76 বার পঠিত
পুলিশ সুপার জনাব মোনালিসা বেগম পিপিএম-সেবা মহোদয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে কঙ্কাল চুরির ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও জড়িত আসামী গ্রেফতার সংক্রান্তে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, ১৭/০৯/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে সকাল অনুমানিক ১০ ঘটিকায় সময় শেরপুর সদর থানাধীন বাজিতখিলা ইউনিয়নের মির্জাপুর সাকিনস্থ মির্জাপুর উত্তর পাড়া সামাজিক কবরস্থানে আগাছা পরিষ্কার করার সময় মামলার বাদী জনৈক জিহান আহম্মেদ শেখ দেখতে পান যে, তার পিতার কবর সহ আশেপাশের আরোও ০৩ টি কবরের একপাশ খোলা এবং কবরের ভিতরে কোন কঙ্কাল নেই বলে দেখতে পান।
উক্ত বিষয়টি পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ সুপার জনাব মোনালিসা বেগম পিপিএম-সেবা মহোদয়ের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব ফখরুজ্জামান জুয়েল পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্ ) জনাব মোঃ খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জনাব মোঃ সাইদুর রহমান সহ শেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব বছির আহমেদ বাদল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরবর্তীতে জিহান আহম্মেদ শেখ বাদী হইয়া শেরপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনামীয় আসামীদের নামে এজাহার দায়ের করলে শেরপুর সদর থানার মামলা নং- ৪৬, তারিখ ১৮/০৯/২০২৩ খ্রিঃ ধারা- ২৯৫/২৯৭/৩৭৯ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
মামলা রুজু হওয়ার পর দ্রুত সময়ে মূল রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের সনাক্তকরণ এবং গ্রেফতারের জন্য তদন্তে নামে শেরপুর সদর থানা পুলিশ। এসআই খন্দকার সালেহ্ মোঃ আবু নাঈম তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ পান। মামলার তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানতে পারেন যে, আঃ রহিম (৫০), পিতা- মৃত হাবিবুর রহমান, সাং- চান্দের নগর, থানা- শেরপুর সদর, জেলা- শেরপুর নামক ব্যক্তি ভ্যানগাড়ী যোগে চোরাইকৃত কঙ্কাল আনা নেওয়া করে।
উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, মোঃ সোহেল রানা (৩৫), পিতা- আব্দুর রউফ, সাং- মেদীরপাড়, থানা- নকলা, জেলা- শেরপুর কঙ্কাল চুরির সাথে জড়িত। পরে নকলার সোহেল রানা (৩৫) কে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদকালে জানায় যে, মোঃ গোলাম রাব্বানী (৪৫), পিতা- মৃত রমজান আলী এবং মোঃ বিল্লাল হোসেন (৩৮), পিতা- মৃত সৈয়দ আলী, উভয় সাং- রাজনগর, থানা- নালিতাবাড়ী, জেলা- শেরপুর নামক ব্যক্তিরা কবর থেকে কঙ্কাল উত্তোলন করে এবং কঙ্কাল উত্তোলনের সময় সোহেল রানা পাহারা দেয়।
পরবর্তীতে গোলাম রব্বানী এবং বিল্লাল হোসেন কে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা চুরিকৃত কঙ্কাল ঢাকায় অবস্থানরত মোঃ সোহেল রানা (৩০), পিতা- মোঃ আব্দুল আলী, সাং- বালুয়াকান্দি, থানা- রায়পুরা, জেলা- নরসিংদী এবং মোঃ রাসেল হাওলাদার (৩২), পিতা- মৃত মনির হোসেন হাওলাদার, সাং-পশ্চিম রাজদিয়া, থানা- সিরাজদীখান, জেলা-মুন্সীগঞ্জদের নিকট বিক্রি করে। পরবর্তীতে সোহেল রানা ও রাসেল হাওলাদারকে ঢাকা হতে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা চোরাই কঙ্কাল ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে।
উল্লেখ্য যে, উপরোল্লিখিত গ্রেফতারকৃত আসামীগন একটি সংঘবদ্ধ কঙ্কাল চুরির সাথে জড়িত চক্র। তারা দীর্ঘদিন শেরপুর এবং আশেপাশের জেলা থেকে শতাধিক কঙ্কাল চুরি এবং ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে নকলা থানায়ও একটি মামলা রুজু হয়েছে যা তদন্তাধীন। আটককৃতদের মধ্যে ০১ (এক) জন আসামী নকলা থানায় কঙ্কাল চুরি মামলার আসামী, যা সে নিজে নকলায় মানব কঙ্কাল চুরি করেছে বলে স্বীকার করেছে।
এই মামলার তদন্তকালে আসামীদের নিকট হতে কবর খননের ০১ (এক) টি কোদাল ও ০১ (এক) বেলচা এবং স্ক্রু ড্রাইভার উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব মোঃ খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জনাব মোঃ সাইদুর রহমান, শেরপুর সদর থানা অফিসার ইনচার্জ জনাব বছির আহমেদ বাদল, মামলার তদন্তকারী এসআই/খন্দকার সালেহ্ আবু নাঈম, এএসআই ওমর ফারুক সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।