44 বার পঠিত
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি>নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে রনচন্ডি ইউনিয়নের সবুজ শ্যামলিমায় জীববৈচিত্রে ঘেরা ছবির মত গ্রাম বাফলা।এ গ্রামের বুক চিড়ে বয়ে গেছে জননীরূপি এক বিশাল জলাধার বাফলার বিল।ঋতু বদলের পালায় এ বিলে ফসলের সম্ভার,হাজারও জেলেপল্লীর জীবিকা,নানা মায়াবি রূপসৌন্দর্যের খোরাক নিয়ে বসে।
এ বিলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শোল,বোয়াল,মাগুর,শিং,পুটিসহ দেশীয় প্রজাতির হরেক মাছ বংসবৃদ্ধি করে ছড়িয়ে রয়েছে।এমন আবাসস্থল যেমন সারাবছর হাজারও জেলেপল্লীর অন্নজোটায়,তেমনি প্রতি বছরের মত এবারও শীতের আগমনে হাজার হাজার বালিহাঁস,পাতিসরালিসহ নানা জাতের পরিযায়ী জলচর পাখির মেলা বসেছে।এসব পাখির নিত্যদিন ভোরের কুয়াশার আচঁলচিরে দলবেঁধে আসা ডানার শো-শো শব্দ আর কলতানে ঘুমভাঙ্গে স্থানীয়দের।ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি এসে পড়ছে বিলের জলাশয়ে।পাখিদের নানা সুরেলা কন্ঠের হাঁকডাক,খুনসটি,ওড়াওড়ি,মিতালি-মাতামাতির জলকেলিতে মূখর হয়ে উঠেছে বিল প্রাঙ্গন।স্থানীয়দের অতিথেয়তার মেলবন্ধনে এ যেন এক অঘোষিত পাখির অভয়াশ্রম।
এ বিল পাখি আর মাছের জন্য নয়,অন্যান্য জলজপ্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য একটি চমৎকার নিরাপদ আবাসস্থল।এ নয়নাভিরাম জলাভ’মি সেখানে হাজারও শ্পালা ও পদ্ম ফুল ফুটে স্বগীয় রূপ ধারণ করে।স্থানীয়রা জানায়,পাখিগুলো শীত প্রধান দেশে টিকতে না পেরে প্রতি বছর শীতে আগমনে অতিথি হিসেবে এখানে এসে আশ্রয় নেয়।সংসার পাতে,ছানা ফুটিয়ে বড় করে তারপর বসন্তে উত্তরে উড়াল দে।এমন নিরাপদ আবাসস্থল,খাদ্য আহরণের উপযুক্ত পরিবেশে দিন দিন বাড়ছে বিলুপ্তপ্রায় পাখির সংখ্যা।দেশীয় পাখির মধ্যেপানকৌড়ি,চাপাখি,টুনটুনি,বেনেবউ,হাঁড়িচাচা,দোয়েল,শালিক,রাতচরা,কানাবক,সাদাবক,ধূসরবক,মাছরাঙ্গাসহ নাম না জানা অনেক পাখির পসরা বসে নিত্যদিন।সরেজমিনে দেখা যায়,শতাধিক একরের সরকারি খাসভ’ক্ত জলায়তন বিলের একাংশ দখলমুক্ত ও খনন করে তোলা হয়েছে মৎস্য অভয়ারণ্য।অপরদিকে মৎস্যজীবিরা বিশাল এলাকাজুড়ে মাছ রক্ষায় এর চারপাশ বাঁশের বেড়া (বানা)ও জাল দিয়ে নিরাপদ বেষ্টনি গড়ে তুলেছেন।
এমন নিরাপদ বেষ্টুনির আবাসস্থলে বালিহাঁস,সরালির মত হাজার হাজার অতিথি পাখিদের ডুব সাঁতারে তৈরি হয় এক নতুন ফটোঅ্যালবাম।যে অ্যালবাম জুড়ে থাকে পাখিদের ডুব ডুব লুকোচুড়ি,আহার শিকার, খুনসুটি,কিচিরমিচির শব্দ,পাখার ছাপটানির মোহনীয় তাল ,ডানা মেলে ঝাঁকে ঝাঁকে ্উড়া এমন মনরোম দৃশ্য যা অন্যরকম আবহ তৈরি করে খামারের প্রকৃতিজুড়ে।এরকম ছোটাছুটি আর লুটোপুটি চলে সন্ধা পর্যন্ত।
গোধুলির রঙ ডানায় মেখে পাখিগুলো যার যার মত আশ্রয় নেয় আশপাশের গাছগাছালি,বাঁশঝাড় ও কচুরিপানার ঝোপে। তাই খামারে পাখ-পাখালির এমন নিবিড় আতœীয় ভাবাপন্ন আপন করা মায়াবি জালে আটকা পড়ে দুর দেশের পরবাসি পাখিগুলো মায়ার টানে প্রতি বছর ফিরে আসে এখানে।বিল পাড়ের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন,এলাকার মানুষ পাখির প্রতি একদম সদয়।
এখানে কাউকে পাখি শিকার করতে দেয়না।বাধা দেয়ায় কেউ আর পাখি শিার করতে আসেনা।তবে পাখি নিরাপত্তায় জনসচেতনাতা সৃষ্টি করে,পাখি শিকার করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ,পাখি শিকার করলে জেল-জরিমানা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে প্রচারসহ বিল এলাকা সরকারিভাবে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষনা করা হলে শীত মৌসুমে পাখির ভিড় আরো বাড়বে,তেমনি এলাকাটি একটি সুস্থ বিনোদনের কেন্দ্রস্থল হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন,একসঙ্গে এত পাখির আনাগোনা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।
প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দের বিনোদনের খোড়াক জুগিয়েছে।বৃদ্ধি পেয়েছে পুরো এলাকার সৌন্দর্য। বিশেষ করে এ বিলে পাখিদের অন্যতম নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। এদের শিকারিদের হাত থেকে রক্ষায় জনসচেতনতাসহ নানা উদ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে।
.