রে সনাতনী এ বাঁশের খুঁটি ব্যাংকের দেখা মেলে উত্তর দুরাকুটি পশ্চিম পাড়া গ্রামে।এসময় দেখা যায়,ওই গ্রামের তারমিনা বেগম নামের এক গৃহবধু ঐতিহ্য ধরে রেখে বাঁশের খুঁটি ব্যাংকে সঞ্চয় করেন।তিনি বলেন,আগে দেখেছি বাপ-দাদারা বিপদ-আপদের জন্য তারা হাত খরচ বাচিয়ে বাঁশের খুঁটিতে সঞ্চয় করত।তাদের এ সঞ্চয়মনা থেকে শিক্ষাগ্রহন করে নিজের ছোট-খাটে স্বাদ-আহ্লাদ পুরণের পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের আবদার মেটাতে বাঁশের খুঁটি ব্যাংকে পাঁচ টাকা মূল্যের কয়েনসহ বিভিন্ন অংকের টাকা জমানো হয়।

বিশেষ করে ক্ষুদ্র সঞ্চয় মানুষকে নতুন পথে দিশা দেখায়।তাই খুঁটি ব্যাংকে সঞ্চয় জমানো ক্ষুদ্র কিন্তু এর তাৎপর্য প্রাত্যাহিক জীবনে অনেক বেশি।তাই হাত খরচ বাচিয়ে আজও খুঁটিতে সঞ্চয় করি।কিশোরগঞ্জ সদর ইউপির রুপালি কেশবা গ্রামের প্রবীন ব্যাক্তি আব্দুল মান্নান বলেন,আগে ব্যাংকিং ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামীণ মানুষ সঞ্চয়ের প্রথম পাঠ গ্রহন করেছে বাঁশের খুঁটি ব্যাংকের মাধ্যমে।যা ছিল একটি স্বাধীন ব্যাংকিং ব্যবস্থা।

সেখানে ছিলনা কোন নিয়মের বেড়াজাল।চাহিবা মাত্র তা বের করে কাজে লাগানো যেত।আর তখনকার দিনে কাগজের নোটের চেয়ে কয়েনের মুদ্রার প্রচলন ছিল বেশি।আর অধিকাংশ বাড়ির ঘরে বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করা হত।খুঁটিগুলোর মধ্যে যে খুঁটি একটু মোটাসোটা তার দুই গিটোর মাঝের উপরের অংশ ছিদ্র করে সেখানে পাঁচ পয়সা,দশ পয়সা,পচিশ পয়সা,চার আনা,আট আানা ও এক টাকা করে সঞ্চয় জমানো হত।এ মুদ্রাগুলোর যেমন ছিল মূল্য,তেমনি তা দিয়ে অনেক কিছুই কেনা যেত।

বর্তমানে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসায় পাকা-আধাপাকা অবকাঠামোর ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশের খুঁটির টিন,ছনের ঘর।টাকার মান কমে যাওয়াসহ সওদা পাতির দাম বৃদ্ধিতে ওই মুদ্রা গুলো এখন অচল।আধুকিতার ছোঁয়ায় এখন হাতের মুঠোয় অনলাইন ব্যাংকিং সেবাসহ মানুষের দোড়গোড়ায় বিমা,ইনজিও,এটিএম বুথ গড়ে ওঠায় সেখানে সাধ্যনুযায়ী বিভিন্ন অংকের বিভিন্ন মেয়াদে সঞ্চয় জমা করা হচ্ছে।এতে বিলুপÍ প্রায় বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য অর্থকড়ি জমানোর সেই বাঁশের খুঁটির সঞ্চয় ব্যাংক।এখন ৫০ গ্রাম ঘুরেও চোখে মেলা ভার।

দেশেরকথা/বাংলাদেশ

এই বিভাগের আরো খবর

ফেসবুকে আমরা

এই সাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।কপিরাইট @২০২০-২০২৪ দৈনিক দেশেরকথা কর্তৃক সংরক্ষিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park