242 বার পঠিত
কুয়াকাটা প্রতিনিধি>মেঘলা আকাশ, হঠাৎ থেমে থেমে বৃষ্টি, বেড়েছে বাতাসের গতি, বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে যার প্রভাবে সাগরে পাহাড় সমান ঢেউ। জাল ফেলার উপায় নেই।
ঢেউয়ে পড়ে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে তাই নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে বাধ্য হয়েছে হাজার হাজার জেলেরা।
সোমবার (৮ আগস্ট) বিকেলে পটুয়াখালীর বড় দুটি মৎস্য মৎস্য আড়ত কেন্দ্র আলীপুর-মহিপুরের ঘাটগুলো ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় ট্রলার ছাড়াও চট্রগ্রাম, বাশখালী, ভোলা থেকেও শত-শত জেলেরা এই বন্দরে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে কুয়াকাটার ক্ষুদ্র জেলেরা আজ দুদিন যাব মাছ শিকার থেকে বিরত রয়েছে।উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপর নিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়ায় সমুদ্রের ভিতরে জেলেরা একত্র হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে, সবাই কিনারায় চলে এসেছে বলে জানিয়েছে হারুন আকন মাঝি।
তবে দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে বৈরি আবহাওয়ার প্রভাবে ইলিশ না পেয়ে হতাশ হয়ে কিনারায় ফিরতে দেখা গিয়েছে বেশীরভাগ জেলে। বাংলাদেশের সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির করনে বিশেষ করে ডিজেল, কেরোসিনের দাম ৮০ থেকে বর্তমানে ১১৪ টাকা হওয়ায়, দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলেরা।
লাভের কথা ভুলে গিয়ে লোকশান গুনতে হবে এই চিন্তায় দিন পার করছে তারা। বাশখালী থেকে আসা এফবি বাদশা ট্রলারের মাঝি খোবায়েব জানান, আমরা গত ৫দিন আগে মাছ ধরতে সমুদ্রে যাই কিন্তু সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় আলীপুর বন্দর কাছাকাছি থাকায় এখানে চলে আসি।
কিছু মাছ পেয়েছি তা নিয়েই চলে আসছি। তবে বর্তমান বাজার জ্বালানি তেলের দাম যে বেড়েছে আর যে মাছ পেয়েছি তা দিয়ে ক্ষতিপূরণ সম্ভব না।
চট্রগ্রাম থেকে আসা মিজানুর রহমান নামের এক জেলে জানান, গভীর সমুদ্রে আবহাওয়া অনেক খারাপ, কয়েকটা ট্রলার তলিয়েছে তাই আমরা নিরাপদে চলে আসছি। এখানে থাকবো আবহাওয়া ভালো হলে এখান থেকেই সাগরে যাবো।
মহিপুর বন্দরের জেলে নুর মাহমুদ বলেছেন, আমরা সমুদ্রে যাওয়ার জন্য তিনদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করছি কিন্তু আবহাওয়া দিন দিন খারাপ হচ্ছে তাই যাচ্ছি না। বাজার, জাল সহ সার্বিক সরঞ্জামাদি নিয়ে ট্রলার পুরোপুরি প্রস্তুত।
আলীপুর বন্দরের ভাই-ভাই ফিসের আড়ৎদার রাসেল মোল্লা জানান, গত দুইদিন যাবৎ সমুদ্রে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে তাই অনেক ট্রলার ইতোমধ্যে নিরাপদে চলে আসছে। এক-তৃতীয়াংশ ট্রলার এখনো আসা বাকি।
তিনি আরো জানান, একহাজারের অধিক ট্রলার ঘাটে এসেছে এরা অনেকেই আশানুরূপ মাছ পায়নি, যা পেয়েছে তা দিয়ে খরচটা কোনোমতে উঠছে। কয়দিন আগে গেলে ৬৫দিনের অবরোধ এখন আবার আবহাওয়া খারাপ। এমন হতে থাকলে জেলে পেশা হুমকির মুখে পরবে।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী মোবাইল ফোনে বলেন, সমুদ্র বন্দর এলাকাগুলোতে বর্তমানে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত চলমান রয়েছে। যে কারনে সব ধরনের মাছ ধরার ট্রলার ও নৌযানকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নিম্নচাপটি আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের মধ্য দিয়ে চলে রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, উড়িষ্যা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল জুড়ে আসাম পর্যন্ত সু-চিহ্নিত নিম্নভূমির কেন্দ্র পর্যন্ত এই সতর্কতা।