121 বার পঠিত
কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃভ্রমণপিপাসু মানুষগুলো সুযোগ পেলে ছুটে যায় প্রিয় কোন জায়গায়।সকল কাজকে ছুটি দিয়ে বা কোন উৎসবে মনের শান্তি খুঁজতে কখনো বিদেশে আবার কখনো দেশে খুঁজে ফেরেন কোন নান্দনিক স্থান।অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা নদী মাতৃক এ দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বহু দৃষ্টিনন্দন বিনোদনস্পট।
যা হয়তো এখনো অনেকের দৃষ্টিগোচর হয়নি।হাঁ এমন ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সম্ভবনাময় বিনোদনের অপার হাতছানি দিচ্ছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বাহাগিলী ঘাট এলাকায় চাড়ালকাটা নদীর উপর নির্মিত রঙ বাহারি সু বিশাল গাডার ব্রীজ ও তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের কারুকাজ খচিত নির্মাণশৈলীর নয়নাভিরাম এক্ইুডাক্টকে ঘিরে।
এ একুইডাক্টের উপর দিয়ে টইটম্বুর হয়ে বয়ে যাচ্ছে বগুড়া সেচ খালের পানি।নদীর তলদেশ দিয়ে মৃদুছন্দে বয়ে যাচ্ছে স্বচ্ছ জলরাশি।ওই নির্মাণশৈলিকে সজ্জিতকরণ করা হয়েছে আকাশি ও সাদা রঙে।যা আজেন্টিনার পতাকার আদলে।এ যেন এ জনপদের সবুজ শ্যামলিমায় ফুটবল খেলোয়াড় লিওনেল মেসি দেশের আর্জেন্টিনার প্রতিক।সৌন্দর্যপিপাসুদের আকষর্ণ বাড়ানোসহ প্রিয় দলের প্রতি গভীর ভালবাসা থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডাক্টটির রঙ আর্জেন্টিনার পতাকার রঙে রঙিন করেছেন।এমন রঙের বর্ণচ্ছটা,নদী ও একুইডাক্টের পানি প্রবাহের জংশন।সব মিলে পাল্টে গেছে নদী পাড় ও তিস্তা বাঁধের সার্বিক চিত্র।
শুধু কি তাই,নদীর তীর ও তিস্তা বাঁধের বিস্তীর্ণ জায়গায় জুড়ে নিরিবিলি ও মনোরম পরিবেশ,ছায়া সুনিবিড় বৃক্ষরাজি,গাছে গাছে পাখ-পাখালির ক’জন,সিনহা গ্রুপের থরে থরে সাজানো চা,আম,লিচুর বাগান।আছে সারি সারি দৃষ্টি নন্দন একাধিক আশ্রয়ণ প্রকল্প।সনাতন ধর্মালম্বীদের পৌরাণিক আমলের সাধুর আশ্রম,গয়া কাশিধাম।এমন আবহে স্থানটিকে করে তুলেছে আরো মোহনীয়।সব মিলে এ নৈর্সগিক প্রকৃতির নির্মল আনন্দ আর গভীর প্রশান্তি পেতে দুরদুরান্তর থেকে শতশত নানা শ্রেণিপেশার মানুষ প্রতিনিয়ত ভিড় করছে সেখানে।উৎসব কিংবা ছুটির দিনে এ ভিড় আরো বাড়ে।
এরই ধারাবাহিকতায় এবার ঈদকে ঘিরে পুরো ঘাট এলাকাটি ছিল ভ্রমণপিপাসুদের উপচে পড়া ভিড়।দিনভর রোমাঞ্চকর স্থানটির সর্বত্র হই-হুল্লোড় চলে আগতদের।জীবনের আমদে আর প্রশান্তিময় সময় কাটাতে এবং এমন মুহূর্তগুলো স্বরণীয় করে রাখতে সব দৃশ্যকে হাতের মুঠোয় নিয়ে নিজেকে করছেন সেলফি বন্ধি।যেভাবে আসবেন কিশোরগঞ্জ শহর থেকে তারাগঞ্জ অভিমুখী সড়কের ৫কিঃমিঃ অদুরে,রংপুর-তারাগঞ্জ থেকে কিশোরগঞ্জ অভিমুখী সড়কের ৩কিঃমিঃ।এদিকে দর্শনার্থীদের ভিড়ের কারণে ভ্রাম্যমান অনেক খাবার সামগ্রীর দোকান বসে।
তারাগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা এমন দোকানদার ফুচকা বিক্রেতা ময়নুল জানান,প্রতিদিন তিনি ফুচকা,চটপটি,বার্গারসহ নানা মুখরোচক খাবার সামগ্রী নিয়ে এখানে আসেন।যা বিক্রি করে দৈননন্দিন আয় হয় ৬ থেকে ৭শ টাকা।দিনাজপুর চিরির বন্দর থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসা সোহেল মিয়া বলেন,কিশোরগঞ্জের প্রান্তিক জনপদে এত মনোমুগ্ধকর জায়গা আছে আগে জানতামনা।জুটঝামেলা বিহিীন স্থানটি সত্যি অসাধারণ।
এখানে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে পিকনিকে আসা মন্দ হবেনা।বাহাগিলী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান শাহ্ দুলু বলেন,নদী ও ব্যারেজ প্রকল্প এলাকায় সরকারি অনেক জায়গা রয়েছে।এটিকে পর্যটন শিল্পের আওতায় এনে পিকনিক স্পটসহ বিনোদনপার্ক গড়ে তোলা হলে সরকারের রাজস্ব আয় হবে।অন্যদিকে শিশুরাসহ মানুষ নির্মল বিনোদনের সুযোগ পাবে।
কিশোরগঞ্জ আনোরমারী ডিক্রি কলেজের অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক জানান,বাহাগিলী ঘাট এলাকার নদীর তীর,বগুড়া সেচ খালের অবারিত বাঁধ ও তার উপর নির্মিত নয়নাভিরাম একুইডাক্ট,সব মিলে প্রকৃতিক সৌন্দর্যে আঁচল পাতানো স্থান,প্রকৃতিপ্রেমীদের আকষর্ণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।যা এসবকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো গেলে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে,বদলে যাবে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থা।
সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বলেন,বিনোদনপ্রেমিদের জন্য ইতঃমধ্যে বসার জায়গা স্থাপনসহ আকর্ষণ বাড়াতে কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে একুইডাক্টটিকে আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে সজ্জিতকরণ করা হয়েছে।আগামিতে স্থানটিকে একটি আধুনিক মানের বিনোদনপার্ক গড়ে তোলা হবে।